শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ৮ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » পরিবেশ » যত্রতত্র পাখি শিকারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার জীববৈচিত্র
প্রথম পাতা » পরিবেশ » যত্রতত্র পাখি শিকারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার জীববৈচিত্র
৯৭৫ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৮ নভেম্বর ২০১৮
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

যত্রতত্র পাখি শিকারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার জীববৈচিত্র

---

এম আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি।

ওপাখি তোর যন্ত্রনা  আরতো প্রাণে সহেনা যখন তখন তোর জালাতোন ভালো লাগে,,,,না। এসব গানের সরলিপি গুলি আজ শুধুই স্মৃতির ভেলায় ভাসমান। অবৈধ ভাবে পাখি শিকারের ফলে  হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের চির চেনা উপকারী পাখি ও রূপসী বাংলার রূপ ও  জীববৈচিত্র।

---

চোখ গেল, বউ কথা কও, খোকা হোক, বউ সরিষা কোটো পাখিদের দুষ্টমির এসব গান আর এখন,তেমন একটা শোনা যায়না। কারন হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের চির পরিচিত ও উপকারী পাখি শালিকসহ চড়–ই, বাবুই, দোয়েল, কোয়েল, ময়না, শামা, ঘুঘু, শিষরাঙ্গা, মাছরাঙা, হলুদ পাখি বউকথা কও পাখিসহ নাম না জানা হাজারো প্রজাতির পাখি। একসময় আবহমান বাংলার প্রতœন্ত অঞ্চলের সবুজে ঢাকা শান্ত সুনিবিড় গ্রামগুলি সাঝের বেলায়  নাম না জানা হাজারো পাখির কুঁজনে মুখরিত হতো। আজ এই যান্ত্রিক যুগে তা কেবলই ধুসর স্মৃতি মাত্র। যে কারনে হারিয়ে যেতে বসেছে পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের রূপসী বাংলার জীব বৈচিত্র। এসব পাখিদের মধ্যে যে পাখিটি আমাদের ৬৮হাজার গ্রাম বাংলার মাঠে ঘাটে হরহামেশায় দেখা যেত, যে পাখি গুলি কৃষকদের ক্ষেতের অপকারী ও ক্ষতিকারক  পোকামাকড় খেযে কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতো সে হলো শালিক পাখি। গ্রাম-গঞ্জে এই শালিকের প্রকার ভেদও রয়েছে। যেমন গো-শালিক, গাঙ শালিক, ভাস-শালিক ধান-শালিক ইত্যাদি। এক সময়  পল্লীর ক্ষেত খামারে অসংখ্য শালিক পাখিদের পদচারণা লক্ষ্য করা যেত। সকাল-সাঝে এই উপকারী পাখি গুলির কিচির মিচির শব্দে মুখরিত হতো পল্লী গায়ের ঝোপঝাড় আর বাঁশবাগান গুলি। স্বার্থক হতো আবমান বাংলার নৈস্বর্গিক রূপ। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় যত্রতত্র ক্ষেত খামারে ও ফসলী জমিতে কীটনাশক ব্যাবহার আর অবাধে পাখি শিকারের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে এই সব উপকারী পাখি। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ এর ধারা ৩৮ অনুযায়ী পাখি শিকার, হত্যা, ক্রয় বিক্রয়, আটক রাখা, ইত্যাদি দন্ডনীয় অপরাধ। ১৯৭৪ সালে বন্য প্রাণী রক্ষা আইন ও ২০১২ সালে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে দন্ডের বিধান রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাখি নিধনের সর্বোচ্চ শাস্তি এক বছর জেল, এক লাখ টাকা দন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত। একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি হলে অপরাধীর দুই বছরের জেল, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই আইনের কোনো প্রয়োগ হচ্ছে না বলেই এক শ্রেণীর মানুষ অবাধে পাখি নিধন করছে। ফলে হারিয়ে যাচ্ছে উপকারী ও চিরচেনা পাখি,  হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্র, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসম্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য। আমাদের দেশে আইন থাকলেও তার যথাযত প্রয়োগ না থাকায় দিনে-দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে এক শ্রেণীর নোংরা প্রকৃতির মানুষ। আজ-কাল গ্রাম-গঞ্জের অনেক মানুষ ইয়ারগান দিয়ে নির্বিচারে অবৈধ ভাবে পাখি শিকার করতে দেখা যায়। তাই পাখি শিকার আইনের বাস্তব প্রয়োগ ঘটিয়ে  পাখি নিধন বন্ধের পাশা-পাশি পাখিদের অভয়াশ্রম সৃষ্টি করে পরিবেশে ভারসম্য রক্ষার  দাবী সমাজ সচেতন ও সুধীজনদের। এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে পশু-পাখি শিকারের উপর বিধি নিষেধ আছে। অবৈধ শিকারীদের থামাতে গেলে আইনের যথাযত প্রয়োগ ও সচেতন নাগরিকের সহযোগিতা  প্রয়োজন।

 





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)