মঙ্গলবার ● ১৩ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » ইতিহাস ও ঐতিহ্য » প্লাষ্টিক সামগ্রীর দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বেত ও বাঁশের তৈরী প্রাচীন ঐতিহ্য চারুশিল্প
প্লাষ্টিক সামগ্রীর দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে বেত ও বাঁশের তৈরী প্রাচীন ঐতিহ্য চারুশিল্প
এম. আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) ।
উপযুক্ত রক্ষনাবেক্ষণ ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং বাজারে প্লাষ্টিক সামগ্রীর দাপটে চারুশিল্পের চাহিদা দিন-দিন কমে যাওয়ার কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে বেত ও বাাঁশের তৈরী চারুশিল্প। তাই যশোরের কেশবপুরে প্রসিদ্ধ বাঁশ শিল্পীরা তাদের ভাগ্যের উন্নয়ের জন্য বাপদাদার রেখে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী পেশা ছেড়ে বেছে নিচ্ছে অন্য পেশা । উপযুক্ত দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ না থাকায় অন্য পেশায় তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে পারছে না। ফলে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। বাহারি ও মন কাড়া রকমারী প্ল¬াষ্টিক সামগ্রী বাজার দখল করার কারণে বেত ও বাাঁশের তৈরী জিনিসের প্রতি মানুষ দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। কেশবপুরের বেত ও বাঁশ শিল্পের সুনাম দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে রয়েছে । কিন্তু আধুনিক ও যান্ত্রিক যুগের সাথে পাল¬া দিয়ে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই দিনদিন চারুশিল্পের বিশ্বজোড়া খ্যাতি যশ ধীরে ধীরে ম্ল¬ান হয়ে অলাভজনক শিল্পে পরিনত হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে চারুশিল্পীরা বাপদাদার রেখে যাওয়া পেশা ছেড়ে বেছে নিচ্ছে নতুন পেশা। যে পেশায় তারা একেবারে আনাড়ী। ফলে কেশবপুরের বেত ও বাঁশ শিল্পীরা এখন মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। উপজেলার সাগরদাঁড়ী, কোমরপোল, ভেরচী, শেখপুরা, গোপসেনা, ধর্মপুর, বালিয়াডাঙ্গা, দেউলি, শ্রীরামপুরও খতিয়াখালি গ্রামের প্রায় এক হাজার পরিবার বেত ও বাঁশ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। যারা বাঁশ দিয়ে তৈরী চাটাই, কুলা,ঝুড়ি, ডালা, চালুন, খাঁচা, খারই, মোড়া, ডরি, ধামা, পেলেসহ বিভিন্ন ধরনের টুকরি-সাজিসহ হরেক রকম দ্রব্যসামগ্রী তৈরী করে স্থানীয় বাজার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাইরেও বাজারজাত করত। কিন্তু বর্তমানে এ পেশায় সরকারি পৃষ্টপোষকতা না থাকা, বাঁশ ও বেতের যোগান না থাকা এবং প্ল¬াষ্টিক সামগ্রীর দাপটে চারু শিল্পের চাহিদা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এ পেশার সাঙ্গে জড়িত মান্দার দাশ(৩৪), সুকুমার দাশ(৩৮), দুলাল দাশ(৩৯), জালাল গাজী(৪২) সোহারাব(৩৪) স্বপন দাশ(৩২)ও বিপুল দাশ(২৭) বলেন, প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ ও সরকারী পৃষ্টপোষকতা না থাকায় এবং বাজারে বাহারী প্ল¬াষ্টিক সামগ্রীর দাপটে চারুশিল্পের ভগ্ন দশা। তারা আরো বলেন আমাদের খবর কেউ রাখেনা। চালিতাবাড়িয়ার পাচু বলেন আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। চার জনের সংসার আমার কখনো কখনো এক বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে, অথচ আমাদের খবর কেউ রাখেনা । এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, বেত ও বাাঁশের তৈরী চারুশিল্প আমাদের দেশের প্রাচীন ঐতিহ্য এই শিল্পকে রক্ষা করতে সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সংগঠন সহযোগিতা চাইলে তাদেরকে সহযোগিতা করা যেতে পারে।