শনিবার ● ৮ ডিসেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » রাজনীতি » খুলনা-৬ আসন ধরে রাখতে আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর; জামায়াত পুনরুদ্ধারে মরিয়া
খুলনা-৬ আসন ধরে রাখতে আওয়ামী লীগ বদ্ধপরিকর; জামায়াত পুনরুদ্ধারে মরিয়া
এস ডব্লউ নিউজ ॥
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৬ পাইকগাছা-কয়রা আসনে মহাজোট-জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে শরিক দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় বিভ্রান্তিতে রয়েছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে যাচাই বাছাই শেষ হয়েছে। নির্বাচনটি ঘিরে কর্মী সমাবেশে তৃণমূলের রাজনীতি সরগম। তারপরও একাধিক প্রার্থী নিয়ে অস্বস্থিতে রয়েছেন কর্মীরা। আগামী ১০ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ দিনের জন্য সবাই অপেক্ষায় রয়েছেন।
খুলনা-৬ আসেন ১২ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমাদেন। আয়ুব আলী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), মির্জা গোলাম আজম ওরফে মির্জা আজম বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট, মোঃ আবুল কালাম আজাদ, এসএম শফিকুল আলম মনা বিএনপি, শফিকুল ইসলাম মধু, মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর জাতীয় পার্টি, গাজী নূল আহমেদ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, শেখ মতুর্জা আল মামুন জাকের পার্টি, সুভাষ চন্দ্র সানা কমিউনিস্ট পার্টি। ২ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে, সুব্রত কুমার বাইন ও আব্দুল কাদের সতন্ত্র।
ভোটের বাকী আর ২১দিন। প্রতিটা দলেই চলছে নির্বাচনে জয়লাভের কলাকৌশল ও সাধারণ ভোটারদের সাথে প্রকাশ্যে ও গোপনে গনসংযোগ। কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা নিয়ে গঠিত খুলনা-৬ আসন। দেশ স্বাধীনের পর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে চারবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হন। তবে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। বিএনপিজোট আটঘাট বেঁধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় নির্বাচন অনেক প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাবু। প্রার্থী হিসেবে নতুন হলেও রাজনীতিতে অভিজ্ঞ আছে বলেই মনে করছেন তৃনমুল নেতাকর্মীরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রবীন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা মনে করেন দলের স্বার্থে এবং উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আসটি পুনরুদ্ধারে দলীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। তবে আওয়ামী লীগের অভ্যান্তরিন কন্দল রয়েছে প্রকট। একাধিক গ্র“ফে পাইকগাছা আওয়ামী লীগ বিভক্ত। দলের পদ-পদবী, আগামী নির্বাচনে ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের অবস্থান গড়ে তোলার জন্য নেতারা বেশি তৎপর রয়েছেন বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জানান। বিভিন্ন নির্বাচনী বর্ধিত সভায় এ বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে। এ অবস্থা থেকে দলকে সু-সংগঠিত করতে সংসদ সদস্য প্রার্থী আকতারুজ্জামান বাবুকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারলে আওয়ামী লীগ এখানে ভাল ফলাফল পেতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন। তৃনমূল আওয়ামী লীগের অনেক প্রবীন ও তরুন ভোটারদের সাথে আলাপচারিতায় একটা বিষয় স্পষ্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের দলীয় কোন্দল। আর এই কোন্দল নিরসনে কাজ করছেন মনোনয়ন প্রাপ্ত আক্তারুজ্জামান বাবু। মনোনয়ন প্রাপ্তীর পর দু’উপজেলায় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়সহ নির্বাচনীয় দু’টি বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলীয় কোন্দল ভুলে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশও দিয়েছেন।
বিএনপি থেকে এ আসনটিতে খুলনা মহানগর জামায়াতের আমীর আবুল কালাম আজাদ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জামায়াতের এ প্রার্থী নির্বাচন করবেন। জামায়াতে ইসলামীর দূর্গ হিসেবে পরিচিত কয়রা। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোটের ধানের শীষের প্রার্থীতা পেয়েছেন জামায়াতের খুলনা মহানগর আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, সাবেক এমপি অধ্যক্ষ রুহুল কুদ্দুসের আস্থাভাজন। এ আসনটি পুনরুদ্ধারের জন্য বিএনপি জোট কৌশলগত ভাবে নির্বাচনী পরিচালনা করে চলেছেন। এ আসনটি জামায়াতের ঘাঁটিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরিন কোন্দলের এ সুযোগে সুফল ঘরে তুলতে চায় বিএনপিজোট। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই পাওয়া গেছে। সকলের সমন্বয়ে আসনটি পুনরুদ্ধার করার অভিমত ব্যক্ত করেন তৃনমুলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।