রবিবার ● ২০ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » অপরাধ » পাইকগাছায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিন্মমানের খাদ্য সরবরাহের অভিযোগ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে; রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে
পাইকগাছায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিন্মমানের খাদ্য সরবরাহের অভিযোগ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে; রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে
এস ডব্লিউ নিউজ ॥
পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের নিন্মমানের খাবার সরবরাহ সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে পথ্য সরবরাহকারীর বিরুদ্ধে। সপ্তাহে বুধবার খাসির মাংশ দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় ৬ মাস যাবৎ হাসপাতালের রোগীদের খাসির মাংস দেওয়া হয়নি। দুপুর ও রাতে মাছ, মাংস, ভাত ও ডাল পরিমাণেও কম দেওয়া হচ্ছে বলে রোগী ও রোগীর স্বজনরা জানিয়েছে। এ ব্যাপারে এলাকার সচেতন মহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান সুরক্ষায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাগেছে, রোগীদের পথ্য সরবরাহের বিষয়ে আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। যাহা নিষ্পত্তি না হওয়ায় পুরনো দৈনিক পথ্য তালিকা মোতাবেক খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। পথ্য তালিকা থেকে জানাগেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি প্রতি রোগীর জন্য দুপুর ও রাতে চাউল ৪শ গ্রাম, ডাউল মুশুরী ২০ গ্রাম, রুই মাছ ১৪৯ গ্রাম, কাতলা ১৫৯ গ্রাম, মৃগেল ও ক্লাসকাপ ২১৭ গ্রাম, কাচা কলা ১৫০ গ্রাম, কাচা পেপে ২৩৯ গ্রাম, মিষ্টি কুমড়া ২০২ গ্রাম, মাংস (বয়লার মুরগী) ২০২ গ্রাম, খাসি ১০৮ গ্রাম হিসাবে রোগীদের দেওয়ার কথা। যাহা রোগীদের পথ্য তালিকায় থাকলেও বাস্তবে রোগীরা তা পাচ্ছে না। বিশেষ করে মাছ ও মাংসের বেলায় অর্ধেক পরিমাণ রোগীদের দেওয়া হয় বলে রোগী ও রোগীর অভিভাবকরা জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, দুপুরে মৃগেল মাছ রোগী প্রতি ১০৮ গ্রাম দেওয়ার কথা থাকলেও যে মাছের টুকরা দেওয়া হচ্ছে তাহা ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম ও মুরগীর মাংস ৫০ থেকে ৬০ গ্রামের বেশি হবে না। প্রতি সপ্তাহের বুধবার খাসির মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও খাসির মাংস দেওয়া হচ্ছে না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রোগী নলিনী কান্ত সানা, শামছুলহুদা ও রহিমা বেগম বলেন, খাবারের মান ভাল না, এক বাটি করে ভাত দেওয়া হয়, মাছ ও মাংসের টুকরা খুবই ছোট এবং তরকারির পরিমাণ খুব কম দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সরবরাহকারী, বাবুর্চী ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ একে অপরের দোষারোপ করছেন। জানাগেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি স্থানীয় রোগীর অধিকাংশ স্বজনরা দুপুরেও রাতের খাবার বাড়ী থেকে নিয়ে আসে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সরবরাহকারী তার ইচ্ছামত পথ্য সরবরাহ করছে বলে রোগী ও সচেতন ব্যক্তিরা ধারণা করছেন। জানাগেছে, পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পথ্য সরবরাহকারী জগদীশ চন্দ্র রায় জানান, মুল পথ্য সরবরাহকারী সুনীল সাহার নিকট থেকে তিনি ঠিকাদারী গ্রহণ করেছেন। সুনীল সাহার সাথে যোগাযোগ করার জন্য ০১৭৯৬-২৩৭২৯৪ মোবাইল নম্বরটি জগদীশ প্রদান করে। উক্ত নম্বরে দুই দিন যাবৎ কয়েকবার করে ফোন করলেও ফোনটি রিসিভ করা হয়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পথ্য সরবরাহকারী জগদীশ চন্দ্র রায় জানান, প্রতিদিন আমি সঠিক পরিমাণ মালামাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বুঝেয়ে দিয়ে আসি। বাবুর্চিরা জানান, ঠিকাদার যা দিয়ে যায় আমরা তা দিয়ে রান্না করি। এ বিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প কর্মকর্তা ডাঃ এএসএম মারুফ হাসান জানান, আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন এসেছি। পথ্য সরবরাহকারীকে যথাযথ পথ্য সরবরাহ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি পথ্য সরবরাহে কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তা হলে তদন্ত পূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দক্ষিণ অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সেবাদানকারী একটি প্রতিষ্ঠান। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রোগীরা যাহাতে যথাযথ সেবা পাই তার ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।