রবিবার ● ২০ জানুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ঋণ খেলাপি থেকে দুর্নীতিবাজ সৃষ্টি করে ৭৫ পরবর্তী ক্ষমতাসীনরাঃ প্রধানমন্ত্রী
ঋণ খেলাপি থেকে দুর্নীতিবাজ সৃষ্টি করে ৭৫ পরবর্তী ক্ষমতাসীনরাঃ প্রধানমন্ত্রী
এস ডব্লিউ নিউজ।
একটি দেশকে যদি আমরা উন্নত করতে যাই তাহলে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।’
অনলাইন ডেস্কঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি, মাদক এবং জঙ্গিবাদ উচ্ছেদ করে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় দুর্নীতি একটি কালো ব্যাধির মত ছেয়ে গেছে। কারণ, যে দেশে সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসে তারা প্রথমে সমাজটাকে ধ্বংস করে দেয়। দুর্নীতিটাকেই তারা নীতি হিসেবে নেয় এবং দুর্নীতির সুযোগও সৃষ্টি করে দেয়।’
মোট চতুর্তবারের মত সরকার গঠন উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের অংশ হিসেবে রবিবার সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ঋণ খেলাপি থেকে দুর্নীতিবাজ যাদেরকে আমরা দেখি তাদের সৃষ্টি হয় ‘৭৫-এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তাদের কাছ থেকে।’
এ সব কালো ব্যাধি থেকে সমাজকে মুক্ত করার লক্ষ্যেই তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে এটি এখন সময়ের প্রয়োজন এবং তার জন্য যা যা করণীয় তাঁর সরকার করে যাবে, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি দেশকে যদি আমরা উন্নত করতে যাই তাহলে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং দুর্নীতির হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন সংস্থা এবং দপ্তরের প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।
অতীতে দেশে জঙ্গিবাদ তথা বাংলাভাই সৃষ্টিতে সে সময়কার সরকারের (বিএনপি-জামায়াত) একটি প্রচ্ছন্ন মদদ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা (জঙ্গিরা) মিছিল করছে আর পুলিশ তাদের পাহারা দিচ্ছে। এরকম দুঃখজনক ঘটনাও আমরা বাংলাদেশে দেখেছি। আর মাদকতো ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
সমাজে অপরাধ প্রবণতার হার কমিয়ে আনার জন্য অপরাধ দমনের পাশাপাশি তাদের অপরাধ সংগঠনের কারণ খুঁজে বের করা এবং তাঁর প্রতিকারের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার জন্যও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদেরকে শান্তি দিলেই যে অপরাধ দমন হয়ে যাবে তা নয় বরং তাদের সমাজে সুস্থ জীবন দিয়ে ফিরিয়ে আনতে পারাটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি দেশব্যাপী চলমান মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখার পাশাপাশি কারা দেশে মাদক নিয়ে আসছে, কারা ব্যবসা করছে এবং কারা সেবন করছে এদের সকলের বিরুদ্ধেই বহুমুখি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘যারা মাদক সেবন করে শুধু তাকেই নয়, যারা মাদক আনে, দেয় বা সাপ্লাই দেয়, তৈরী করে এদরকেও ধরতে হবে। সেইসাথে যারা সুস্থভাবে সমাজে ফিরতে চাইবে তারে সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। মাদকাসক্তদের নিরাময়েরও উদ্যোগ নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে মাদক নিরাময় কেন্দ্র স্থাপন এবং মাদকের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টির ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি বিশাল মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে অতীতে এর পর্যাপ্ত লোকবল না থাকার বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্যই তাঁর সরকার এই মন্ত্রণালয়কে দুটি ভাগে ভাগ করে দিয়েছে।’
তাঁর সরকার এখানে কোস্ট গার্ড গঠন করেছে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরকেও প্রেরণ করেছে। সেদিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। জাতিসংঘ মিশনে আমাদের পুরুষ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি নারীরাও প্রশংসার সঙ্গে কাজ করছে, বলেন তিনি।
এ সময় দেশের কারাগারগুলোকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলায় তাঁর সরকারের উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী কারা অভ্যন্তরে কয়েদীদের জন্য সৃজনশীল জীবিকা সংস্থানে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, সাজার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তারা যেন কিছু পুঁজি নিয়ে যেতে পারে এবং পরবর্তী জীবনে তাদের যেন সেটা কাজে লাগে। সেজন্য কয়েদীদেরও নানা প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। বাসস।