মঙ্গলবার ● ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » ডুমুরিয়ায় ভেঁড়া পালনে সফলতা অর্জন করেছেন গ্রাম পুলিশ প্রকাশ
ডুমুরিয়ায় ভেঁড়া পালনে সফলতা অর্জন করেছেন গ্রাম পুলিশ প্রকাশ
অরুণ দেবনাথ, ডুমুরিয়া।
ডুমুরিয়ায় দেশী-বিদেশী জাতের ভেঁড়া পালন করে লাভবান হয়েছে প্রকাশ মন্ডল নামের এক গ্রাম পুলিশ।ইতোমধ্যে তার ভেঁড়া পালনে লাভবান দেখে প্রায় দেড়‘শ চাষী ভেঁড়া পালন শুরু করেছে। কম খরচে ও স্বল্প সময়ে অধিক লাভবানের ফলে উপজেলার মাগুরখালী ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি পরিবারে এ ভেড়াঁ পালনের প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। তবে ভেঁড়া পালনে খামারীদের পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকায় লক্ষমাত্রা অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে বলে খামারীরা জানিয়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় উপজেলার মাগুরখালী লাঙ্গলমোড়া এলাকার গ্রাম পুলিশ ও প্রগতি আদর্শ ভেড়া খামারী প্রকাশ মন্ডলের সাথে। তিনি জানান ২০০৯ সালে ৭ হাজার টাকা মূল্যের ৫টি দেশীয় জাতের ভেঁড়া দিয়ে তার খামার শুরু হয়। যা এক বছরে বৃদ্ধি পেয়ে ১৭টি ভেঁড়া হয়। পর্যায় ক্রমে প্রতিবছরে ভেঁড়ার সংখ্যা বৃদ্ধি দেখে প্রকাশ দম্পতি ভেঁড়া চাষের প্রতি অধিক ঝুঁকে পড়ে এবং লাভবান হতে থাকে। এরপর ২০১৫ সালে ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে মোজাফফার নগরী বা গাঁড়ল জাতের ৪টি ভেঁড়া ৩২ হাজার টাকা মূল্যে ক্রয় করে দেশীয় জাতের সাথে পালতে থাকে।প্রকাশ আরো জানান ২০১৭ সালে ২‘শ ৭৬টি ভেঁড়া বিক্রি করে খরচ বাদে ৪ লক্ষ ৬৫ হাজার ৭‘শ টাকা লাভবান হন তিনি। এতে তার খরচ হয় মাত্র ৯৯ হাজার ২‘শ টাকা।তার এ খামার মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ,উপজেলা চেয়ারম্যান খান আলী মুনসুর,যশোর জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ভবতোষ কান্তী সরকার,ডুমুরিয়া প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা সংকর প্রসাদ মন্ডলসহ অনেকেই পরিদর্শন করেছেন। প্রকাশের স্ত্রী সুষমা মন্ডল বলেন,গাঁড়ল জাতের ভেঁড়া বছরে মাত্র একটি বাচ্চা দেয়।আর দেশীয় জাতের ভেঁড়া বছরে ২/৩টি করে ২বার বাচ্চা প্রসাব করে। যে কারনে বিদেশী গাঁড়লের প্রতি নিরুৎসাহী হয়ে তারা দেশী জাতের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। তাছাড়া দেশীয় জাতের ভেড়া সকল আবহাওয়ায় টেকসই, মৃত্যুর ঝুঁকি নেই বললে চলে।এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশী ,খাবারে সবুজ ঘাস,লতা,পাতা ও দানাদার খাবারই যথেষ্ট। প্রকাশ দম্পতি আরো বলেন দু‘একর জমি হারিতে নিয়ে খামার গড়ে তুলেছেন তারা। তবে যথেষ্ট পুঁজি না থাকায় এবং সরকারী পৃষ্টপোষকতার অভাবে লক্ষ অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। কথা হয় এলাকার খামারী শশংক মন্ডল, সুব্রত মন্ডল, অনিমেষ মন্ডলসহ অনেকের সাথে। তারা বলেন ভেড়ার মাংশ রসালো, গন্ধহীন, সুস্বাদু ও দামী। এ ছাড়া মাত্র ১০/১২ মাসের মধ্যে বাচ্ছা ভেঁড়া পূর্নাঙ্গ ভেঁড়ায় পরিনত হয় এবং বছরে দু‘বার একাধিক বাচ্ছা দেয়ায় অধিক লাভবান দেখে আমরাও ভেঁড়া পালনে ঝুঁকে পড়েছি। এ প্রসংগে উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন ভেড়া কৈ মাছের মত,যা সহজে মরে না। তবে ভোঁড়ার প্রতি কুকুরের উপদ্রব কিছুটা বেশী দেখা যায়। পরিকল্পীত ভাবে ভেঁড়া পালন করতে পারলে খুব সহজে এবং স্বল্প পুঁজিতে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।