সোমবার ● ১ এপ্রিল ২০১৯
প্রথম পাতা » বিবিধ » ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নড়াইলের অপহৃত আকমলকে পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার
২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নড়াইলের অপহৃত আকমলকে পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার
ফরহাদ খান, নড়াইল।
২০ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নড়াইল সদর উপজেলার ধোন্দা গ্রাম থেকে অপহৃত আকমল শেখকে (৫০) পঞ্চগড় থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১ এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার)। উদ্ধারকৃত আকমল নড়াইল সদরের ধোন্দা গ্রামের দলিল উদ্দিন শেখের ছেলে এবং কৃষি কাজ করে সংসার চালান।
আকমল শেখের স্ত্রী পলি বেগম বলেন, প্রায় পাঁচ বছর আগে আনিস তার এক দুলাভাইয়ের সন্ধানে আসেন আমাদের এলাকায়। সেই সময় আমার স্বামীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে আনিস অনেকবার আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসলেও আমরা তার (আনিস) বাড়িতে বেড়াতে যাইনি। বারবার অনুরোধের প্রেক্ষিতে গত ২৯ মার্চ আমার স্বামী (আকমল) নড়াইল থেকে আনিসদের বাড়ি রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। আনিসদের এলাকায় পৌঁছানোর পর বুঝতে পারেন ফাঁদে পড়েছেন তিনি। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। প্রাথমিক পর্যায়ে গত শনিবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিকাশের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর বিষয়টি পুলিশকে জানালে নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আমার স্বামীকে উদ্ধারে তৎপর হন। অবশেষে আল্লাহর রহমতে ও পুলিশ সুপারের আন্তরিকতায় আমার স্বামীকে ফিরে পেয়েছি।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকমল শেখ বলেন, গত শুক্রবার যশোর থেকে ট্রেনে চড়ে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর মোবাইল ফোনে কথা হয় আনিসের সঙ্গে। পরেরদিন (শনিবার) সকালে লালমনিরহাট পৌঁছালে আনিস আমাকে মোটরসাইকেলে উঠিয়ে পথ চলতে থাকে। প্রায় ৩৫ কিলোমিটার যাওয়ার পর এক বাড়িতে পৌঁছায়। পরে জানতে পারি, রংপুরে নয়; আমাকে পঞ্চগড়ে নিয়ে আসা হয়েছে। গত শনিবার বিকেলে আনিস তার কথিত বোনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর ছোট টিনের ঘরের মধ্যে চারজন আমাকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে এবং মারধর করে। এ সময় মোবাইল ফোনে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর আমার পরিবারকে ১০ লাখ, পাঁচ লাখ, সবশেষে তিন লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে অপহরণকারীরা। এভাবে দুরসম্পর্কের আত্মীয়তার সূত্র ধরে আমার মতো ভুল যেন কেউ না করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে অপহরণকারীদের অবস্থান সনাক্ত করে পুলিশের একটি বিশেষ অপারেশন টিম পঞ্চগড়ে পাঠাই। পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে অপহরণকারীরা পালিয়ে গেলেও গত ৩১ মার্চ অপহৃত আকমলকে পঞ্চগড় জেলার বোদা থানার বৈরতি গ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।