শনিবার ● ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » বিবিধ » ডুমুরিয়ায় খর্ণিয়ার জাহাতাফ শেখ খিলি পান বেঁচেই স্বাবলম্বী।
ডুমুরিয়ায় খর্ণিয়ার জাহাতাফ শেখ খিলি পান বেঁচেই স্বাবলম্বী।
ডুমুরিয়া প্রতিনিধি
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া বাজারের জাহাতাফ শেখ অতি পরিচিত মুখ। যাকে সবাই পান জাহাতাফ নামে চেনে। ফুটপাতের এই খিলি পান বিক্রেতা জাহাতাপের দোকানে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় ৫শতাধিকের মতন লোক আসে পান খেতে। পান বিকিকিনির সাথে কিছু মিষ্টি জর্দা ও অন্যান্য সামগ্রী বেচেন তিনি। প্রতিদিন তার গড়ে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা ইনকাম হয়। তা দিয়ে তার সংসার বেশ সুখে শান্তিতে কাটছে। শুধু জাহাতাফ নয় খর্ণিয়া বাজারের রিপন শেখ, ইউসুপ আলী, সিরাজ সরদার এরাও প্রায় পাশাপাশি কেনাবেঁচা হয়। পরিবার নিয়ে এরাও সুখে আছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাহাতাফের পানের দেকানে যেয়ে দেখা যায়, কয়েকজন পান সেবী পান খাওয়ার জন্য তাকে ঘিরে দাড়িয়ে আছে। জাহাতাফ কারো কাছেই কোন কিছু না শুনেই সব খরিদ্দারের হাতে পানের খিলি ধরিয়ে দিচ্ছেন। দেখে মনে হলো সবাই তার অতি পরিচিত জন। কে কি ধরনের পান খাবে তাকে কিছুই বলতে হচ্ছে না। কৌতুহলী হয়ে জানতে চাইলাম তোমার সব খরিদ্দার কি ধরনের পান খায় তা কি তুমি জানো। এর প্রতি উত্তরে সে এই প্রতিবেদককে বলেন, চেষ্টা করি মনে রাখার জন্য। সে আরো জানালো প্রায় ১০ বছর ধরে এই পান বেঁচেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। আমার সব খরিদ্দার কি ধরনের পান খায় তা এখন মুখস্থ হয়ে গেছে। তার দেওয়া তথ্য মতে ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া এলাকার মৃত আব্দুল আজিজ শেখের ছেলে জাহাতাফ শেখ লেখাপড়া খুব একটা ভাল ছিল না। অষ্টম শ্রেণি পাশ করে ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া বাজারে প্রথম একটি চায়ের দোকান করেন। এরপর খর্ণিয়া বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে সরকারি জায়গায় পান-সিগারেটের দোকান দেন তিনি। দীর্ঘ ১ যুগ ধরে ঐ দোকানে দেদারছে তিনি তার ব্যবসা চালিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তার হাতের পান সেবীরাসহ খর্ণিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ দিদারুল হোসেন দিদার তার পরিষদের সামনে একটু জায়গা করে দেন। সেই হতে ফুটপাতে জাহাতাফ তার রমরমা খিলি পানের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফুটপাতের দোকানেই তার চির চেনা খরিদ্দাররা আজও ভিড় জমাচ্ছেন। যার ফলে জাহাতাফ শেখ তার সংসার চালাতে আর পিছনে ফিরতে হয়নি। এমন সব কথা পান জাহাতাফ জানালো। স্ত্রী নিলিমা বেগম একমাত্র সন্তান ১ম শ্রেণি পড়–য়া ছায়াদ হোসেন ও তার মাকে নিয়ে তার পানের আয় রোজগারে সুখে শান্তিতেই আছি। তার মনে কোন কষ্ট নেই। জাহাতাফের এক খরিদ্দার সর্দ্দার আব্দুল কুদ্দুস জানার সদা হাসিখুশী মিষ্টিমুখে মানুষ আমাদের জাহাতাফ পান না খেলেই সেদিন আর ভাল লাগে না। তাই তো প্রতিদিন দুর থেকে ছুটে আসি। অনেক খরিদ্দারকে সারা দিনের জন্য যত পান লাগে সব খিলি বেঁধে একসাথে বাড়ি নিয়ে যেতে দেখা যায়। রকমারি খয়ের, জর্দ্দা, মিষ্টি মশলা সাথে একটু ছাচি পান আর ইচ্ছামত চুন সুপারী দিয়ে মনের মাধুরী সে পান বানিয়ে তার ভক্ত পান সেবীদের ঠিকঠাকমত পরিবেশন করতে পান জাহাতাফের জুড়ি ডুমুরিয়া উপজেলায় আর দ্বিতীয়টি নেই এমনটি জানালেন বাজারের পানসেবী মুজিবর বিশ্বাস, সিরাজুল খান, মফিজুর রহমান, আবুল কাশেম মোল্যা, মোল্যা আবু মতিন, শেখ হযরত আলী, শেখ হায়দার আলীসহ অনেকে।