বুধবার ● ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » শিক্ষা » পাইকগাছার শহীদ গফুর প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন সাজে সজ্জিত হয়েছে
পাইকগাছার শহীদ গফুর প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন সাজে সজ্জিত হয়েছে
এস ডব্লিউ নিউজ ॥
পাইকগাছার শহীদ গফুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দৃষ্টিনন্দন সাজে সজ্জিত হয়ে ডিজিটাল জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছে। রঙ্গে রঙ্গে নতুন সাজে সজ্জিত হয়েছে বিদ্যালয়টি। রং তুলিতে বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষ, দেওয়াল, বারান্দা, প্লিয়ার, ফোর, সিঁড়িসহ বিভিন্ন স্থান জ্ঞান ভিত্তিক বাংলা স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ, ইংরেজীবর্ণ, রোমান সংখ্যা ও মনিষীদের বাণীতে শোভা পাচ্ছে। ফ্লোরগুলি হাতের নকশায় কারুকাজ করা হয়েছে। সিঁড়িগুলি নামতা ও ক্রমবাচক সংখ্যা দিয়ে সজ্জিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রতিটি দেওয়াল মনিষীদের বাণী দিয়ে সাজানো। বারান্দায় রয়েছে শিক্ষার্থীদের প্রতি নির্দেশনা ও নৈতিক শিক্ষামূলক বাণী। নানা রং, বর্ণ, সংখ্যা, বাণীতে নয়নাভিরাম সাজে সজ্জিত বিদ্যালয়টি দেখলে মনে হবে শিশুদের শিক্ষার শিশুসর্গ। এ যেন শিক্ষার উপকরণের ঠাসা জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা মেলা। ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা হাঁসি খুঁশি আনন্দের মধ্যে দিয়ে শিক্ষা লাভ করছে।
উপজেলা সদরে মেইন সড়কের পাশে বিদ্যালয়টি অবস্থিত। বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের অফিস রুমসহ ৬টি কক্ষ রয়েছে। বিদ্যালয়ে ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ মোট ৭ জন দক্ষ শিক্ষক রয়েছে। প্রাক-প্রাথমিকের শ্রেণি কক্ষটি বর্ণমালার প্যানা দিয়ে সজ্জিত। দেওয়ালে রয়েছে শিশুবান্ধব শিক্ষামূলক ছবি। শ্রেণিকক্ষে রয়েছে একটি বড় এলইডি টিভি, যাতে শিশুরা শিক্ষামূলক কার্টুনসহ বর্ণমালার প্রবাহ দেখানো হয়। সকল শিশুদের প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদানের জন্য রয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। যাতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে মাঠদান করা হয়। সাথে রয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের কর্ণার। যাতে শিক্ষার্থীদের পড়ার আসনসহ মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তির বিভিন্ন বই দিয়ে সাজানো। শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশুবান্ধব বিভিন্ন খেলনা ও চারটি নির্ধারিত কর্ণার সু-সুজ্জিত আছে। বিদ্যালয়ের চারিপাশে যে দিকে তাকানো হয় সেখানে শিক্ষা বিষয়ে পাঠদান সংশ্লিষ্ট শিক্ষামূলক উপকরণ চোখে পড়ে।
বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের হাত-মুখ ধোয়ার জন্য রয়েছে একটি আধুনিক সুন্দর ওয়াশব্লক। সাথে আছে শিশুদের খাবার উপযোগী বিশুদ্ধ নিরাপদ পানি। বিদ্যালয়ে আধুনিক মানের স্বাস্থ্য সম্মত স্যানেটেশন ব্যবস্থা আছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য রয়েছে পৃথক পৃথক বাথরুম ও টয়লেট। বিদ্যালয়ে প্রতিটি কক্ষে রয়েছে দেওয়াল ঘড়ি ও ড্রেসকোট দেখার জন্য দেওয়াল আয়না। বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু রয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
বিদ্যালয়টি নতুন রঙে শিক্ষা উপকরণে সাজানো দেখে বিদ্যালয়ের অভিভাবক আবু মুছা বলেন, স্কুলটি দেখে আমার খুব ভাল লাগছে। তাছাড়া যারা স্কুলটি দেখছে তারা সবাই স্কুলের প্রশংসা করছে। আমার মেয়ে মুসলিমা ৩য় শ্রেণির ছাত্রী। সে এখন স্কুলে আসার জন্য আগে আগে তৈরী হয়। স্কুলের শিক্ষার্থী ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র তাহসিন তোহামিয়া বলে, স্কুলটি সুন্দর রং করা ও শিক্ষা উপকরণ দিয়ে সাজানোয় খুব ভাল লাগছে। ৫ম শ্রেণির ছাত্রী জুই বলে, স্কুলটি দেখে আমার খুব ভাল লাগছে। স্কুলে আসলে খুব ভাল লাগে। কিন্তু এতো সুন্দর স্কুল থেকে কয়েক মাস পরে চলে যেতে হবে আমার ভেবে খুব খাবার লাগছে।
বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান অনেক ভাল। প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ সহ বৃত্তি লাভ করে থাকে। বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানের কর্মকান্ডে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনী প্রশংসা লাভ করেছে। প্রতিবছর স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সফরে নিয়ে যাওয়া হয়। স্কুলে সুন্দর একটি ফুলের বাগান, ফলদ ও বনোজ বৃক্ষ রয়েছে। পরিবেশ ও পাখি সু-রক্ষায় গাছে মাটির পাত্র স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা পারভীন জানান, শিশুদের উপযোগী ও শিশুবান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য আমি এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আগামীতে বিদ্যালয়টিকে আরও আকর্ষনীয় করার চিন্তা করছি ও পড়াশুনার মান আরও উন্নত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল বাস্তবায়ন করতে শিক্ষকরা নিরালস কাজ করছেন। তথ্যপ্রযুক্তির ক্রমবদ্ধমান উন্নতির সোপানে মাল্টিমিডিয়ার প্রজেক্টরের মাধ্যমে নতুন জ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে।
শিক্ষার মাধ্যমে একটি জাতি উন্নয়নের সোপানে পৌছাতে সক্ষম হয়। শিক্ষা কেবল মানুষের আচারনের কাঙ্খিত পরিবর্তন ঘটায় না প্রযুক্তি শিক্ষা মাধ্যমে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করে। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরলস কাজ করছেন। জাতীয় কর্মসূচি ও শিক্ষা বিষয়ক তার রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ঝড়েপড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী কর ও শিক্ষাবান্ধব মনোরম পরিবেশে ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসার প্রবনতা বাড়ছে। তার পরিকল্পনা মেধা, মনন ও সৃজনশীল কর্মে শিক্ষার মান ও বিদ্যালয়ের উন্নয়ন হচ্ছে।