সোমবার ● ১৮ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » ইউএই’র উদ্যোক্তাদের আরও বড় আকারের বিনিয়োগের আহবান প্রধানমন্ত্রীর
ইউএই’র উদ্যোক্তাদের আরও বড় আকারের বিনিয়োগের আহবান প্রধানমন্ত্রীর
এস ডব্লিউ নিউজ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার পারষ্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রে বিশেষ করে তৈরি পোশাক, তথ্য প্রযুক্তি এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে ইউএই’র উদ্যোক্তাদের আরও বড় আকারের বিনিয়োগের আহবান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার অর্থনৈতিক অঞ্চলে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে এবং হাইটেক পার্কে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
আবুধাবীতে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানকালীন হোটেল সাংরি-লা’তে তাঁর সম্মানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগদান করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘ওয়ান স্টপ’ সার্ভিস সুবিধা এবং একশ’র অধিক অবকাঠামোসহ নানা প্রয়োজনীয় সুবিধাদি প্রদান করছে।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সব থেকে সহনীয় বিনিয়োগ নীতি বিদ্যমান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা তৈরি পোশাক শিল্প, ভবন অবকাঠামো নির্মাণ, নির্মাণ শিল্প, যোগাযোগ, জ্বালানি, তথ্য প্রযুক্তি, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটন, হাল্কা প্রকৌশল, শিল্প পার্ক এবং পণ্য সরবারাহের কেন্দ্র হিসেবে বিনিয়োগ করতে পারে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, শীর্ষ উদ্যোক্তাগণ এবং ইউএই’র স্বনামধন্য ব্যবসায়ী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং তাঁদের সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দেশে বিদ্যমান বৈদেশিক বিনিয়োগ সুরক্ষা নীতিমালার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আইন দ্বরা বিদেশি বিনিয়োগকে সুরক্ষা প্রদান, শুল্ক রেয়াত, যন্ত্রাংশ আমদানিতে স্বল্প শুল্ক, যে কোন সময় লাভ এবং আসল সহ প্রস্থানের সুবিধা, যারমধ্যে উল্লেখযোগ্য।
তৈরি পোশাকের পরেই আমাদের রপ্তানির ক্ষেত্রে কৃষি ভিত্তিক পণ্য উল্লেখযোগ্য আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আরব আমিরাতের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশের কৃষিজাত এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই।’
বাংলাদেশ এবং আরব আমিরাতের মধ্যে পারষ্পরিক ব্যবসা এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারি এবং বেসরকারি উভয় খাতেই বাংলাদেশ এবং ইউএই’র যৌথ উদ্যোগের জন্য সম্ভাবনাময় বেশ কিছু খাত খুঁজে বের করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং আমিরাতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং আমিরাত অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউএই সফরের কথা স্মরণ করেন যখন বাংলাদেশ এবং ইউএই’র মধ্যে বন্দর স্থাপন, শিল্প পার্ক, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন, এলএনজি সরবরাহ এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সেই সফরকালে আমরা ইউএই’র পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছিলাম। ইউএই’র সংস্থা বাংলাদেশের বিদ্যুৎ এবং সৌরশক্তিসহ জ্বালানি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এমিরটেস ইকোনমিক জোন একটি টেকসই অর্থনৈতিক অঞ্চল হালাল খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট এবং সার্টিফিকেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির মূল ভীত যেহেতু কৃষি নির্ভর তাই আমরা এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছি।’
বাংলাদেশের দ্রুত শিল্পায়নের জন্য গ্যাস এবং বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘ইউএই’র সঙ্গে জা¡লানি সম্পর্কিত সহযোগিতা আমাদের শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করবে।’
অনুষ্ঠানে রিলাম ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সুলতান আল রাশেদ লোটাহ্, এমিরেট ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এমডি আবদুল্লাহ আল কাশিম ও মালাবার গোল্ড’র এমডি (ইন্টারন্যাশনাল অপারেশন্স) শামলাল আহামেদসহ আরও অনেক ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাসস।