সোমবার ● ৬ জুলাই ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » সরকারী চাল দিতে জেলেদের কাছ থেকে ট্যাক্স নিচ্ছেন চেয়ারম্যান
সরকারী চাল দিতে জেলেদের কাছ থেকে ট্যাক্স নিচ্ছেন চেয়ারম্যান
পাইকগাছা প্রতিনিধি
বাংলাদেশের সামদ্রকি জলসীমায় ৪২ দিন মৎস্য আহরণ বন্ধ। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে জেলেদের জন্য মানবিক সহায়তা কমসূচরি আওয়তায় বিনা মল্যে নিবন্ধিত জেলেদরে চাল দেওয়া হচ্ছে। কিন্ত পাইকগাছার ৭ নম্বর গদাইপর ইউনিয়ানের চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান জনপ্রতি একশত টাকা করে নিচ্ছেন। এ নিয়ে জেলেদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মৎস্য অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় মৎস্য কার্যালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মৎস্য আহরণ থেকে বিরত থাকতে হবে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে জেলেদের জন্য মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় বিশেষ ভিজিএফ (চাল) এর প্রথম কিস্তি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। প্রথম কিস্তির সময়সীমা ২০ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা, দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা ও রূপসা এই পাঁচটি উপজেলায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৩১ হাজার ৫১০ জন। নিবন্ধিত জেলের পরিবার প্রতি ৫৬ কেজি হিসেবে বরাদ্দ পেয়েছে ১ হাজার ৭৬৪ দশমিক ৫৬ মেট্রিক টন চাল। ২০ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ৪২ দিন সময়কালের জন্য বরাদ্দকৃত চাল বিতরণের শেষ সময় ১৫ জুন।
গদাইপুর ইউনিয়ানের কয়েক জেলেরা জানায়, গদাইপুর ইউনিয়ানে ৪০৪ জন জেলে এ বছর ৫৬ কেজি করে চাল পাবেন। চালের জন্য প্রতিজন জেলের কাছ থেকে চেয়ারম্যান ১০০ টাকা করে ৪০ হাজার চারশত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এ কাজের জন্য তিন জন চৌকিদার নিয়োজিত করেছেন। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চাঁদা আয়ের রশিদের মাধ্যমে এই টাকা আদায় করছেন। এ ব্যাপরে চৌকিদারা জানাচ্ছে এটা ট্যাক্সের টাকা। অথচ তিনি মাস আগেও অনেকে কাছ থেকে ট্যাস্কের টাকা আদায় করা হয়েছে। ইউনিয়ানের রশিদে এই টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে কি কারণে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে তা রশিদে উল্লেখ্য নেই।
হিতামপুর গ্রামের জেলে সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, এই বার নিয়ে তিন বছর চাল পাচ্ছি। কিন্তু আগে কোন দিন চাল তুলতে টাকা দিতে হয়নি। এবার ১০০ টাকা করে টাকা দিতে হচ্ছে। কেন টাকা দিতে হবে জানতে চাইলে চৌকিদার হাবিব বলেন, ট্যাক্স হিসাবে দিতে হবে।একই গ্রামের জেলে সুবোল বিশ্বাস বলেন,টাকা না দিলে চাল দিবে না বলে চৌকিদার জানিয়েছে। কিন্তু আমরা তো প্রতিবছর ট্যাক্স দিই। এক বছরে দুই বার ট্যাস্ক আগে কখনও নেওয়া হয়নি। এবার প্রথম।
ওই গ্রামের আরেক জেলে অর্চনা রাণী বিশ্বাস বলেন, এই তিন মাস আগেও আমার নিকট থেকে ১০০ টাকা ট্যাস্ক নেওয়া হয়েছে আবার ঠিক তিন মাস পরে ১০০ টাকা ট্যাস্ক নেওয়া হচ্ছে। এর আগে কখনও এরকম হয়নি।
গাজী জুনায়েদুর রহমান বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের ফান্ডে পর্যাপ্ত টাকা নেই। তাই উপজেলা থেকে চাল পরিবহনের জন্য এই ১০০টাকা নেওয়া হচ্ছে ট্যাক্স হিসাবে। যদি কারো কাছ থেকে ২ বার নেওয়া হয়ে থাকে তাহলে তিনি আমাদের রশিদ দেখালে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।
পাইকগাছা মৎস কমকতা পবিত্র কুমার দাস বলেন, গদাইপুর ইউনিয়ানে ৪০৪ জন জেলে এই চাল পাচ্ছে। যতদুর জানি উপজেলা থেকে বরাদ্দের চাল ইউনিয়ন পযয়ে নেওয়ার পরিবহন খরচ বাবদ এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। কারণ সরকার থেকে এই খরচটি দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারী মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।