শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
মঙ্গলবার ● ১ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » ইতিহাস ও ঐতিহ্য » কেশবপুরে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন মির্জানগর হাম্মামখানা দীর্ঘদিন অরক্ষিত
প্রথম পাতা » ইতিহাস ও ঐতিহ্য » কেশবপুরে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন মির্জানগর হাম্মামখানা দীর্ঘদিন অরক্ষিত
৪৭৮ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১ সেপ্টেম্বর ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কেশবপুরে প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন মির্জানগর হাম্মামখানা দীর্ঘদিন অরক্ষিত

---

এম. আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের কেশবপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে কপোতাক্ষ নদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত সাড়ে ৩শ বছরের পুরানো প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন মির্জানগর নবাব বাড়ির হাম্মামখানা। তবে স্থানীয় লোকজন হাম্মামখানা বললে অনেকই চেনেন না। নবাব বাড়ি বললে চিনতে পারেন। জেমস রেনেলের মানচিত্রে (১৭৮১ খ্রীস্টাব্দ) যশোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর হিসেবে মির্জানগরকে দেখানো হয়েছে। জনশ্রুতি অনুযায়ী দুইজন মোগল ফৌজদার মির্জা সাফসি খান এবং নুরুল্লাহ খান এখানে তাঁদের প্রশাসনিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁরাই মির্জানগরের নবব বাড়ি ও কিল্লা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জে. ওয়েস্টল্যান্ড সর্বপ্রথম মির্জানগরের ধ্বংসাবশেষকে ফৌজদার ও নওয়াবদের বাসভবন হিসিবে চিহ্নিত করেন। প্রতœতাত্ত্বিক ও স্থপতিদের মতে, নবাববাড়ি বা হাবসিখানা নামে পরিচিত স্থাপত্য কাঠামোটি প্রকৃতপক্ষে একটি হাম্মামখানা। হাম্মাম ফার্সি শব্দ যার অর্থ গোসল করার স্থান। মধ্য এশিয়ায় হাম্মামখানা শব্দটি ব্যাপকভাবে গোসলখানা অর্থেই ব্যবহৃত হতো। মোগল সম্রাট আকবরের সময়ে বাংলার সুবেদার শাহ সুজার শ্যালকপুত্র মীর্জা সাফসি খাঁন ১৬৪৯ খ্রিস্টাব্দে যশোরের ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি কেশবপুর হতে ১০ কি.মি. পশ্চিমে কপোতাক্ষ নদের তীরে ও ত্রিমোহিনীর মীর্জানগর নামক স্থানে বসবাস করতেন। তাঁর নাম অনুসারে এলাকাটির নাম হয় মীর্জানগর। পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কেশবপুর থেকে সাতবাড়িয়া বাজার থেকে দক্ষিণে এক কিলোমিটার গেলে নবাব বাড়ি মোড় (নতুন হয়েছে)। এই নবাব বাড়ি মোড় থেকে ২০০ গজ পশ্চিমে গেলেই মির্জানগর হাম্মামখানা। ত্রিমোহিনী বাজার থেকে ত্রিমোহিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে দিয়েও যাওয়া যায় কিন্তু রাস্তা ভালো না; বৃষ্টির দিনে মাটির রাস্তায় যেতে একটু অসুবিধা হয়। সম্রাট আকবরের আমলে সাফসি খান ফৌজদার নিযুক্ত হন। তিনি বুড়িভদ্রা নদীর দক্ষিণ পাড়ে কিল্লাবাড়ি স্থাপন করে সেখানে বসবাস করতেন। এটা পূর্ব-পশ্চিমে দীর্ঘ। সুবিস্তৃত পরিখা খনন করে, আট-দশ ফুট উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত করে এটাকে মতিঝিল নামকরণ করেন, এর একাংশে বতকখানা, জোনানাসহ হাম্মামখানা (গোসলখানা) ও দুর্গের পূর্বদিকে সদর তোরণ নির্মাণ করেছিলেন। কামান দ্বারা দুর্গটি সুরক্ষিত ছিল। মীর্জানগরের কামানের একটি অংশ যশোরের মণিহার মোড়ে রক্ষিত আছে। হাম্মামখানা বাদে আজ আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। পূর্ব-পশ্চিম লম্বা চার কক্ষ বিশিষ্ট এবং একটি কূপ সমেত হাম্মাম খানাটি মোগল স্থাপত্য শৈলীর অনুকরণে নির্মিত হয়। স্থাপনাটি চার গম্বুজ বিশিষ্ট। দুইটি গম্বুজ বড় এবং দুইটি ছোট। এর পশ্চিম দিকে পরপর দুটি কক্ষ ১৮ ফুট ৮ ইঞ্চি বাই ১৮ ফুট ও ১৮ ফুট ৮ ইঞ্চি বাই ১৭ ফুট। পূর্বদিকের কক্ষ দুটি দুইভাগে বিভক্ত। উত্তরের কক্ষ ১২ ফুট ২ ইঞ্চি বাই ১০ ফুট এবং দক্ষিণেরটি ১০ ফুট বাই সাড়ে ৬ ফুট। এই কক্ষ দুটি উঁচু চৌবাচ্চা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এর জানালাগুলো এমন উঁচু করে তৈরি যাতে এর ভিতরে অবস্থানকালে বাইরে থেকে শরীরের অংশ দেখা না যায়। পূর্বপার্শ্বে দেয়াল বেষ্টনীর ভেতর রয়েছে ৯ ফুট ব্যাসের ইটের নির্মিত সুগভীর কূপ। সে কূপ হতে পানি টেনে তুলে এর ছাদের দুটি চৌবাচ্চায় জমা করে রৌদ্রে গরম করে দেয়াল অভ্যন্তরে গ্রথিত পোড়ামাটির নলের মাধ্যমে কক্ষে পানি সরবরাহ করা হতো। স্থাপনাটির দক্ষিণ পার্শ্বে একটি চৌবাচ্চা এবং একটি সুড়ঙ্গ রয়েছে যা তোষাখানা ছিল বলে অনুমিত হয়। ১৯৯৬ সালে প্রতœতত্ত্ব বিভাগ এটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে এবং সংস্কার করে। সরেজমিনে দেখা গেছে, সাড়ে ৩শ বছরের পুরানো প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন হাম্মামখানি অরক্ষিত পড়ে আছে। নেই কোন প্রহরী বা সাইট অ্যাটেনডেন্ট। একদল উশৃংখল যুবক হাম্মাম খানার পশ্চিম দিকের গেটের দুইটি ক্লাম ভেঙ্গে ফেলেছে। এই হাম্মামখানার সাবেক সাইট অ্যাটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এটা দেখে মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাড়ি সাগরদাঁড়ি কাস্টোডিয়ানের সাথে যোগাযোগ করলে সেখানে থেকে আমাকে ক্লাম লাগাতে বললে আমি ২১০ টাকা খরচ করে ক্লাম লাগিয়ে সেখানে কাটা দিয়ে রেখেছি। ২ বছর হলো শহিদুল ইসলাম বদলী হয়ে কুমিল্লয় চলে যাওয়ায় বর্তমানে হাম্মামখানাটি দেখাশুনা ও রক্ষণাবেক্ষণ জন্য কেউ নেই। এই হাম্মামখানা দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসেন। পর্যটকদের সুবিধার জন্য রাস্তার পাশে একটি নামফলক থাকলেও তা গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে। পর্যটকদের স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে হাম্মামখানায় পৌঁছাতে হয়। এলাকাবাসীর দাবি  যথাযত সংস্কার করে ঐতিহ্যবাহী এই হাম্মামখানাকে সংরক্ষণ করা। যাতে করে আগামী প্রজন্ম এ স¤পর্কে জানতে পারে।





ইতিহাস ও ঐতিহ্য এর আরও খবর

পাইকগাছার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প মৃতপ্রায় ; প্রয়োজন সরকারি পৃষ্টপোষকতা পাইকগাছার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প মৃতপ্রায় ; প্রয়োজন সরকারি পৃষ্টপোষকতা
হারিয়ে যাচ্ছে কবি কাজী কাদের নওয়াজের শেষ স্মৃতি চিহ্ন হারিয়ে যাচ্ছে কবি কাজী কাদের নওয়াজের শেষ স্মৃতি চিহ্ন
চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মশতবর্ষ পালিত চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মশতবর্ষ পালিত
চুকনগর বদ্ধভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে : গণপূর্তমন্ত্রী চুকনগর বদ্ধভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে : গণপূর্তমন্ত্রী
ঔপন্যাসিক নীহার রঞ্জন গুপ্তের ১১৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত ঔপন্যাসিক নীহার রঞ্জন গুপ্তের ১১৩তম জন্মবার্ষিকী পালিত
জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক নীহার রঞ্জন গুপ্তের ১১৩তম জন্মবার্ষিকী ; নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়ি সংরক্ষণে ৫ দফা দাবি জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক নীহার রঞ্জন গুপ্তের ১১৩তম জন্মবার্ষিকী ; নীহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়ি সংরক্ষণে ৫ দফা দাবি
খুলনায় গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাবাষির্কীতে আলোচনা সভা সঠিক ইতিহাস যেন বিকৃত না হয়  -খুলনায় সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী খুলনায় গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাবাষির্কীতে আলোচনা সভা সঠিক ইতিহাস যেন বিকৃত না হয় -খুলনায় সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন
বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ এম এ গফুর বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ এম এ গফুর
মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক পাইকগাছার মধুমিতা পার্কটির অবৈধ স্হাপনা উচ্ছেদ করে পূর্বাস্হায় ফেরানোর নির্দেশ মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক পাইকগাছার মধুমিতা পার্কটির অবৈধ স্হাপনা উচ্ছেদ করে পূর্বাস্হায় ফেরানোর নির্দেশ

আর্কাইভ