বৃহস্পতিবার ● ৮ অক্টোবর ২০২০
প্রথম পাতা » রাজনীতি » মোংলা পোর্ট পৌরসভায় নিবার্চনী আমেজ দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের ৫, বিএনপির ১ ও স্বতন্ত্র ১ প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ।
মোংলা পোর্ট পৌরসভায় নিবার্চনী আমেজ দলীয় মনোনয়ন পেতে আওয়ামী লীগের ৫, বিএনপির ১ ও স্বতন্ত্র ১ প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ।
মোঃএরশাদ হোসেন রনি, মোংলা
মোংলা পোর্ট পৌরসভার সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১১ সালে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী ২০১৬ সালে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ হলেও সে সময়ে সীমানা জটিলতা মামলায় স্থগিত হয়ে যায় সেবারের নির্বাচন। সেই সীমানা জটিলতা দূর হয়ে এখন চলছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম। এরপর যে কোন সময় হতে পারে পৌর নির্বাচন। তাই আসছে নির্বাচনকে সামনে রেখে পৌর মেয়র প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় সকলে দেঁৗড়ঝাপ শুরু করেছেন। বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য এ সকল প্রাথর্ীরা যে যার মত লবিংগ্রুপিং চালিয়ে যাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে মাঠ পযার্য়ের নেতা-কমর্ীসহ হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছে চলেছেন প্রাথর্ীরা। এলাকায় চালাচ্ছেন প্রচারণাও। তবে এ প্রচারণা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেই বেশি দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে আবার কেউ কেউ এলাকায় জনসমর্থন জোগাতে প্রচারণাও চালাচ্ছেন। প্রচারণার অংশ হিসেবে অনেকে সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্যদিয়ে নিজেকে জানান দেয়ারও চেষ্টা করছেন।
এখন পর্যন্ত মাঠে আওয়ামী লীগেরই ৫ জন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ইজারাদার, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি, বাগেরহাট জেলা পরিষদের সদস্য ও মোংলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার শেখ আব্দুর রহমান, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও মিঠাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইস্রাফিল হাওলাদার এবং উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: ইকবাল হোসেন।
এদিকে বিএনপি থেকে মাত্র একজন প্রার্থীরই নাম শোনা যাচ্ছে তিনি হলেন বর্তমান পৌর মেয়র আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আলী। আলহাজ্ব মো: জুলফিকার আলী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তার দল থেকে আর কোন সম্ভাব্য প্রাথর্ী না থাকায় তিনিই পৌর মেয়র প্রাথর্ী হিসেবে অন্য দলের দিক দিয়ে খুবই সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন। ২০১১ সালে জুলফিকার আলী মেয়র নিবার্চিত হওয়ার পর মাঝে সীমানা জটিলতার মামলার কারণে আর নিবার্চন হয়নি। দীর্ঘ ১০ বছর মেয়রের চেয়ারে থাকার সুবাধে তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করেছের পৌরসভার সর্বত্র জুড়ে। তার এ উন্নয়নে অভিভূত পৌরবাসী। মেয়র মো: জুলফিকার আলী বলেন, আমি এর আগে বিএনপির একক মনোনীত প্রাথর্ী হিসেবে নিবার্চন করে মেয়র হই। এবারও দল থেকে আমাকেই মনোনয়ন দিবেন। তিনি আরো বলেন, আমি যখন মেয়রের দায়িত্ব নিই তখন পৌরসভা দেনায় জর্জরিত ছিল। রাস্তাঘাট খারাপ ছিল। সকল ধরণের নাগরিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল পৌরবাসী। আমি দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পর পৌরসভার সর্বত্র যে আধুনিকতার ছোয়া লাগিয়ে দিয়েছে তাতে পৌরবাসী খুশী মনে আমাকে আবারো ভোট দিয়ে মেয়র নিবার্চিত করবেন বলে আমি আশাবাদী।
এর আগে ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী ইজারদার। তবে সে সময় সামীনা জটিলতার কারণে নিবার্চন স্থগিত হয়ে যায়। মনোনয়ন প্রতাশী ইদ্রিস আলী ইজারদার বলেন, আসছে নিবার্চনেও আবারো তাকে দলের হাইকমান্ড মনোনয়ন দিবেন এমন প্রতাশ্যা তার। তিনি আরো বলেন, ২০১৬ সালে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে পৌরসভার সীমানা জটিলতা সংক্রান্ত মামলাসহ অন্যান্য বিষয়েও মোংলা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ব্যাপক দৌঁড়ঝাপ করে নিবার্চনের পরিবেশের সৃষ্টি করেছেন। এজন্যও তার অবদানের দাবীদার তিনি।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আ: রহমান বলেন, তৃণমুলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার আস্থা ও বিশ্বাস আছে। তারা তাদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে যে সকল সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠাবেন এবং মনোনয়ন বোর্ড যাকে চুড়ান্ত প্রার্থীতা দিবেন আমি দলের স্বার্থে তার হয়েই কাজ করবো। আমি না পেলেও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিবো। তিনি আরো বলেন, মোংলা-রামপালের উন্নয়নের কারিগর আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ও স্থানীয় সাংসদ উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারের সিদ্ধান্তের উপর আমরা সকলেই আস্থাশীল। তারা যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমরা নেতা-কর্মীরা ও সমর্থকেরা রাজপথে বাস্তবায়ন করবো ইনশাল্লাহ।
মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ কামরুজামান জসিম পৌরসভার বার বার নিবার্চিত সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম শেখ আ: হাই ও উপজেলা পরিষদের বার বার নিবার্চিত ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন নাহার হাইর বড় ছেলে।এছাড়া মোংলা উপজেলায় একজন করোনা যোদ্ধা হিসাবেও পরিচিত তিনি।করোনার দিনরাত মানুষের পাশে থেকে কাজ করে গেছেন। পিতা মাতার সফল নেতৃত্বের উত্তরসূরী হিসেবে শেখ কামরুজ্জামান জসিমেরও এলাকা জুড়ে রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। আলহাজ্ব শেখ কামরুজ্জামান জসিম বলেন, পৌর মেয়র হিসেবে আমি দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো।তৃনমূলের নেতা কর্মীদের প্রতি আমার আস্হা ও বিশ্বাস রয়েছে। আমার প্রিয় নেতা ও অভিভাবক খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক এবং স্থানীয় সাংসদ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটি মেনে নিয়েই আমি কাজ করবো।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইস্রাফিল হাওলাদার বলেন, আমি পৌরসভার নিবার্চনে মেয়র প্রার্থী প্রত্যাশী। দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো, আমার রাজনৈতিক অভিভাবক মোংলা-রামপালের রুপকার, খুলনা সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকাদার আব্দুল খালেক এবং মোংলা-রামপালের সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটি মেনে নিবো।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: ইকবাল হোসেন বলেন, দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকাদার আব্দুল খালেক এবং মোংলা-রামপালের সংসদ সদস্য হাবিবুন নাহার যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটি মেনে নিবো। মনোনয়ন দিলে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নিবার্চন করবো।
সর্বশেষ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে মোংলা বন্দরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক ও মোংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আলহাজ্ব এইচ এম দুলালের। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সমাজসেবাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সুবাদে পৌর শহর জুড়ে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও সুনাম রয়েছে।
মোংলা পোর্ট পৌরসভার নিবার্চনকে ঘিরে শহরের অলিগলিতে বইছে নিবার্চনী আমেজ। কে, কে প্রার্থী হচ্ছেন, কে নিবার্চিত হলে কেমন হবে পৌরসভা। এতসব নিয়ে ভোটারদের মাঝে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। #