শনিবার ● ২৩ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ » কেশবপুরে ফতেপুর মাদরাসার ট্রাস্ট সম্পত্তি অবৈধ দখলে ॥ উদ্ধার দাবিতে বিক্ষোভ
কেশবপুরে ফতেপুর মাদরাসার ট্রাস্ট সম্পত্তি অবৈধ দখলে ॥ উদ্ধার দাবিতে বিক্ষোভ
এম. আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের কেশবপুরে ফতেপুর অহীদুল উলুম ক্বওমী মাদ্রাসার কল্যাণ ট্রাস্টের ১ একর ৪৮ শতক সম্পত্তি এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে জবর দখলে রেখেছেন। সম্প্রতি মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষ ওই সম্পত্তি উদ্ধারে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়ায় মহলটি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অপপ্রচার রটানোসহ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানাগেছে।
অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে জমি উদ্ধারের দাবিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। এবং এলাকাবাসি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে অভিযোগ করেছেন। মাদ্রাসার অফিস সুত্রে জানাগেছে, উপজেলার ফতেপুর গ্রামের সমাজসেবক শওকত আলী খানের কোন ছেলে-মেয়ে জীবিত না থাকায় তিনি ও তার স্ত্রী রওশনারা বেগম ২০১১ সালে ফতেপুর অহীদুল উলুম ক্বওমী মাদ্রাসা নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই শওকত আলী খান সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ২০১৩ সালের পর পর্যায়ক্রমে তিনি ও তার স্ত্রী তাদের স্থাবর অস্থাবর সর্বমোট ১১.৭৫ একর সম্পত্তি মাদ্রাসার কল্যাণ ট্রাস্ট নামে দলিল করেন। এছাড়া তার ভাই রজব আলী খানের ছেলে শফিকুল ইসলামের দখলে থাকা বড় বোন রহিমা খাতুনের ১ একর ২০ শতক জমিও রহিমা খাতুন মাদ্রাসার কল্যাণ ট্রাস্ট নামে দলিল করেন। কিন্তু অদ্যাবধি শফিকুল ইসলাম মাদ্রাসার কল্যাণ ট্রাস্টের ১ একর ২০ শতক জমি ফেরৎ না দিয়ে ভোগ দখল করতে আসছেন। ২০১৪ সালের ২ জুলাই প্রতিষ্ঠাতা শওকত আলী খানের মৃত্যুর পর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি হন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি মো. ওয়াক্কাস আলী। গত ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মাদ্রাসার শুরা বোর্ডের সভায় অবৈধ দখলে থাকা জমি উদ্ধারের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৩ জানুয়ারী ওই জমিতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। এরপর থেকে শফিকুল ইসলাম মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অপপ্রচার রটানো, মাদ্রাসার ট্রাস্ট বাতিলসহ স্বার্থ পরিপন্থী কাজে লিপ্ত হন। এবিষয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার মোহতামিম একাই ট্রাস্ট সম্পিত্তি নিয়ন্ত্রণ করছেন। ফলে তিনি অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। এর বিরোধিতা করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন। মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মুফতি হাবিবুল্লাহ বলেন, মাদ্রাসার সম্পত্তি একা নিয়ন্ত্রণ করার কোন সুযোগ নেই। মাদ্রাসার ১৭২ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানে ৮ জন শিক্ষক ও ১ জন বাবুর্চি রয়েছে। মাদ্রাসায় কিতাব বিভাগ, হেফজ বিভাগ, লিল্লা বোডিং ও এতিমখানা বিভাগ চালু রয়েছে। ট্রাস্ট সম্পিত্তি থেকে যা আয় হয় তাদিয়ে মাদ্রাসা চালাতে হিমশিম খেতে হয়। অত মাদ্রাসাটি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঢাকা এর কারিকুলাম অনুযায়ী মজলিসে শুরা কর্তৃক পরিচলিত হয়ে থাকে। এছাড়া শওকত আলী খানের স্ত্রী রওশনারা বেগমকে ট্রাস্টের শর্তানুযায়ী প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে দিতে হয়। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, শুরা সদস্য ও ট্রাস্টদাতা পরিবারের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী মিটিংএ জমি উদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়া হবে। কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসি চায় মাদ্রাসটি টিকে থাকুক সে কারণে এলাকাবাসি অবৈধভাবে দখলে থাকা জমি উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন ।