মঙ্গলবার ● ৮ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » বিশ্ব » বাসমতি চাল নিয়ে পাক-ভারত উত্তেজনা
বাসমতি চাল নিয়ে পাক-ভারত উত্তেজনা
এস ডব্লিউ নিউজ: ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার বিরোধ নতুন নয়। স্বাধীনতার পর থেকে অন্তত তিনবার বড় ধরনের সম্মুখ যুদ্ধে জড়িয়েছে তারা। এখনো সীমান্তে প্রতিদিন গুলিবিনিময়ের খবর পাওয়া যায়। তবে এবার নতুন বিরোধে জড়িয়েছে দুই ‘চিরশত্রু’। আর তাদের এই লড়াই শুরু হয়েছে সুগন্ধি বাসমতি চালের মালিকানা নিয়ে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবর অনুসারে, সম্প্রতি বাসমতি চালের ট্রেডমার্কের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) আবেদন করেছে ভারত। আর তাতেই খেপেছে পাকিস্তানিরা।
কারণ বাসমতি চাল শুধু ভারতে নয়, পাকিস্তানেও উৎপাদন হয় আর এর অন্যতম রফতানিকারকও তারা। কিন্তু ভারত ইইউর কাছ থেকে বাসমতি চালের ‘প্রোটেকটেড জিও গ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন’ (পিজিআই) পেয়ে গেলে পাকিস্তানিদের চাল রফতানি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।
লাহোরের চাল ব্যবসায়ী গোলাম মোর্তজার কথায়, এটি তাদের ওপর পারমাণবিক বোমা ফেলার সামিল।
অবশ্য পাকিস্তান তাৎক্ষণিকভাবে ইউরোপীয় কমিশনে ভারতের ওই আবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম চাল রফতানিকারক। প্রতিবছর প্রায় ৬৮০ কোটি ডলারের চাল রফতানি করে তারা। এ তালিকায় পাকিস্তান রয়েছে চার নম্বরে। প্রতিবছর চাল রফতানি করে পাকিস্তানিরা অন্তত ২২০ কোটি ডলার আয় করে থাকে। বিশ্বে একমাত্র ভারত ও পাকিস্তানই বাসমতি চাল রফতানি করে।
মোতর্জা বলেছিলেন, আমাদের বাজার ধরার জন্য ভারতই এই ঝামেলা পাকিয়েছে। এতে আমাদের গোটা চাল শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইউরোপীয় কীটনাশক মানদণ্ডে ভারত জটিলতার মুখে পড়ার সুযোগে গত তিন বছরে ইইউতে পাকিস্তানের বাসমতি চাল রফতানি অনেকটাই বেড়েছে। ইউরোপীয়দের চাহিদার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বাসমতিই পাকিস্তান থেকে যাচ্ছে।
ভারতের দাবি, তারা বাসমতি চালের একমাত্র উৎপাদক হওয়ার স্বীকৃতির জন্য আবেদন জানায়নি। যদিও ইইউ থেকে পিজিআই পাওয়ার অর্থ মূলত সেটিই।
ভারতীয় চাল রফতানিকারক সংঘের সাবেক সভাপতি বিজয় সেটিয়া বলেন, ভারত-পাকিস্তান প্রায় ৪০ বছর ধরে বিভিন্ন বাজারে সুষম উপায়ে চাল রফতানি ও প্রতিযোগিতা করছে। আমার মনে হয় না পিজিআই সেটি বদলে দেবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি অনুসারে, ভারতের আবেদনে তিন মাস সময় বাড়ানোর পর আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে যেকোনো একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে দুই দেশকে। সেক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তান একটি যৌথ আবেদন দাখিল করতে পারে এবং বাসমতিকে দুই অঞ্চলের অভিন্ন পণ্য ঘোষণা করা হতে পারে।
সমঝোতা না হলে ইইউ যদি ভারতের পক্ষে রায় দেয়, তাহলে ইউরোপীয় আদালতে আপিল করতে পারবে পাকিস্তান। তবে দীর্ঘমেয়াদী সেই প্রক্রিয়ায় তাদের চাল রফতানি যথেষ্ট ক্ষতির মধ্যে পড়বে।