মঙ্গলবার ● ২২ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » বিবিধ » রাস্তা নাকি খাল ! দেখে বোঝা যায় না
রাস্তা নাকি খাল ! দেখে বোঝা যায় না
রামপ্রসাদ সরদার, কয়রা, খুলনাঃ
কয়রা-কাঁশিরহাট সড়ক দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি রাস্তা নাকি খাল। দেখলে মনে হবে রাস্তা নয়, যেন পুকুর বা খাল। যানবাহনের বদলে সড়কটিতে নৌকা চালানো যাবে। কষ্টের যেন শেষ নেই মানুষের। কথাগুলো বলছিলেন, কয়রা সদর ইউনিয়ানের ১নং কয়রা গ্রামের ট্রাক চালক তুষার কান্তি মণ্ডল।
কয়রা উপজেলা সদর থেকে কাঁশির হাটখোলা খেয়াঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়াতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের অবস্থা বর্তমানে এতটাই খারাপ যে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে পুকুর/খালে পরিণত হয়েছে। যা দেখে বোঝার উপায় নেই ,এটা সড়ক না খাল।
সরেজমিনে দেখা গেছে , কয়রা উপজেলা সদর হতে বেদকাশী কাছারীবাড়ী হয়ে কাঁশির হাটখোলা খেয়াঘাট পর্যন্ত সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা। বিগত বছর আম্ফানে সড়কটি দীর্ঘদিন পানির নিচে ডুবে থাকায় অনেক জায়গায় ভেঙ্গে উত্তর বেদকাশী হতে কাশিরহাট খেয়াঘাট অভিমুখে রাস্তা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
এছাড়া ৯ কিলোমিটার রাস্তার অর্ধশতাধিক জায়গায় ছোট বড় গর্তগুলি কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও গর্তে বালি-কাদা জমে ভরাট হয়ে গেছে। দেখে বোঝার উপায় নেই যে সেখানে গর্ত ছিল। এই ভাঙ্গা চোরা সড়ক নিয়ে বিপাকে পড়েছেন যানবাহন চালকরা। বিশেষ করে বাইরে থেকে আসা মাল বোঝাই গাড়িগুলোর জন্য সড়কটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই নরম বালি-কাদার গর্তে চাকা পড়ে গাড়ি আটকে যাচ্ছে। আবার কখনো উল্টে যাচ্ছে। পরে মালমাল আনলোড করে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গর্ত থেকে গাড়ি তুলতে হচ্ছে। কয়রা সদরের দণিাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ও পাতাখালী এলাকার মানুষের কয়রা উপজেলা সদর ও খুলনা জেলা সদরে যাতায়াত ও মালামাল আনা নেওয়ার একমাত্র রাস্তাটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
এছাড়া প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দৈনন্দিন প্রয়োজনে এ রাস্তা দিয়ে উপজেলা সদর ও জেলা সদর খুলনায় যাতায়াত করে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটির কাজ বিগত বছর শুরু করে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজ অনেকটা এগিয়ে যায়। তবে আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ হলে রাস্তার কাজ আবার বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে বৃষ্টি মৌসুমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ না করলে উত্তর ও দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন ও গাবুরা ইউনিয়নের হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে এলাকার জনসাধারণ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, আম্ফানের সময় নদি ভাঙ্গনে এলাকা প্লাবিত হয়ে কয়রা-কাঁশিরহাট সড়কটি দীর্ঘদিন পানির নিচে তলিয়ে ছিল যেকরণে ঐ জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ওয়ায় চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, জনগুরত্বপূর্ণ সড়কটির কাজ শুরু করার জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করারও আশ্বাস দিয়েছেন।
খুলনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন , সড়কটির কাজ চলমান ছিল। কিন্তু আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্থ হলে তা আবার বন্ধ হয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করার।