বুধবার ● ১৪ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » ব্যবসা-বাণিজ্য » ঈদে কর্মব্যস্ততা বাড়ছে কামার শিল্পেঃ
ঈদে কর্মব্যস্ততা বাড়ছে কামার শিল্পেঃ
প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা ; করোনার প্রভাবে লকডাউনের কারণে কামার শিল্পেও প্রভাব পড়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে তৈরী সরঞ্জাম তেমন একটা বিক্রি হচ্ছে না। আর কয়েক দিন বাদে ঈদুল আযহা। আসন্ন কুরবানী ঈদের কথা মাথায় রেখে নতুন আশায় বুক বেঁধে কামার শিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছে।
চললে হাঁপর, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। হাঁতুরী আর লোহার টুংটাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে কামার পাড়াগুলো। তাই এই সময় কর্মব্যস্ত সময় পার করছে কামার শিল্পীরা। কোরবানি পশু জবাই, মাংস তৈরী আর চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যবহারিত চাপাতি, দা, ছুরিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পাইকগাছার কামার শিল্পীরা।
হারিয়ে যেতে বসা বাংলার প্রাচীন কামারশিল্প যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এখন দম ফেলার ফুরসত নেই কামার পাড়ার শিল্পীদের। দিন-রাত সমান তালে লোহার টুং-টাং শব্দ আর হাফরের ফুঁসফাঁস শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে উপজেলার প্রতিটি কামারশালা।
আর মাত্র কয়েক দিন পর ঈদুল-আযহা। উপজেলা পৌর সদর, নতুন বাজার, গদাইপুর, আগড়ঘাটা, কপিলমুনি বাঁকা, চাঁদখালী, কাটিপাড়া, বোয়ালিয়ার মোড়সহ বিভিন্ন হাট বাজার এবং কামার বাড়ীতে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের ছোরা, চাপাতি, চাকু, দা, বটি, কুড়াল সহ বিভিন্ন সরজ্ঞাম তৈরি করছে কামাররা। তাহা ছাড়া তাদের পছন্দমত বিভিন্ন সাইজের ছোট-বড় ধারালো অস্ত্র তৈরি করছে। সারা বছর টুক-টাক কাজ থাকলেও কুরবানির ঈদের সময় কামার শিল্প মুখরিত হয়ে ওঠে। কামার শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসময় দোকানে পুরাতন ও নতুন ধারালো অস্ত্র বানানো ও মেরামত করার ভীড় শুরু হয়। ঈদের আগের দিন র্পযন্ত এই ব্যস্ততা থাকে। র্বতমানে আধুনিকতার ছোয়া লগেেেছ কামার শিল্পে। বৈদ্যুতিক সান দিয়ে বিভিন্ন সরঞ্জাম সান দেওয়া হয় ও হাফর বা জাতা দিয়ে বাতাস দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে মটর। বোয়ালিয়া মোড়ে অবস্থিত কামারশালার শিল্পী বিমল র্কমকার ও সুপম কর্মকার বলেন, লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ লোহা ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা ও গাড়ীর পাতি ৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি ক্রয় করতে হয়। পশু জবাই করার ছোট-বড় বিভিন্ন সরজ্ঞাম সাইজের উপর দাম নির্ভর করে। গদাইপুরের সন্তোষ কর্মকার বলেন, অর্ডার দিয়ে তৈরী করা নতুন চাপাতি তৈরীর মুজুরী ৫শ টাকা থেকে ৭শ টাকা, জবাই করা ছোরা ৩শ টাকা। আর তৈরী করা ছোট চাপাতি ৫শত টাকা, বড় চাপাতি ৭ শত থেকে ৮ শত, বড় ছোরা ৩ শত থেকে সাড়ে ৩ শতটাকা, চাকু ৫০ টাকা থেকে দেড় শত টাকা, বটি আড়াই শত থেকে ৩ শত টাকা দরে বিক্রি, হচ্ছে। হরি গোপাল কর্মকার জানান, এই পেশায় আমরা খুব অবহেলিত। বর্তমান দ্রব্যমূল্য বেশী হলেও সেই অনুযায়ী দাম পাই না। ফলে সারা বছর সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। কুরবানির ঈদের সময় পশু জবাইয়ের সরজ্ঞামের চাহিদা থাকায় কাজও বেশি হয়। আর সারাবছর তেমন কোন কাজ থাকে না। টুক-টাক কাজ করে সংসার চালাতে হয়, তাই কামার শিল্পীরা র্বতমান এ পেশায় তাদেরকে অবহেলিত মনে করনে। তারপরও বাপ-দাদার পেশাকে টিকিয়ে রাখতে এ পেশাকে আকড়ে ধরে কাজ করে যাচ্ছেন।