মঙ্গলবার ● ২০ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » উপকূল » প্রাকৃতিক দূর্যোগে কয়রায় বাড়ছে উদ্বাস্তুর সংখ্যা
প্রাকৃতিক দূর্যোগে কয়রায় বাড়ছে উদ্বাস্তুর সংখ্যা
রামপ্রসাদ সরদার, কয়রা, খুলনাঃ
উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগ লেগে থাকায় খুলনার কয়রায় উদ্বাস্তুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
আকাশে মেঘ আর নদীতে ঢেউ দেখলেই আঁতকে ওঠেন উপকূলীয় মানুষ। কপোতাক্ষ নদ, কয়রা ও শাকবাড়ীয়া নদী বেষ্টিত এবং সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে ৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত খুলনার কয়রা উপজেলা। প্রতিনিয়ত ঘুর্ণিঝড়, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের সাথে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হয় তাদের। তবে ঘুর্ণিঝড় নয়, জলোচ্ছ্বাসের কারণে দূর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আতঙ্কে থাকে উপকূলবাসী।
ষাটের দশক থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দূর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে বছরের পর বছর বাপ-দাদার ভিটে-মাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীতে। রাতে জলোচ্ছ্বাসের বিকট শব্দ আর দিনে মানুষের আহাজারি। ঘর বাড়ি হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে উদ্বাস্তু হয়ে উপকূল ছেড়ে অজানায় ছুটছে তারা।
উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে কয়রা উপজেলায় জনসংখ্যা ছিল এক লাখ ৯৩ হাজার ৬৫৬ জন। বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৪৭%। সে অনুসারে কয়রা উপজেলায় ২০০৯ হতে ২০২১ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে পৌঁছানোর কথা প্রায় ২ লাখ ২৮ হাজারে। কিন্তু বর্তমানে ২০২১ সালে উপজেলায় জনসংখ্যা আছে এক লাখ ৯৫ হাজার ২৯২ জন। সে হিসেবে ৩০ হাজারের বেশি লোক এই উপজেলা থেকে অন্যত্র চলে গেছে।
দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম কবি শামসুর রহমান বলেন, প্রতি বছর প্রাকৃতিক দূর্যোগে বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত ও নদী ভাঙনের কারণে শুধু দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন থেকে প্রায় ৩ হাজার মানুষ অন্য জায়গায় চলে গেছে।
উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মনোজ মণ্ডল বলেন, প্রতিবছর প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে প্রায় ৩ হাজারের বেশি মানুষ উপকূল ছেড়ে চলে যায়। আর প্রায় এক শ’ মানুষ উপকূলে কর্মের খোঁজে আসেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, বার বার প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঘাত হানায় জীবন মান উন্নয়নের জন্য অনেকেই পার্শ্ববর্তী জেলা সহ শহরে চলে গেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, প্রতিবছর প্রকৃতিক দূর্যোগের কারণে বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়ে ঘর বাড়ি হারিয়ে অনেকেই স্থানান্তরিত হচ্ছেন। তবে স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।