বুধবার ● ১০ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ » পাইকগাছায় অপহৃত কলেজ ছাত্র আমিনুরের লাশ পাওয়া গেছে কপোতাক্ষ নদের চরে
পাইকগাছায় অপহৃত কলেজ ছাত্র আমিনুরের লাশ পাওয়া গেছে কপোতাক্ষ নদের চরে
এস ডব্লিউ নিউজ: পাইকগাছার আগড়ঘাটা থেকে অপহৃত আমিনুরের (১৯) লাশ পাওয়া গেছে কপোতাক্ষ নদের চরে । ১০ নভেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ৮ টায় আগড়ঘাটা বাজারের অপর পাশে কপোতাক্ষ নদের চরে তার মরদেহ পাওয়া যায়।নিহত আমিনুর উপজেলার কপিলমুনির শ্যামনগর গ্রামের ছুরমান গাজীর ছেলে ও কপিলমুনি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আটককৃত খুনি ফয়সাল সরদার পাইকগাছার গদাইপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে।
মুক্তিপণের দাবিতে কলেজ ছাত্র আমিনুর রহমানকে অপহরণের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মঙ্গলবার ৯ নভেম্বর)নিহতের পিতা সুরমান গাজী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকান্ডের গত তিনদিন ধরে কপোতাক্ষ নদে ব্যাপক তল্লাশী চালিয়ে বুধবার তার মরদেহ পাওয়া গেছে। হত্যাকান্ডে গ্রেফতার একমাত্র আসামি ফয়সাল খুনের বর্ণনা করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে জবানবন্দি দিয়েছেন । মঙ্গলবার বিকেলে তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালতের বিচারক মো: মনিরুজ্জামান।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আটক ফয়সাল জানায়, তার প্রেমিকার মোটরসাইকেল কেনার আবদার রক্ষা করতে সে আমিনুরকে অপহরণ করে তার পিতার কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে আমিনুরকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. তাকবীর হুসাইন জানান, হত্যাকাণ্ডের সময় নদীতে স্রোত ছিল। দুদিন পার হলেও লাশের অবস্থান জানা যাচ্ছিল না। অবশেষে স্থানীয় আগড়ঘাটা বাজারের অপর প্রান্ত শাহজাতপুরের পার কপোতাক্ষ নদে কলেজছাত্র আমিনুরের মরদেহ পাওয়া যায়। আটক ফয়সাল ঘটনার স্বীকারোক্তি দিলেও কপোতাক্ষ নদে প্রবল স্রোতের কারণে নিহতের মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে বুধবার ১০ নভেম্বর সকাল ৯ টার দিকে পাইকগাছার আগড়ঘাটা বাজার এলাকা থেকে কলেজ ছাত্র আমিনুরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পাইকগাছা থানার ওই কর্মকর্তা জানান, ফয়সাল রংপুর সেনানিবাসের গলফ খেলোয়াড়দের বল টোকানোর কাজ করত। সেখানে থাকা অবস্থায় এক মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রেমিকা সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য তাকে ‘আর ওয়ান ফাইভ’ নামে একটি মোটরসাইকেল ক্রয়ের জন্য চাপ দিতে থাকে। এরমধ্যে ওই সেনানিবাসের কর্মকর্তারা তাকে একটি অপকর্মের জন্য বের করে দেয়।
হত্যাকাণ্ডের আগের দিন ৬ নভেম্বর রাতে আমিনুরকে ঘটনাস্থলে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে আসামি ফয়সাল। পরের দিন ৭ নভেম্বর একই স্থানে নিয়ে তাকে জুসের সঙ্গে ১৪ টি ঘুমের ওষুধ পান করায় ফয়সাল। তারা উভয় একসঙ্গে সিগারেট সেবন করে। অবচেতনের ভাব আসলে সে দা দিয়ে প্রথমে আমিনুলের গলায় কোঁপ দেয়। চিৎকার করলে ঘাড়ে আরও একটি কোঁপ দেয়। পরে তাকে টেনে নদীতে ফেলে দেয় ফয়সাল। অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আমিনুরের ব্যবহৃত ফোন দিয়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বাবা সুরমান গাজীর কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে চক্রটি, যা পাইকগাছা ব্রিজের নিচে রাখতে বলে। কিছু টাকাও সেখানে রাখা হয়। ওই স্থান থেকে সোমবার দুপুরে টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার সময় চারপাশের লোকেরা অপহরণকারী ফয়সালকে আটক করে পুলিশে দেয়।
কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে আমিনুরকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে মঙ্গলবার ৯ নভেম্বর বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করলে আসামি ফয়সাল খুনের বর্ণনা করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদলতে। ওসি জিয়াউর রহমান জানান,লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছ।