শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
মঙ্গলবার ● ১৬ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » সংস্কৃতি ও বিনোদন » আজ থেকে ৩ দিন ব্যাপী দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু
প্রথম পাতা » সংস্কৃতি ও বিনোদন » আজ থেকে ৩ দিন ব্যাপী দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু
৩৭৮ বার পঠিত
মঙ্গলবার ● ১৬ নভেম্বর ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আজ থেকে ৩ দিন ব্যাপী দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু

পাইকগাছা ---প্রতিনিধিঃ সুন্দরবনের দুবলার চরে ৩ দিন ব্যাপী রাস উৎসব শুরু হয়েছে। রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে  ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী সুন্দরবনের দুবলারচরে ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমায় পূজা ও পুণ্যস্নান অনুষ্ঠিত হবে । এ বছরও শুধুমাত্র সনাতন র্ধমালম্বীদের রাস পূর্ণিমা পুণ্যস্নানে যাওয়ার অনুমতি থাকায় দর্শানার্থীর সংখ্যা অনেক কম হবে। এতে সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের উপর প্রভাব পড়বে কম। দুবলার চর সহ উপকূলের বিভিন্ন উপজেলায় রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। শুক্লপক্ষের চাঁদের আলোয় শোভিত নিরব সুন্দরবন চরাঞ্চল সরব হয়ে উঠবে পূণ্যার্থীদের পূজা ও আরাধনায়। দূর্গম সাগর-প্রকৃতির অভাবমায় সৌন্দর্য্যরে মাঝে পূর্ণ্য অর্জন আর সঞ্চার যেন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। কার্তিক-অগ্রহায়ণে শুক্লপক্ষের ভরাপূর্ণিমা সাগর উছলে ওঠে। চাঁদের আলোয় সাগর-দুহিতা দুবলার চরে আলোর কোল মেতে ওঠে রাস উৎসবে।

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রাচীন সমুদ্র রাস উৎসব সুন্দরবনের সাগরদুহিতা দুবলারচরে অনুষ্ঠিত হয়। রাস উৎসব নিয়ে নানা মত রয়েছে। ধারণা করা হয় ১৯২৩ সালে ঠাকুর হরিচাঁদের অনুসরী হরি ভজন নামে এক হিন্দু সাধু এই উৎসব শুরু করেছিল। এই সাধু ২৪ বছরও বেশি সময় ধরে সুন্দরবনের গাছের ফল-মূল খেয়ে জবিন-যাপন করতেন। তিনি হরিচাঁদ ঠাকুরের স্বপ্নাদৃষ্টি হয়ে পূজা-পর্বনাদি ও অনুষ্ঠান শুরু করেন দুবলার চরে। তারপর থেকে মেলা বসেছে লোকালয়ে এই মেলা নীল কোমল মেলা নামে পরিচিত। অন্যমত হিন্দু ধর্মালম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ কোন এক পূর্ণিমা তিথিতে পাপমোচন এবং পূর্ণলাভে গঙ্গাøানের স্বপ্নাদেশ পান। সেই থেকে শুরু হয় রাস উৎসব। আবার কারও কারও মতে শারদীয় দুর্গোৎসবের পর পূর্ণিমা রাতে বৃন্দাবনবাসী গোপীদের সাথে রাসনৃত্যে মেতেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ।বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলাচরে ও আলোর কোলে রাস পুর্ণিমায় রাধাকৃষ্ণের পুজা, পুর্ণ্যøান অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষ্যে রাস উৎসবে পুর্ণিমা তিথিতে চরে নির্মিত মন্দিরে নামজ্ঞোগ্য, রাধাকৃষ্ণ, কমল কামিনি ও বনবিবির পূজা অনুষ্ঠিত হবে। অটুট বিশ্বাস আর পুর্ণ ভক্তিতে কমল কামিনীর দর্শন মেলে। পুণ্যার্থীরা কমল কামিনী দর্শনের আশায় নিলকোমলের সাগর মোহনায় সাগর ঢেউঢেয় øান করে। রাস পুর্ণিমায় প্রথম আসা সমুদ্র ঢেউকে নিলকোমলের ঢেউ বলা হয়। এই প্রথম ঢেউয়ে পুর্ণাথিরা তাদের হাতে ধরে রাখা প্রসাদ ঢেউয়ে উৎসর্গ করে,এর পর স্নান শেষে চলে আসে। এ বছর ১৩৮ তম রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। প্রকৃতির অকৃপণ হাতের সৃষ্টি লোনা জলের সাগরের এই রাসমেলায় দূর-র্দূরান্তে তীর্থযাত্রীদের ঢল নামে। ভয়ঙ্কর সুন্দর এই সুন্দরবন। যেখানে একদিকে অ্যাডভেঞ্চার, অন্যদিকে ভয় আর শিহরণ। জলে কুমির, আর ডাঙ্গায় বাঘ। বনের প্রতিটি মূহুর্ত যেন রহস্য আর রোমাঞ্চকের এই মেলায় দর্শনার্থীরা প্রাকৃতিক সৌন্দার্যের অভাবনীয় রূপ উপভোগ করে। প্রতিবছর উৎসবের দিনগুলোতে নিরব সুন্দরবন যেন লোকালয় হয়ে জেগে ওঠে।

হিন্দুধর্মাবলম্বী লোকেরা পুর্ণিমার প্রথম প্রহরে সাগর জলে স্নান করে মনোবাসনা পুর্ণ ও পাপমোচন হবে এ বিশ্বাস নিয়ে রাসমেলায় যোগদিলেও সময়ের ব্যবধানে এ উৎসব নানা ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এ সময় অসংখ্যক বিদেশী পর্যটকদেরও আগমন ঘটে। আবাল বৃদ্ধ বনিতা, নির্বিশেষে সাগর চর এলাকায় উপস্থিতিতে কোলাহল, পদচালণায় মুখরিত হয়ে উঠবে। প্রতি বছর রাস উৎসব মানুষের মিলন মেলায় রূপ নেয়। সাগরপাড়ে দুবলা ও আলোরকোল চর সমুহে অনুষ্ঠিত রাস উৎসব সুন্দরবনের ঐতিহ্যকে আরো সমৃদ্ধ করেছে।

রাসপূর্ণিমায় পূজা ও পূর্ণ¯œানে আগত তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়ে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডঃ আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, সুন্দরবনে রাস পূজাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বন বিভাগের অভিযান পরিচালনার জন্য কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি নিজেও টহল কার্যক্রম চালানাের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক তদারকিতে থাকবেন বলেও জানান।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)