শিরোনাম:
পাইকগাছা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
শনিবার ● ২০ নভেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » মুক্তমত » ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’; জানেন কী, এর পেছনের ইতিহাস ?
প্রথম পাতা » মুক্তমত » ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’; জানেন কী, এর পেছনের ইতিহাস ?
৪৬৯ বার পঠিত
শনিবার ● ২০ নভেম্বর ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’; জানেন কী, এর পেছনের ইতিহাস ?

এস ডব্লিউ;---  আন্তর্জাতিক ‘নারী দিবস’ সম্পর্কে জানা আছে প্রায় সবারই। এ নিয়ে অনেক পুরুষের মৃদু আক্ষেপের কথাও জানি আমরা! অনেক পুরুষই বলে থাকেন- ‘পুরুষ দিবস’ নেই কেন?

আবার অনেকে বলেন ৮ মার্চ ছাড়া বাকি দিনগুলো হলো পুরুষদের জন্য। এই একটা দিন নিয়েই ‘সন্তুষ্ট’ থাকুক নারী।কিন্তু এমন ধারণা সঠিক নয়। আসলে খুব বেশি প্রচারণার অভাবে অনেকেই জানেননা অন্যান্য দিবসের মতো রয়েছে ‘পুরুষ দিবস’ও ! বিশ্বের অনেক দেশেই বহুবছর আগে থেকেই সাড়ম্বরে পালিত হয়ে আসছে ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’।

শুরুতেই বলে রাখি, এই দিবস কিন্তু নারী দিবসের বিপরীত কিছু নয়। বরং পুরুষের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া এই দিবসের মূল লক্ষ্য।

ইন্টারন্যাশনাল মেন’সে ডে (internationalmensday) লিখে গুগলে সার্চ দিলেই উইকিপিডিয়া ছাড়াও দেখা মিলবে এই সংক্রান্ত বেশকিছু ওয়েব সাইট।

মুলতঃ ১৯ নভেম্বর ‘আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস’কে কেন্দ্র করেই এসব ওয়েবসাইট।

মেন’স ডে সাইটগুলোতে এই দিবস পালনকারী বিভিন্ন দেশের সমর্থকদের তালিকা আছে। তবে সে তালিকায় বাংলাদেশের কোনো সমর্থকের ‍উল্লেখ নেই। একইসঙ্গে যেসব দেশে এই দিবসটি পালন করা হয়- তাতেও নেই বাংলাদেশের নাম। এমনকি বাংলাদেশের পত্রিকা ও নিউজ সাইটের আর্কাইভ খুঁজেও এ সংক্রান্ত তেমন কিছুর হদিস পাওয়া যায়না খুব একটা!

প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিনটি উদ্‌যাপন করা হয়ে থাকে।

যেভাবে শুরু আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস এর:

আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস ১৯৯৯ সালের ১৯ নভেম্বর ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোতে প্রথমবারের মতো পালিত হয়। এরপর দিবসটি জাতিসংঘের সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চাশটি দেশে ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিকভাবে পালিত হয়ে আসছে। ইউনেস্কোর উইমেন এন্ড কালচার অব পিসের পরিচালক ইনিবর্গ ব্রেইনিস বলেন, ‘এটা একটা দারুণ আইডিয়া। এটা লৈঙ্গিক ভারসাম্য আনবে।’

এর আগে ১৯৯৪ সালে প্রথমবার পুরুষ দিবস পালনের প্রস্তাব করা হয়। তবে গোড়ার ইতিহাসটা বেশ পুরনো। ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে। এই দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে।২০০২ সালে দিবসটির নামকরণ করা হয় ‘ডিফেন্ডার অফ দ্য ফাদারল্যান্ড ডে’। রাশিয়া, ইউক্রেনসহ তখনকার সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এই দিবসটি পালন করা হতো। বলা যায়, নারী দিবসের অনুরূপভাবেই দিবসটি পালিত হয়।

মুলতঃ ষাটের দশক থেকেই পুরুষ দিবস পালনের জন্য লেখালেখি চলছে। ১৯৬৮ সালে আমেরিকান সাংবাদিক জন পি হ্যারিস নিজের লেখায় এ দিবসটি পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

নব্বই দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস পালনের জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। যদিও অনুষ্ঠানগুলো খুব একটা প্রচার পায়নি। অংশগ্রহণও ছিল কম। পরবর্তী সময়ে ১৯ নভেম্বর পুরো বিশ্বে পুরুষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিভিন্ন দেশে এই দিনের উল্লেখযোগ্য আয়োজনে থাকে সেমিনার, স্কুলের শ্রেণিকক্ষে বিশেষ কার্যক্রম, রেডিও ও টিভি অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী ও মার্চ, বির্তক প্রভৃতি।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, প্রতি বছরে আলাদা আলাদা বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেমন- ২০০২ সালে শান্তি, ২০০৩ সালে পুরুষদের স্বাস্থ্য বা ২০০৯ সালে ইতিবাচক অনুকরণীয় আদর্শ। প্রতিটি দেশ নিজের স্থানীয় চাহিদার নিরিখে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করতে পারে।

নানা দেশে নানা উদ্যোগ:

আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসকে কেন্দ্র করে মভেম্বর নামের একটি দলও গড়ে উঠেছে। যেখানে গোঁফ হলো পুরুষের প্রতীক। প্রতিবছর নভেম্বর মাসে এই দলটি গোঁফ বড় রাখার ইভেন্ট পরিচালনা করে। এই সময় তারা ফান্ড সংগ্রহ করে। পুরুষের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা কার্যক্রম চালায়। তাদের সাইটের নাম মভেম্বর.কম। ২০১২ সালে গ্লোবাল জার্নালের মতে এটি পৃথিবীর শীর্ষ ১০০টি এনজিও’র একটি।

বাংলাদেশে এই দিবস পালন করা না হলেও পাশের দেশ ভারতে অনেক সংগঠনই পালন করে থাকে। সম্প্রতি এই  দিবস উপলক্ষ্যে হৃদয়া নামে একটি সংগঠন ব্যতিক্রমি কিছু দাবি তুলেছে-

দাবীগুলো নিম্নরুপ 

আইনের জালে জর্জরিত ভারতের পুরুষেরা৷ তাদের অধিকার রক্ষায় পৃথক পুরুষ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় তৈরি করতে হবে। স্ত্রী নির্যাতন, ধর্ষণ, যৌন হেনস্থার অজুহাতে পুরুষদের হাজতে যেতে হচ্ছে। এটা পুরুষ সমাজের জন্য অপমান৷

ভারতের প্রায় ৮৩ শতাংশ পুরুষ নিজ ঘরে নির্যাতনের শিকার হন৷ তাই পুরুষের অধিকার রক্ষায় শিগগিরই আইন প্রণয়ন করা উচিত৷ যে আইন ঘরে ও কর্মস্থলে পুরুষকে যাবতীয় মানসিক, অর্থনৈতিক, শারীরিক, যৌন নির্যাতন থেকে রক্ষা করবে৷

আসুন এবার সংক্ষেপে জেনে নেয়া যাক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য,

এই দিবসের উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছেঃ

পুরুষ ও বালকদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি;
নারী-পুরুষের লৈঙ্গিক সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ক প্রচারণা;
নারী-পুরুষের লৈঙ্গিক সাম্যতার প্রচার;
পুরুষদের মধ্যে ইতিবাচক আদর্শ চরিত্রের গুরুত্ব তুলে ধরা;
পুরুষ ও বালকদের নিয়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন সংস্কার ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরী;
পুরুষ ও বালকদের অর্জন ও অবদানকে উদ্‌যাপন;
সমাজ, পরিবার, বিবাহ ও শিশু যত্নের ক্ষেত্রে পুরুষ ও বালকদের অবদানকে তুলে ধরা।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)