শনিবার ● ১৫ জানুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » ইতিহাস ও ঐতিহ্য » ‘উন্নয়নের নামে খুলনার ইতিহাস-ঐতিহ্য নষ্ট করা যাবে না’
‘উন্নয়নের নামে খুলনার ইতিহাস-ঐতিহ্য নষ্ট করা যাবে না’
বিজ্ঞপ্তি : উন্নয়নের নামে খুলনার ইতিহাস-ঐতিহ্য নষ্ট করা যাবে না। একে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের অধিকারী। আড়াই হাজার বছরের অধিক সময় থেকে এদেশে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী ও শাসক শ্রেণী গড়ে তোলে বসতি, নগর, ইমারত, প্রাসাদ, দুর্গ, মসজিদ, মন্দির, বিহার, স্তূপ, সমাধি সৌধ প্রভৃতি অসংখ্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এসব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অধিকাংশই কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা ইতিমধ্যে শত বছরের ঐতিহ্য পৌরভবন, ডাকবাংলো ভবন, পোস্ট মাস্টার জেনারেলের কার্যালয় হারিয়েছি। হারাতে বসেছি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সার্কিট হাউজের নির্যাতন কেন্দ্র ,শতবর্ষী নাট্য নিকেতনটি সম্মুখে করনেশন হল ও বাংলাদেশের শিল্পকলার পথিকৃত্ শশীভূষণ পাল কর্তৃক ১৯০৪ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম অঙ্কন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যা ইতিহাস-ঐতিহ্যপ্রিয় মানুষেরা কোনোভাবেই এটা মেনে নিতে পারে না। আমারা চাই এই ইতিহাস ও ঐতিহ্যগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সমধিক হোক। তাই আমরা চাই ইতিহাসসমৃদ্ধ এই ভবনটি সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কর্তৃক সংরক্ষণ করা হোক। এভাবে বললেন জনউদ্যোগ, গুণীজন স্মৃতি পরিষদেরও চারুশিল্পী সংসদের মানববন্ধনে বক্তারা।শনিবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১ঘটিকায় জনউদ্যোগ,খুলনা ,গুণীজন স্মৃতি পরিষদ ও চারুশিল্পী সংসদের উদ্যোগে নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে দেশের প্রথম অঙ্কনশিল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘মহেশ্বরপাশা স্কুল অব আর্ট’ ভবন ও শিল্পী শশীভূষণ পালের স্মৃতি সংরক্ষণ এর দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জনউদ্যোগ, খুলনার নারী সেলের আহবায়ক এ্যাডঃ শামীমা সুলতানা শীলু ও সঞ্চালনা করেন জনউদ্যোগ খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাগরিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আফম মহসীন, কালের কন্ঠের ব্যুরো প্রধান লেখক সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দী, জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ হোসেন, সিপিবি’র মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সভাপতি মফিদুল ইসলাম ,দেলোয়ার হোসেন দিলু,বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের মহানগর সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুন্ডু, কোষাধ্যক্ষ রতন কুমার নাথ, খুলনা আর্ট স্কুলের পরিচালক বিধান চন্দ্র রায়, শিক্ষক প্রদ্যুৎ ভট্র, চিত্রশিল্পী প্রশান্ত দাস, চারুশিল্পী সংসদের সুদীপ বিশ্বাস, বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর এস এম মাহাবুবুর রহমান খোকন, ছায়বৃক্ষের মাবুবব আলম বাদশা, প্রশিকার অজয় কুমার দে, বাকের আহমেদ, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের গৌতম দে হারু, বাসদের কোহিনুর আক্তার কণা, উদ্যামীর নূরুন্নাহার লিলি,গুণীজন স্মৃতি পরিষদের সাংবাদিক ইয়াসির আরাফাত রুমি , মোরশেদ নেওয়াজ শিপলু, এ্যাডঃ আফম মুক্তাকুজ্জামান মুক্তা, কাজী বাকী উল্লাহ, এম এ সাদী, অনুপ কুমার মন্ডল, তামিম আহমেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ১৯৭৪ সালে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন ও কবি জসিমউদ্দীন এই প্রতিষ্ঠানটিকে বাংলাদেশের প্রথম অঙ্কনশিল্প শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দেন। শিল্পী এস এম সুলতান নানা সময়ে এ প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। শিল্পপ্রেমী শশীভূষণ পাল আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠার পর ১৯২০ সালে বর্ধমানের মহারাজা বিজয় চাঁদ মহারাজ বাহাদুর এ স্কুল পরিদর্শনে করেছেন। তিনি স্কুলটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। ১৯২২ সালের জুলাই মাসে এ স্কুল পরিদর্শনে আসেন তদানীন্তন বাংলার গভর্নর লর্ড লিটন। স্কুল দেখে তিনি খুব খুশি হন। গভর্নর লর্ড লিটন পরে লর্ড রোনাল্ড সে’ও খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ দেন স্কুলটি পরিদর্শন করার জন্য। অযত্ন-অবহেলায় আজও যা কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।