বৃহস্পতিবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ » ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযুক্ত কপিলমুনি কলেজের শিক্ষক সৌমিত্র পার পেয়ে যাচ্ছেন!
ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযুক্ত কপিলমুনি কলেজের শিক্ষক সৌমিত্র পার পেয়ে যাচ্ছেন!
এস ডব্লিউ; তদন্ত কমিটিতে পরিচালনা পরিষদকে না রাখায় খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি কলেজের আলোচিত শিক্ষক সৌমিত্র সাধু পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ২১ ডিসেম্বর২০২১ সালে কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের জনৈকা মেধাবী ছাত্রী তারই শ্রেণি ও কোচিং শিক্ষক পদার্থ বিজ্ঞানের সৌমিত্র সাধুর বিরুদ্ধে অধ্যক্ষ বরাবর তাকে শ্লিলতাহানীর একটি অভিযোগ করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ হাবিবুল্ল্যাহ বাহার অভিযুক্ত পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক সৌমিত্র সাধুর বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারী ৭ কার্য দিবসের সময় দিয়ে একটি শোকজ করেন। যার স্মারক নং-৮০/৩৯৩/২২। এর জবাবে অভিযুক্ত শিক্ষক সৌমিত্র সাধু ২২ জানুয়ারী শনিবার তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি মিথ্যা ও পরিকল্পিত উল্লেখ করে করেন যে, কোন ছাত্রীর সাথে তার কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ২০১২ সালে কলেজে যোগদানের পর থেকে কলেজের সুনাম ও ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকতার পাশাপাশি একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করে আসছেন। যেখানে আলাদাভাবে কাউকে পড়ানো হয়না। কলেজের সুনাম ক্ষুন্ন ও তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে কেউ উক্ত ছাত্রীর কাছ থেকে অভিযোগপত্রটি লিখিয়ে নিয়েছে বলেও দাবি তার। একই দিন সৌমিত্র সাধুর একাধিক সহকর্মী শিক্ষকরা অভিযোগকারী ছাত্রীর কাছ থেকে লিখিয়ে নেয়া একটি প্রত্যাহারপত্র জমা দেন।
প্রত্যাহারপত্রে ছাত্রী উল্লেখ করেন যে, গত ২১/১২/২১ ইং তারিখে শিক্ষক সৌমিত্র সাধুর বিরুদ্ধে অশোভন আচারণের অভিযোগ এনেছিলাম। যা শ্লীলতাহানীর সামিল। প্রত্যাহার পত্রে তিনি আরো উল্লেখ করে যে, সেদিন আবেগের বশবর্তী হয়ে অভিযোগটি করেছিলেন। আমি আমার আমার অভিযোটি প্রত্যাহার করতে চাই।
তবে গত ২১/১২/২১ ইং ঘটনার শিকার ছাত্রী শিক্ষক সৌমিত্র সাধুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন যে, ঘটনার দিন তিনি কোচিং সেন্টারে তাকে একা পেয়ে তার সাথে অশোভন আচারণ করেন। যা শ্লীলতাহানীর পর্যায়ে পড়ে। কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুল্লাহ বাহার বলেন, অভিযোগপত্রটি সম্প্রতি ডাকযোগে তার কাছে এসেছে। ঘটনায় গত ১৫ জানুয়ারী ২০২১ অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে শোকজ করেছিলেন ২১ জানুয়ারী, সৌমিত্র সাধু তার জবাব দিয়েছেন। তবে বিষয়টি পরিচালনা পরিষদে উত্থাপিত হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান ।
এদিকে ঘটনার শিকার ছাত্রীর পারিবারিক ও নিকট আত্নীয় একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র দাবি করছে, ২০ জানুয়ারী সকালে কপিলমুনি থেকে সৌমিত্র সাধুর সহকর্মীদের সমন্বয়ে একটি গ্রুপ প্রাইভেটযোগে খুলনা থেকে তার কাছ থেকে হুমকির মুখে জোরপূর্বক প্রত্যাহারপত্রটি লিখিয়ে এনেছেন। যা পরিচালনা পরিষদে সুষ্ঠু তদন্ত হলে বেরিয়ে আসবে।
এ বিষয়ে কপিলমুনি কলেজের পরিচালনা পরিষদের অভিভাবক সদস্য শেখ দীন মাহমুদ জানান, কলেজ থেকে বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদেরকে কিছুই জানানো হয়নি। এমন ঘটনায় পরিচালনা পরিষদ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন হয়ে থাকে। আর এমনটি হলে কমিটির সুষ্ঠু তদন্তে ঘটনার সত্য মিথ্যা কিংবা অন্তরালের রহস্য উন্মোচিত হবে বলে তার বিশ্বাস। এক্ষেত্রে পরিচালনা পরিষদের আগামী সভায় বিষয়টি এজেন্ডা অন্তর্ভূক্ত করতে জোর দাবি করেছেন তিনি।
এব্যাপারে কপিলমুনি কলেজের অধ্যক্ষ মো: হাবিবুল্ল্যাহ বাহার জানান, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ ঘটনায় কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।