বৃহস্পতিবার ● ২৪ নভেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » আজ আসছেন প্রধানমন্ত্রী : নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা যশোর
আজ আসছেন প্রধানমন্ত্রী : নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা যশোর
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী ও আ’লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে সমাবেশস্থল যশোরের শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে যশোর জেলা।
ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) সভাস্থল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের উপস্থিতিতে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। এ বলয়ে যুক্ত করতে আশপাশের জেলা থেকেও আনা হচ্ছে র্যাপিড বর্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যদের। মঙ্গলবার থেকেই মাঠে নামানো হয়েছে র্যাবের প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড।জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জনসভা সফল করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। এই তিন স্তরের মধ্যে সাদা পোশাকধারী পুলিশও থাকবে কড়া নজরদারির দায়িত্বে। সাদা পোশাকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে আর একটি গ্র“প। শহরের সড়কগুলোতে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত থাকবে ট্রাফিক পুলিশ। এছাড়া রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) ও আমর্ড পুলিশ ব্যটালিয়ন (এপিবিএন) থাকবে টহলের দায়িত্বে।এছাড়া র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) থাকবে নিরাপত্তার দায়িত্বে। ওয়াচ টাওয়ারের মাধ্যমে পুরো এলাকা নজরদারিতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে সন্দেহভাজনদের দেহ তল¬ াশি করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে। পুরো জনসভাস্থলই থাকবে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায়। ওই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে সব কিছু নজরদারি করা হবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত রয়েছে যশোরের সর্বস্তরের জনগণ। জেলার বিভিন্ন রাস্তায় তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ। মাইকিং, ব্যানার ও লিফলেটের সাহায্যে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন এবং জনসভাস্থলে যাচ্ছেন। স্বাভাবিকভাবেই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন এসএসএফের সদস্যরা। তবে জেলাজুড়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে যশোর জেলা পুলিশ। তাদের সাহায্য করবে গোয়েন্দা সংস্থা এবং র্যাব।
জেলা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, যশোরের ৯টি থানার পুলিশ সদস্য ছাড়াও বাইরের জেলা থেকেও আনা হচ্ছে বিপুল সংখ্যক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তার স্বার্থে জেলার বিভিন্ন গেস্ট হাউজ, আবাসিক হোটেল-মোটেল, মেস ও বাসা-বাড়ির দিকেও নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
যশোর জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইওয়ান) মশিউর রহমান জানান, ফার্স্ট, সেকেন্ড ও থার্ড এই তিন ক্যাটাগরিতে কয়েক হাজার পুলিশ ও র্যাব সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। সমাবেশ সফল ও সুন্দরভাবে করতে পুলিশ সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থায় থাকবে।
এদিকে শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে যশোর জুড়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। জনসভায় ১০ লাখ লোক সমাগমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বুধবার জনসভাস্থল পরিদর্শন করে এসব কথা বলেন আ’লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এ সময় আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আ’লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, জনসভার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যশোরসহ আশপাশের এলাকার কোনও মানুষ ঘরে থাকবে না, তারা বৃহত্তর যশোরের উন্নয়নে রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কথা শুনতে আসবে।
তিনি বলেন, এখানকার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আমরা গিয়েছি, সেখানকার মানুষ জানেন ১৪ বছর আগে যশোর ছিল একটি ক্ষতবিক্ষত জনপদ। সেই যশোরসহ আশপাশের জেলাগুলাতে এখন উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। এই এলাকার মানুষ সবসময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আ’লীগকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে।
বিএনপি’র সমাবেশের সঙ্গে আ’লীগের এই জনসভার কোনও প্রতিযোগিতা আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবো, যারা ভাইয়ের সামনে বোনকে রেপ করেছে, গাড়ির মধ্যে যারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, যারা দেশকে জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল? যারা উন্নয়নের একটি দৃষ্টান্ত দিতে পারবে না, তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা বা তুলনা করার কোনও সুযোগ আমাদের নেই।
খুলনা বিভাগের দায়িতপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, খুলনা বিভাগীয় আ’লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জনসভায় যোগদানের সকল প্রস্তুত সম্পন্ন করেছেন। বৃহস্পতিবারের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। জনসভাকে ঘিরে এই এলাকার মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, যশোর জেলা আওয়ামী লগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অবঃ) নাসির উদ্দিন, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।