শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
প্রথম পাতা » মুক্তমত » স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ইত্তেফাক একসূত্রে গাঁথা
প্রথম পাতা » মুক্তমত » স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ইত্তেফাক একসূত্রে গাঁথা
৩৮৩ বার পঠিত
রবিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ইত্তেফাক একসূত্রে গাঁথা

প্রকাশ ঘোষ বিধান =

---দৈনিক ইত্তেফাক আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে আপোসহীন ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করে এসেছে ইত্তেফাক। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পত্রিকাটি যে ভুমিকা রেখেছে তা বাঙালি আজীবন মনে রাখবে। যার ধারাবাহিকতা আজো ধরে রেখেছে ইত্তেফাক। আর এখানেই ইত্তেফাক ব্যতিক্রম।

নানা চড়াই-উৎরাই ও কণ্টকাকীর্ণ পথ পেরিয়ে ইত্তেফাক আজ গণমানুষের মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যমের এই চর্চিত সময়ে নিজেদের সম্পাদকীয় নীতি থেকে শুরু করে পত্রিকার বিন্যাস, সবকিছুতে কমিটমেন্ট ধরে রাখা এক অগ্নীপরীক্ষা। যে পরীক্ষা ইত্তেফাক নিয়মিতই দিয়ে যাচ্ছে। যার ওপর পাঠকরা নির্ভর করতে পারে। ইত্তেফাকের আরেকটি বিশেষ দিক হলো, পত্রিকাটি কোনো কিছুতেই অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করে না। ইত্তেফাক বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মূল ভরসা। বাংলাদেশের অভ্যুদয়, তার বিবর্তন ও ক্রমবিকাশের বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে ইত্তেফাকের পাতায়। তাই ইত্তেফাক প্রকৃত অর্থেই সমাজের দর্পণ। বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ‘আর্কাইভ’ ইত্তেফাক।

গণমানুষের আশা-আকাঙ্খা ও চাহিদার বহিঃপ্রকাশ সংবাদপত্রের মাধ্যমেই নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছায়। তাই সংবাদপত্রকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে ধরা হয়। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির বিকল্প নেই। গণমাধ্যম আধুনিক সমাজের একটি অপরিহার্য অংশ। প্রাচীনতম এই পত্রিকাটির সবচেয়ে বড় সাফল্য হচ্ছে যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আধুনিকায়ন। মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ, শিল্প কিংবা সংস্কৃতি, সবকিছুতেই ইত্তেফাকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার অনেক আগে থেকেই এই পত্রিকা নানা ভাবে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করছে এবং এখনো অব্যাহত রয়েছে। যা আমাদের গর্ব। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় ইত্তেফাকের বিরল অবদান অতুলনীয়। দীর্ঘ সাত দশক পেরিয়েও ইত্তেফাক গৌরবোজ্জ্বল। এ ধারা অব্যাহত থাকবে, এই প্রত্যাশা ।

দেশের তরুণ প্রজন্মকে চিন্তাশীলতা ও মননশীলতার চর্চা করতে ইত্তেফাক কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে তরুণ প্রজন্মের কাছে ইত্তেফাক আস্থা, সহনশীলতা, সাহস ও ভরসার কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। প্রত্যেক সংবাদপত্রেরই একটি নিজস্ব রাজনৈতিক দর্শন থাকে। এ সংবাদ মাধ্যমটি কখনোই কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচার করেনি। সেদিক থেকে ইত্তেফাক সব সময়ই একটি উদারপন্থী সংবাদপত্র হিসেবে তরুণ প্রজন্মের কাছে আস্থার জায়গা করে নিয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে একটি সুস্থ রাজনৈতিক দর্শন ও সঠিক ইতিহাস চর্চায় ইত্তেফাক সামনে থেকে কাজ করে গেছে। পত্রিকায় প্রাণ হচ্ছে তার সম্পাদকীয় ও উপসম্পাদকীয়। আর তরুণরাও ইত্তেফাকের পাতায় তাদের লেখা প্রকাশ করতে পারছে। এভাবে ইত্তেফাক তরুণদের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের বীজ বপণ করে দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। তরুণ সমাজকে লেখালেখির সুযোগ তৈরি করে দিয়ে ইত্তেফাক মুক্তবুদ্ধিচর্চার কান্ডারী হয়ে সাংস্কৃতিক মুক্তির আলোর মশাল জ্বালিয়ে যাচ্ছে। ইত্তেফাকের ‘নতুন প্রজন্মের ভাবনা’ পাতায় তরুণদের লেখার জন্য প্রয়াসটি নিঃসন্দেহে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এছাড়া তরুণ সাহিত্যিকদের সাহিত্য চর্চার জন্য ইত্তেফাকের পাতায় সাহিত্য নিয়মিত প্রকাশ হচ্ছে কবিতা, গল্প কিংবা সাহিত্য সমালোচনা। এ ভিন্নধর্মী পরিবেশনার কারণে বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে ইত্তেফাক এক বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।  এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ও ইত্তেফাকের অগ্রযাত্রা একই সূত্রে গাঁথা। তরুণ প্রজন্ম চিন্তাশীলতা ও মননশীলতার চর্চায় ইত্তেফাকের সেই শিকড়ের ইতিহাস খুজে তোলে। তরুণ প্রজন্ম এই ইতিহাস সংরক্ষণ করতে চায়। আর ইত্তেফাকের এ বিরল অবদানের জন্য স্বাধিনতা পদক পাওয়ার দাবিদার।

পিছে ফিরে দেখা ইত্তেফাক। ভাষা আন্দোলনের পর থেকে এ দেশে সংবাদপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে ওঠে, পূর্ব বাংলার মানুষ বুঝতে পারে পশ্চিম পাকিস্তানিরা এই ভূখন্ডকে তাদের শোষণ-ভূমি হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। বাংলার মানুষ তখন নিজের সংস্কৃতি, ভাষা অতীত ঐতিহ্য ইত্যাদির দিকে চোখ ফেরায়। আর এ কাজে রাজনীতি, সংস্কৃতির পাশাপাশি ইত্তেফাক হয়ে ওঠে আন্দোলনের হাতিয়ার।

১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের বিরোধী সংগঠন হিসাবে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিমলীগ গঠিত হয়। সে বছরই নবগঠিত সংগঠনের মুখপত্ররূপে ‘সাপ্তাহিক ইত্তেফাক’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। কলকাতা প্রত্যাগত তফাজ্জল হোসেন সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকার সাথে যুক্ত হন এবং ১৯৫১ সালের ১৪ আগস্ট থেকে পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুসলিমলীগের ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের বিরাজমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এবং স্বাধীনতা-উত্তর প্রথম সাধারণ নির্বাচনের প্রাক্কালে তফাজ্জল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় ও মওলানা ভাসানীর পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৫৩ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইত্তেফাককে দৈনিক পত্রিকা হিসাবে প্রকাশ করেন। তফাজ্জল হোসেন এই পত্রিকার সম্পাদক। ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন মুসলিমলীগ সরকারের যে ভরাডুবি হয় এর পেছনে ছিল দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার শক্তিশালী রিপোর্ট ও মানিক মিয়ার ক্ষুরধার লেখনী।

সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে আপসহীনভাবে সত্য প্রকাশ করে গেছে। একসময় তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের স্বৈর সামরিক শাসক দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। বাঙালির অধিকার রক্ষায় পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়াকে বারবার কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়। সে সময় পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আপস করলে মানিক মিয়া ইত্তেফাক প্রকাশনা অব্যাহত রাখতে পারতেন। কিন্তু তিনি সংবাদপত্রের প্রতি দেশের জনগণের যে বিশ্বাস তা ভঙ্গ করেননি। তিন বছর পত্রিকা প্রকাশ বন্ধ রেখেছিলেন। পত্রিকার সাংবাদিকেরাও অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করেছিলেন, কিন্তু কেউই মাথা নোয়াননি। মানিক মিয়া আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে সামরিক জান্তা ও স্বৈরাচার শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নির্ভীক সাংবাদিকতার যে উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন, তা পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত।

শুধু তাই নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধে ২৫ মার্চ রাতে দৈনিক ইত্তেফাক ভবন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি সামরিক জান্তা অন্যান্য স্থাপনার সঙ্গে দৈনকি ইত্তেফাককেও নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিল, কিন্তু মানুষের ভালোবাসায় বারবার প্রবল প্রতাপে ফিরে এসেছে দৈনিক ইত্তেফাক।

মূলত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মানিক মিয়া ও তাঁর ইত্তেফাক এক হয়ে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনকে পরিণতির পথে নিয়ে গিয়েছিলেন। তারই পথ ধরে মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। সে কারণে এটাও অনস্বীকার্য যে, দৈনিক ইত্তেফাক আর এই সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ছিলেন সমার্থক। বস্তুত তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি অনমনীয় অবস্থান ও ক্ষুরধার লেখনী দৈনিক ইত্তেফাকের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। নীতির প্রশ্নে, বাংলার মানুষের অধিকারের বিষয়ে তিনি কখনো আপস করেননি। দৈনিক ইত্তেফাক ছিল তার সেই সংগ্রামী জীবনের প্রধান হাতিয়ার। গণমুখী সাংবাদিকতার পথিকৃত এই ব্যক্তিত্ব দেশের সাংবাদিকতাকে এক টানে বদলে দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন তো বটেই, সেই ১৯৫৪ সাল থেকেই দৈনিক ইত্তেফাক বাংলাদেশের মানুষের পক্ষে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে জনগণকে সচেতন করতে সচেষ্ট থেকেছে। এরপর ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলন সবকিছুতেই দৈনিক ইত্তেফাক সাংবাদিকতাকে অবলম্বন করে রাজনীতির পথনির্দেশ করেছে। মানুষের প্রত্যাশা, বেদনাকে জোরালোভাবে তুলে ধরার এক আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল তার। দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাংবাদিকতাকে অবলম্বন করে জীবনব্যাপী তিনি এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রাজনৈতিক ধোঁকাবজি, রাজনৈতিক মঞ্চ আর রঙ্গমঞ্চ শিরোনামে কলাম লিখে বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতাকামী করে তোলেন মানিক মিয়া। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের কথা সহজ ভাষায় তিনি মানুষের সামনে তুলে ধরেন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি ইত্তেফাকের রাজনৈতিক হালচাল ও পরবর্তী সময়ে মোসাফির ছদ্মনামে নিয়মিত উপসম্পাদকীয় লিখতেন।

১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামীলীগ ছয় দফা কর্মসূচির ভিত্তিতে পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দাবি করে। দৈনিক মর্নিং নিউজ, দৈনিক পাকিস্তান ও দৈনিক আজাদ ছয় দফার বিরোধিতা করে। দৈনিক ইত্তেফাক ছয় দফার পক্ষে অবস্থান শুধু নয়, অন্যতম প্রচারকের ভূমিকা পালন করে। ১৬ জুন ১৯৬৬ ইত্তেফাকের সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন গ্রেফতার হন এবং পরদিন পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এমনকি নিউ নেশন প্রেসও বন্ধ করে দেয়। প্রায় ১০ মাস পর ১৯৬৭ সালের ২৯ মার্চ মানিক মিয়া মুক্তি পান। এ সময় দৈনিক ইত্তেফাক প্রকাশ করার জন্য সম্পাদকের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু সম্পাদক সাফ জানিয়ে দেন, ‘ইত্তেফাক যদি তার ঐতিহ্য অনুসরণ করে প্রকাশিত হতে না পারে, তবে তিনি সেই ইত্তেফাক প্রকাশে আগ্রহী নন। অবশেষে প্রেস মুক্ত হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি ইত্তেফাক পুনর্জন্ম লাভ করে। ১৯৬৯ সালে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া আকস্মিকভাবে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুর পর ইত্তেফাক প্রকাশনা অব্যাহত থাকে এবং বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ও স্বাধীনতা আন্দোলনে সরাসরি সমর্থন দেয় এবং সম্পাদকীয়, সচিত্র প্রতিবেদন, ফিচার প্রকাশ করে নানাভাবে সমর্থন দেয়, গড়ে ওঠে জনমত। বিশেষ করে ১৯৭০ সালের নির্বাচন, আওয়ামীলীগের বিপুল বিজয়, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে পাকিস্তানিদের অনীহা ও ষড়যন্ত্র এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ও সর্বাত্মক অসহযোগের আহ্বান থেকে ২৫ মার্চ রাতে আক্রান্ত হওয়া এই পুরোটা সময় দৈনিক ইত্তেফাক অনন্যসাধারণ ও গৌরবময় ভূমিকা পালন করে।

মুক্তিযুদ্ধের পরে নতুন বাস্তবতায় দৈনিক ইত্তেফাক নতুন আঙ্গিকে প্রকাশিত হতে থাকে। রাজনৈতিক মুখপত্রের বলয় থেকে বেরিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকতা অগ্রসর হতে থাকে। সময়ের দাবি মেটাতে ইত্তেফাকের বিন্যাসে অনেক পরিবর্তন এসেছে; কিন্তু সত্য, ন্যায়, গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশের মানুষের অধিকারের প্রশ্নে ইত্তেফাকের অবস্থান প্রতিষ্ঠার পর থেকে কখনো বদলায়নি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া এই দায়ভার বহন করে যাবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে যে কয়েকটি সংবাদপত্র এদেশের আপামর জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে দেশবাসীর অকুণ্ঠ সমর্থন ও সীমাহীন ভালোবাসা অর্জন করেছে তাদের মধ্যে দৈনিক ইত্তেফাক অন্যতম। নানাবিধ কণ্টকাকীর্ণ পথ পাড়ি দিয়ে দৈনিক ইত্তেফাক ৭০ বছরে পদার্পণ করে স-গৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

লেখকঃ সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)