শুক্রবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
প্রথম পাতা » বিশেষ সংবাদ » পাইকগাছায় বইমেলা হতাশ করেছে বইপ্রেমীদের
পাইকগাছায় বইমেলা হতাশ করেছে বইপ্রেমীদের
পাইকগাছায় বই মেলা শুরুতে উদ্দিপনা সৃস্টি করলেও বইহিন হয়ে পড়া বই মেলা পাঠকদের হতাশ করেছে। বই ছাড়া নামেই যেন বই মেলা। বই মেলায় ১৫টি স্টল স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে বইয়ের স্টল মাত্র দুইটি। পদক্ষেপ ও রাজু বুক হাউজ। প্রথম কয়েক দিন তারা বই নিয়ে স্টলে বসলেও পরে তাদের নিয়মিত বইয়ের স্টলে দেখা যায় না। এতে বই মেলা বই শূন্য হয়ে পড়ে। তবে মেলা শেষে ১ মার্চ র্যাফল ড্র অনুস্ঠিত হবে।আগ্রহটা বেশী যেন র্যাফল ড্র য়েতে, আর এ কারণে বইমেলা নিয়ে তেমন কোন সাড়া নেই।
বইমেলা বাঙালির সার্বজনীন উৎসব। লেখক-পাঠককের এই মিলনকেন্দ্রে। একটি জাতিগোষ্ঠীর সভ্যতা বিনির্মাণ ও জ্ঞানগত উন্নয়নে বই মেলা ব্যাপক ভূমিকা রাখে। সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, কবিতা, গবেষণা জার্নালসহ বিষয়ভিত্তিক বইয়ের বিপুল সমাহার পাঠকদের সামনে তুলে ধরে জ্ঞানের বিস্তৃত জগৎকে। তাই তো বইপ্রেমিকরা বছরের পুরো সময়টুকু অপেক্ষা করে প্রাণের এ মেলার জন্য। পৃথিবীতে যত মেলা হতে পারে তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর মেলা হচ্ছে বইমেলা। আর পৃথিবীতে যত বইমেলা আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে মধুর হচ্ছে আমাদের ফেব্রুয়ারীর বইমেলা।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিন ব্যাপি এ বই মেলার আয়োজন করেছে পৌরসভা ও অরণ্য পাইকগাছা নামে একটি সামাজিক সংগঠন। পৌরসভা মাঠেই প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এ বই মেলা চলে। মেলায় ১৫টির মত স্টল স্থান পেয়েছে। পোশাক, ইলেকট্রিক সামগ্রী, খেলাধুলা সামগ্রী, বেত শিল্পের পণ্য, রকমারী ফুল ও খাবার সহ বিভিন্ন প্রশাধনী এবং পণ্যর স্টল মেলায় বসেছে।আর আছে নাম মাত্র দুইটি বইযের স্টল।মেলা ঘুরে গত বুধবার এমনটা দেখতে পাওয়া যায়।
মেলায় আগত স্থানীয় কবি পঞ্চানন সরকার বলেন, বইমেলায় বইয়ের স্টল খুব কম। বইয়ের স্টল বেশী খাকলে ভালো লাগত। স্থানীয় কবি সাহিত্যিক ও সাহিত্য সংগঠণের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করে বইমেলা করলে মনে হয় বইমেলা সুন্দর হতো। আগামিতে বইপ্রেমি এমন সকলে নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে বই মেলা করার দাবি করেন। মেলায় ঘুরতে আসা বিশিস্ট ছড়াকার অ্যাড.শফিকুল ইসলাম কচি বলেন, অনেক দিন পর পাইকগাছায় বইমেলা হচ্ছে জেনে বইমেলায় এসে হতাশ হয়েছি। বইমেলায় বইয়ের স্টল দুই একটি অছে, আর বইয়ের স্টলে ঠিকমত বই নিয়ে বসতে দেখা যায কম। আর এতে মনে হচ্ছে বই ছাড়া বই মেলা। আর ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে বইমেলা করলে ভালো হয়। উপজেলা পর্যায় ১৩ দিন বইমেলা আয়োজন করা বেশ কস্টকর ও ব্যায়বহুল। তবে মেলার পরিবেশ বেশ সুন্দর লেগেছে।
আয়োজক কমিটির প্যানেল মেয়র শেখ মাহাবুবর রহমান রনজু জানান,বইয়ের দোকানগুলোরে মালিকদের বইমেলার স্টলে বই নিয়ে বসতে বারবার অনুরোধ করলেও তারা আসেনি। আগামিতে সবার সাথে আলোচনা করে বইমেলা সুন্দর করার চেন্টা করা হবে। মেলায় আশা দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য প্রতিদিন সন্ধ্যায় বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।এবিষয়ে পৈৗর মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, আগামী এক মার্চ র্যাফল ড্র হবে।বইমেলায় বইয়ের স্টলে এতো কম কেন জানতে চাহিলে তিনি বলেন, বই এখন তেমন কেউ পড়তে চায় না। যেন আগ্রহটা কম, আগামীতে বইয়ের স্টল বাড়ানোর চেস্টা করা হবে।
বাঙালির প্রাণের অমর একুশে বইমেলা। মানুষকে বইমুখী করে তোলার বহুমুখী প্রচেষ্টার মধ্যে বইমেলা গুরুত্ব ভূমিকা রাখে। অমর একুশে বইমেলা এখন বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অংশ। পৃথিবীর কোথাও এক মাসব্যাপী বইমেলা হয় না, বাংলাদেশে হয়। এটা একটা ব্যতিক্রম ঘটনা। পাইকগাছার লেখক, সাহিত্যিক ও বইপ্রেমীরা আগামীতে ভালো বইমেলা যেন হয় তার প্রত্যাশা করেছে।