বৃহস্পতিবার ● ৩১ মার্চ ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থনীতি » বনদস্যুর তৎপরাতায় সুন্দরবনের কাঁকড়া আহরণকারীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে
বনদস্যুর তৎপরাতায় সুন্দরবনের কাঁকড়া আহরণকারীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে
এস ডব্লিউ নিউজ ঃ সুন্দরবনের বনদস্যু বাহীনির তৎপরাতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি মৌসুমে সুন্দবনের কাঁকড়া আহরনকারী জেলেদের সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ফলে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সুন্দরবন বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যামগ্রোভ বনাঞ্চল। সুন্দরবন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পদের এক বিশাল আধার। সুন্দরবনের সম্পদ কাঁকড়া আহরহরন কারীরা বনদস্যুদের অত্যাচার,চাঁদা, মুক্তিপণ, ও মৃত্যুভয়ে কাঁকাড়া আহরনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এ কারনে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল পেশা জীবিদের জীবিকা নির্বাহ মারাক্তক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বন সংশিষ্ট ও জেলে সুত্রে জানা গেছে মে মাস থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত কাঁকড়া আহরনের উপযুক্ত মৌসুম। এ সময় খুলনার দক্ষিন অঞ্চল পাইকগাছা, কয়রা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, আশাশনি ও শ্যামনগর সহ উপকুল এলাকা থেকে প্রায় ৪-৫ হাজার জেলে সুন্দরবনের বিভিন্ন স্টেশন থেকে পাস পারমটি গ্রহন করে। পরবর্তিতে সুন্দবনের গভীরে প্রবেশ করে বিভিন্ন নদী খাল, মোহনায় রশি, গুন ও বিরশি ফেলে কাঁকড়া আহরণ করে। কাঁকড়া ধরার উত্তম পদ্ধত্তি হিসাবে বরশি বা রশির সাথে কুচে মাছ বা শুকনা মাংশের টুকরা গেথে দেওয়া হয়। মাংশের টুকরা কাঁকড়া এসে ধরলে রশি টেনে জাল দিয়ে উপরে তোলা হয়। কিন্তু চলতি মৌসুমে কাঁকড়া আহরনকারী জেলেদের অভিযোগ সুন্দবনে বনদস্যুদের তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৭/৮ টি দস্যু বাহীনিকে নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। তার পরও জেলেদের আপহরন করে মুক্তিপন চাওয়া হয়। মুক্তিপণ দিতে না পরলে জীবনে মেরে ফেলে তারা। সুন্দবনের বনদস্যুদের তৎপরাতা বৃদ্ধিতে জেলেরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় কাঁকড়া ধরতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে বিশ্বে চার শতাধিক প্রজাতির কাঁকড়া আছে এর মধ্যে বাংলাদেশে ৭ প্রজাতির কাঁকাড়া পাওয়া যায়। ১৯৯৭ সাল থেকে বাংলাদেশের কাঁকড়া বিদেশে রপ্তানী শুরু হয়। বাংলাদেশের কাঁকড়া সুস্বাদু ও বড় হওয়ায় জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, হংকং, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিদেশে কাঁকড়া রপ্তানী হওয়ায় দেশে কাঁকড়ার মুল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলেদের আহরিত কাঁকড়া প্রকার ভেদে প্রতি কেজি ২০০ টাকা থেকে ১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত, কখনও দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়। সরকার প্রতিবছর এ খাত থেকে কয়েকশ কোটি বৈদাশিক মুদ্রা অর্জন করে। চলতি মৌসুমে সুন্দবনে বনদস্যুদের তৎপরাতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁকড়া আহরনকারীর সংখ্যা কমে গেছে। ফলে বিগত বছরের তুলনায় এবছর কাঁকড়া আহরণ আনেক অংশে হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের বন কর্মকর্তা জহুরুল হক জানান সুন্দবনের মৎস আহরণকারী ও বনজীবিদের নিরাপত্তার জন্য বনকর্মী, কোস্টগার্ড, র্যাব ও আইনশৃংখলা রক্ষাবাহীনির অভিযান আব্যহ রয়েছে। এদিকে সংশিষ্ট ভুক্তভোগি মহলের অভিমত কাঁকড়া শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সুন্দবনের জেলেদের নিরাপত্তা প্রদানে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় সহযোগীতা একান্ত কাম্য।