বৃহস্পতিবার ● ১ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » আগুনের পিন্ড ফায়ার বল
আগুনের পিন্ড ফায়ার বল
বল লিলি, মে লিলি, মে ফ্লাওয়ার। নানা নাম তার। মে ফ্লাওয়ারের আদি নিবাস আফ্রিকা। গোলাকার দেখতে হওয়ায় ফুলটিকে ফুটবল লিলিও বলা হয়। একই কারণে বলা হয় গ্লোব লিলি। পাউডার পাফ লিলি, আফ্রিকান ব্লাড লিলি নামেও পরিচিত। সবসময় দেখা মেলে না তার। শুধু মাত্র মে মাসেই আসে আগুনের সৌন্দর্য নিয়ে। মূলত এই কারনের এই লিলির নাম মে লিলি বা ফায়ার বল। ফায়ার বল নামটার পিছনেও একটা কারন- এই দেখতে আগুনের গোলার মতোই। মনে হয় ছোট্ট একটা আগুনের পিন্ড। আগুনের পিন্ড বললেও দেখতে কিন্তু ভারি মিষ্টি।
মে ফ্লাওয়ার কন্দজাতীয় ফুল গাছ। গ্রীষ্মের আগমনে মাটি ভেদ করে ফুলের ডাঁটা বের হয়, ফুলের কলি জন্মে আর মে মাসের শুরু থেকেই উজ্জ্বল লাল রঙের মাঝে হলুদ-সাদা আভার মিশ্রণে গোলাকার বল আকৃতির ফুল ফোটে। গড়নের দিক থেকে কদম ফুলের মতো। তবে আকারে আরও বড়। ফুল গন্ধহীন। ফুটন্ত ফুল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। যে কারও মন জয় করতে পারে। পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান। ফুল শেষে গাছে ফল ধরে। ফল গোলাকার থেকে লম্বা। রং গাঢ়-ধূসর ও শক্ত। এর অপর একটি প্রজাতির সাদা রঙের ফুল ফোটে। তবে সাদা রঙের ফুল সচরাচর আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে দেখা যায় না। ফুলের ডাঁটা ও গাছের গড় উচ্চতা প্রায় ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। ছোট গাছ দেখতে অনেকটা ছাতার মতো। ফুলের ডাঁটা গোলাকার, ডাঁটা ও গাছের পাতার রং সবুজ, রসাল এবং নরম প্রকৃতির হয়।
কোন ফুল তার গন্ধ ছড়িয়ে আমাদের মন জয় করে আবার কোন ফুল তার সৌন্দর্য্য দিয়ে আমাদের মন জয় করে । তেমনি একটি নির্গন্ধি ফুল তার সৌন্দর্য্য দিয়ে আমাদের চোখে স্বস্তি এনে দেয় ও সেই সাথে নিঃসন্দেহে নজর কেড়ে নেয়, যার নাম ‘মে ফ্লাওয়ার’। সারা বছর টবে এই গাছের অস্তিত্ত্ব টের পাওয়া যায়না । কিন্তু মার্চ শেষ হতেই নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়ায় এই গাছ। এপ্রিলে গাছে যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। পাতা আর কলির দেখা মেলে এই সময়।আর মে মাসের শুরুতেই ফুটে যায় ফুল। পুরো মে মাস জুড়ে ছড়িয়ে থাকে এর মুগ্ধতা। আবার মাস শেষ হলে নিস্তেজ হয়ে যায় ধীরে ধীরে। ফুলের দিকে তাকিয়ে বোঝা হয়ে যায় মে মাস এখন।
এর ফুল, পাতা এবং বাল্ব সবই বিষাক্ত, তবে কম মাত্রায়। যেসব ছাগল বা ভেড়া এর পাতা খায় তাদের শরীরে কিন্তু বিষক্রিয়া হয়। আফ্রিকাতে এইবৃক্ষটির কস বা রস ‘অ্যারো-পয়জন’ শিকারের তীরের মধ্যে এর কস ব্যবহার এবং মাছ ধরতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ‘ফিসিং-পয়জন’ অর্থাৎ মাছ শিকারের এর ব্যবহার হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহ্যবাহী ওষুধেও এ বৃক্ষটি ব্যবহার করা হয়। বাড়িতে বাচ্ছা এবং পোষ্য থাকলে সাবধানে রাখা বাঞ্ছনীয়।