শিরোনাম:
পাইকগাছা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ২২ জুন ২০২৩
প্রথম পাতা » ব্যবসা-বাণিজ্য » কামারপাড়া হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখর
প্রথম পাতা » ব্যবসা-বাণিজ্য » কামারপাড়া হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখর
২৯১ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২২ জুন ২০২৩
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কামারপাড়া হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখর

---  প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা ঃ কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে হাতুড়ির টুং টাং শব্দে মুখরিত হয় উটেছে পাইকগাছার কামারপাড়া। চললে হাঁপর, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। কর্মব্যস্ত সময় পার করছে কামার শিল্পীরা। সারাদিন তপ্ত লোহা ও ইস্পাত গলিয়ে চলছে, দা, চাপাতি, বটি, ছুরি তৈরির কাজ। কাঁকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মকান্ড। মূল কারিগরের সাথে একজন ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরাঙ্গা লোহার দন্ড। কেউ পোড়া দা ও ছুরিতে দিচ্ছেন শান। ম্যাশিনের সাহায্যে কেউবা হাঁপর টেনে বাতাস দিচ্ছেন। দিন-রাত সমান তালে লোহার টুং-টাং শব্দ আর হাফরের ফুঁসফাঁস শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে উপজেলার প্রতিটি কামারশালা। হারিয়ে যেতে বসা বাংলার প্রাচীন কামারশিল্প যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।

আর  কয়েক দিন পর ঈদুল-আযহা। উপজেলা পৌর সদর, নতুন বাজার, গদাইপুর, আগড়ঘাটা, কপিলমুনি বাঁকা, চাঁদখালী, কাটিপাড়া, বোয়ালিয়ার মোড়সহ বিভিন্ন হাট বাজার এবং কামার শালায় কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের ছোরা, চাপাতি, চাকু, দা, বটি, কুড়াল সহ বিভিন্ন সরজ্ঞাম তৈরি করছে কামাররা। সারা বছর টুক-টাক কাজ থাকলেও কুরবানির ঈদের সময় কামার শিল্প মুখরিত হয়ে ওঠে।বোয়ালিয়ার মোড়ে কামারের দোকানে দুই তিনজন কারিগর কাজ করছে।তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ সময় দোকানে পুরাতন ও নতুন ধারালো অস্ত্র বানানো ও মেরামত করার ভীড় শুরু হয়। ঈদের আগের দিন র্পযন্ত এই ব্যস্ততা থাকে। বর্তমানে আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে কামার শিল্পে। বৈদ্যুতিক সান দিয়ে বিভিন্ন সরঞ্জাম সান দেওয়া হয় ও হাফর বা জাতা দিয়ে বাতাস দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে মটর।---

উপজলার গদাইপুর গ্রামের সন্তোস কর্মকার, রজ্ঞন কর্মকার, আগড়ঘাটার বিশ্ব কর্মকার জানান, কোরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর দা, ছুরি, চাপাতিসহ কোরবানি বিভিন্ন উপকরণ তৈরি ও মেরামত করেন। বোয়ালিয়া মোড়ে অবস্থিত কামারশালার শিল্পী বিমল র্কমকার ও সুপম কর্মকার বলেন, লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে গেছে। সাধারণ লোহা ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা ও গাড়ীর পাতি ৮০ টাকা দরে প্রতি কেজি ক্রয় করতে হয়। পশু জবাই করার ছোট-বড় বিভিন্ন সরজ্ঞাম সাইজের উপর দাম নির্ভর করে। গদাইপুরের সন্তোষ কর্মকার বলেন, অর্ডার দিয়ে তৈরী করা নতুন চাপাতি তৈরীর মুজুরী ৫শ টাকা থেকে ৭শ টাকা, জবাই করা ছোরা ৩শ টাকা। আর তৈরী করা ছোট চাপাতি ৫শত টাকা, বড় চাপাতি ৭ শত থেকে ৮ শত, বড় ছোরা ৩ শত থেকে সাড়ে ৩ শতটাকা, চাকু ৫০ টাকা থেকে দেড় শত টাকা, বটি আড়াই শত থেকে ৩ শত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

হরি গোপাল কর্মকার জানান, এই পেশায় আমরা খুব অবহেলিত। বর্তমান দ্রব্যমূল্য বেশী হলেও সেই অনুযায়ী দাম পাই না। ফলে সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। সারা বছর তেমন কাজ না থাকায় অনেকেই বাধ্য হয়ে পৈতৃক এই পেশা পরিবর্তন করছে বলে জানান।উপজেলার বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায়, দা, ছুরি, চাপাতি, চাকু ও বটির বেচাকেনা বেড়েছে। পৌর বাজারে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল কালাম  জানান, অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বটির দাম একটু বেশি। কোরবানি ঈদের কয়েক দিন বাকি। তাই আগেই পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার জন্য এসেছি।

লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি।কামার শিল্পীদের ---আশা, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)