রবিবার ● ৮ মার্চ ২০১৫
প্রথম পাতা » নারী ও শিশু » নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক
প্রকাশ ঘোষ বিধান : বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, নারীও এগিয়ে চলেছে। নারীর নিজস্ব মেধা, যোগ্যতা এবং দতা এই এগিয়ে যাওয়ার পিছনে সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করছে। সভ্যতা বিকশিত হচ্ছে। ক্রমাগত সমাজের অবকাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে। পরিবর্তনের হাওয়া মানুষের জীবন যাত্রার মান পাল্টে দিচ্ছে। সভ্যতার আলোয় সমাজে অনেক কিছু আলোকিত হচ্ছে কিন্তু নারীর প্রতি জিঘাংসামূলক মানসিকতার পরির্বতন হচ্ছে না।
১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ যুক্ত রাষ্ট্রের নিউওয়ার্কে একটি সুচ কারখানায় নারী শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। নারী শ্রমিকরা দৈনিক ১২ ঘন্টা শ্রম থেকে ৮ ঘন্টায় আনা, নায্য মজুরি এবং কর্মেেত্র সুস্থ্য ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবীতে স্বোচ্চার হয়েছিল। এ আন্দোলন করায় অমানষিক নির্যাতনের স্বীকার ও নারী শ্রমিকরা গ্রেফতার হয়। এরপর নারীারা সংঘটিত এবং ১৮৬০ সালের ৮ মার্চ “নারী শ্রমিক ইউনিয়ন” গঠন করা হয়। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্র শিল্প কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারী শ্রমিক একই দ াবীতে আন্দোলন শুরু করে। এ আন্দোলন আরো দুর্বার এবং বেগবান হয়। কর্তৃপরে নির্যাতনের ভয়াবহ মাত্রায় পৌছায়। অবশেষে দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করার দাবী পূরণ হয়। ১৯১০ সালের ৮ মার্চ ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে আন্তজার্তিক সমাজ তান্ত্রিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জার্মানের নারী নেত্রী কারা জেটকিন সম্মেলন থেকে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে ঘোষনা করে। সারা বিশ্বে নারীরা ৮ মার্চকে মর্যদার সাথে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। এরপর জাতিসংঘ ১৯৭৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে ৮ মার্চকে স্বীকৃতি দেয়। সারা বিশ্বে যথাযোগ্য মর্যদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে।
আধুনিক বিশ্ব ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে তবে নারীর চলার পদ নিরাপদ হচ্ছে না। আমাদের সমাজের চারপাশে নারী নির্যাতনের ভয়াবহ ঘটনা দৃশ্যমান। নারী নির্যাতন থামছে না। কোন েেত্র নারী নির্যাতনের মত জঘন্য আচারনের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঘরে, বাইরে, এমনকি সমাজের সব শ্রেণির মধ্যে পরিলতি হয়। নারীর মতায়ন বেড়েছে। তারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। তাদের মেধা, যোগ্যতা ও দতার প্রমাণ রাখছে স্বদর্পে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র-সবখানে নারীর অবদান রয়েছে। বর্তমান বিশ্বের প্রতিটি েেত্র নারীর অবদান অনস্বীকার্য। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। নিরাপত্তা, শান্তি ও অধিকারের বিচারে নারী এখনও পুরুষের সমক নয়। আইয়্যামে জাহেলিয়াত যুগ পিছে ফেলে বিশ্ব এখন অনেক এগিয়েছে। মানুষের মধ্যে মানবিকতা বোধ এখন অনেক বেশি মজবুত হচ্ছে। মানুষ সচেতন হচ্ছে। মানুষের অধিকার রায় বিশ্বজুড়ে নানা ধরনের সংগঠন রয়েছে। তারা নারীর মতায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বেড়েছে নারীর মতায়ন, কিন্তু নারী নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। আজও নারী নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। নারী বলে তাদের অধিনস্থতা, পরমুখাপেতিা. দারিদ্র, অপুষ্টি, অশিা, বেকার সমস্যা সহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। নারীকে পদে পদে নানা ভয়াবহ বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে। আর তার সঙ্গে বাড়ছে নির্যাতনের নানামুখী ভয়াবহতাও।
বিশ্বব্যাপী নারীর অবস্থা আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। আজ নারী অনেক স্বাধীন, অনেক স্বাবলম্বী ও পরাধীনতার শৃঙ্খল মুক্ত। নারী নিজের প্রতি আস্থাশীল হয়ে উঠেছে। নিজেকে যোগ্য করে তুলেছে। পরিবার ও সমাজের বাধা এবং সমালোচনাকে উপো করে নারী এগিয়ে যাওয়ার মানসিক দৃঢ়তা অর্জন করেছে। নারী প্রবাসে যাচ্ছে। বিদেশে প্রোপটে কোন নারীর জন্যে কাজ করতে যাওয়অ সহজ বিষয় নয়। তবু দিন দিন এর হার বাড়ছে। সব ধরনের বাধার মুখে এটি নারীর বিজয়। দেশে-বিদেশে মতার প্রায় সর্বস্তরে নারীর সরব পদচারনা রয়েছে। তবু সমাজের কিছু বিকৃত মানুসিকতার পুরুষ এবং বিশেষ েেত্র নারীর দ্বারা নারী নির্যাতনের স্বীকারের ঘটনা ঘটছে। নারীর উন্নয়নে গৃহ থেকে নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এর জন্য নারীকে শিতি হতে হবে। শিা অর্জন হচ্ছে নারীর জন্য সব চেয়ে বড় শক্তি। নারী শিতি হলে সে তার অধিকারে সচেতন থাকবে। নারী উন্নয়নে বিশেষ দিবস এবং শুধু আইন প্রনয়ণ করলেই সমাজ থেকে এই ভয়াবহ ব্যাধি নির্মূল করা সহজ হবে না। সর্বগ্রে পুরুষের মানসিকতার পরবির্তন বড় প্রয়োজন। পুরুষ যে অন্যায় করছে-এটা তাদের উপলব্ধিতে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তবে সকল উদ্যোগে পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। তাছাড়া নারীর প্রতি সমাজের প্রতিটি েেত্র সম্মান, মর্যদা, মমত্ব এবং গুরুত্ববোধ জাগিয়ে তুলতে সচেষ্টা অব্যহত রাখতে হবে। ঘর থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা সব েেত্র নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা সরকারি পদপে বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।