বুধবার ● ১৫ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » বিশেষ সংবাদ » যাতায়াতে বাঁশের চরাট ! বিপাকে ৬ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ
যাতায়াতে বাঁশের চরাট ! বিপাকে ৬ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ
শাহীন আলম তুহিন,মাগুরা থেকে : মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার চরচৌগাছি গ্রামে একটি সেতু না থাকায় বিপাকে পড়েছে ৬ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ । স্থানীয়রা নিজেদের উদ্যোগে খাল সংলগ্ন এলাকায় একটি বাঁশের চরাট তৈরি করে নিয়মিত পার হলেন । এ বাঁশের চরাট দিয়ে প্রতিদিন পার হচ্ছে ৬ গ্রামের স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীরা ,ভ্যান ও মোটর সাইকেল । এ তাছাড়া খালের পাশ্ববর্তী মাঠে বিভিন্ন ফসলের মৌসুমে ফসল নিয়ে বিপাকে পড়ছেন হাজারো কৃষক । মৌসুমে ফসল বিশেষ করে ধান,পাট,মুশুরি,কলই,গম কেটে কৃষকরা মাথায় বাঁেশর চরাট দিয়ে পার হচ্ছেন নিয়মিত ।
চরচৌগাছি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা রস্তম আলী বলেন,স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বাশেঁর চরাট দিয়ে পার হচ্ছে রাজাপুর,টিকারবিলা,দূগাপুর,কোদলা,ঘাসিয়ারা ও চরচৌগাছি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ । আমলসার ও চরচৌগাছির মধ্যে ২ কিলোমিটারের মধ্যে কোন ব্রীজ না থাকার কারণে এ বাঁশের চরাট পারাপারের একমাত্র অবলম্বন । আমি নিজ উদ্যোগে গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে এ খালে প্রথম বাঁশের চরাট তৈরি করি । এ বাঁশের চরাট নিয়ে সাধারণ মানুষ,ভ্যান,সাইকেল,মোটর সাইকেল নিয়মিত পার হচ্ছে । ৩-৪ মাসের মধ্যে এ বাঁশের চরাটটি ভেঙ্গে যায় । আবার পুনরায় আমি মেরামত করি । এ বাঁশের চরাট তৈরিতে অনেক সময় কেউ কোন সহযোগিতা করে না । তাই আমি আমার মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দিয়ে তা মেরামত করি । ইতিমধ্যে এখানে একটি সেতু তৈরি করতে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ স্থানীয় চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছি । কিন্তু এখানো কোন সমাধান পায়নি ।
চরচৌগাছি গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন,আমাদের খালে একটি সেতু না থাকাতে আমরা বিপাকে আছি । মাঠের ফসল তুলতে আমাদের প্রচন্ড বেগ পেতে হচ্ছে । মাঠ থেকে ধান কেটে মাথায় নিয়ে বাঁশের চরাট পার হয়ে আমাদের মুল রাস্তায় আসতে খুবই কষ্ট হয় । তারপর গাড়িতে ফসল লোড করতে হচ্ছে । এ অবস্থায় যদি এখানে একটি সেতু থাকতো তাহলে মাঠের ফসল আমরা সময় মতো উঠানো যেতো ।
এ এলাকার অন্যান্য কৃষক রহমান,জালাল,জিয়াসহ অনেকে জানান ,খাল সংলগ্ন সেতু না থাকার কারণে সাধারণ মানুষের খুবই কষ্ট হচ্ছে । স্থানীয়দের নিজ এখানে বাঁশের চরাট তৈরি করা হয়েছে । যেটা ৩-৪ মাসের মধ্যে ভেঙে যায় । আবার আমরা নিজেরাই মেরামত করে পারাপারের উপযোগী করি । আমাদের ছেলেমেয়েরা অনেক কষ্ট করে ঝঁকি নিয়ে বাঁশের চরাট পার হয়ে স্কুলে যায়। বর্ষার সময় আমরা মাঠ থেকে চরাট পার হয়ে ফসল আনতে পারি না ফলে অনেক ফসল মাঠেই নষ্ট হয়ে যায় । এখানে একটি সেতু তৈরিতে আমরা বার বার স্থানীয় দ্বারিয়াপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি ।
এ বিষয়ে দ্বারিয়াপর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর বলেন,চরচৌগাছি গ্রামে খাল সংলগ্ন এলাকায় একটি সেতু খুবই প্রয়োজন । এ এলাকার কৃষক মাঠ থেকে ফসল উঠাতে পারে না । তাছাড়া জনসাধারণ অনেক কষ্ট নিয়ে পারাপার হয় । আমি সেখানে কিছুদিন আগে প্রকৌশলীকে নিয়ে পরিদর্শন করেছি । সেতু তৈরিতে প্রস্তাব করেছি । আশা রাখছি আগামীতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে ।