শনিবার ● ১৮ নভেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » অপরাধ » মাগুরায় মন্দির তৈরীর কথা বলে কৃষকের বাড়ি ভাংচুর ও মারপিট
মাগুরায় মন্দির তৈরীর কথা বলে কৃষকের বাড়ি ভাংচুর ও মারপিট
মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হুদা শ্রীপুর গ্রামে শুক্রবার মন্দির নির্মাণের কথা বলে বাটুল বিশ্বাস নামে এক কৃষকের বাড়ি ভাংচুর, জবর দখল ও ৪ নারীসহ অন্তত ৮জনকে মারপিটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হামলাকারিরা ওই কৃষকের সদ্য ক্রয়কৃত জমিতে থাকা টিনসেড আধাপাকা বাড়িটির দরজা জানালা ভেঙ্গে বাইরে ফেলে দেয়। ভাংচুরে বাধা দিতে গেলে হামলাকারিরা চারজন নারীসহ অন্তত ৮জনকে আহত করে।
ভূক্তভোগী কৃষক বাটুল বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস জানান, দুইমাস আগে তার বাবা প্রতিবেশী কাকাতো ভাই দিপংকর বিশ্বাসের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ১৩ শতক জমি ক্রয় করেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে একই গ্রামের প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস,বিধান বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস, সুব্রত বিশ্বাসসহ একটি গ্রুপ শাবল, কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ক্রয়কৃত জমির উপর থাকা আধা পাকা ঘরে হামলা চালায়। এ সময় তারা হামলার ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা করে দুবৃৃত্তরা। তাদের লাঠির আঘাতে বাটুল বিশ্বাসের স্ত্রী শেফালী বিশ্বাস ও ভাইয়ের স্ত্রী প্রেমা রানী বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাসের স্ত্রী রূপা সেন, প্রহ্লাদ বিশ্বাসের স্ত্রী শিখা বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, মহিদ বিশ্বাস ও শান্তনু বিশ্বাস আহত হন। পরে তারা ৯৯৯ এ কল দিলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। কিন্তু ততক্ষণে ওই বাড়িটির অন্তত ৮টি দরজা জানালা ও গ্রীল ভেঙ্গে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এর আগে ওই বাড়ির সামনের জমিতে একটি পাটকাঠির বেড়া ও উপরে টিন দিয়ে বাঁশের তৈরী একটি মন্দির নির্মাণ করে গ্রামবাসি। তিনি বলেন, গ্রামে মন্দির হোক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু আমাদের জমি দখল করে কেন মন্দির তৈরী করতে হবে? মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমরা তীল তীল করে অর্থ সংগ্রহ করে হালের গরু বিক্রি করে জমিটি কিনেছি। এখন গ্রামের কিছু ক্ষমতাশালী মানুষ জোরকরে আমাদের জমি দখল করে সেখানে মন্দির ও ক্লাবঘর তৈরী করতে চায়। আমরা বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের বাড়ির মা বোনসহ অন্তত ৮ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
এ প্রসঙ্গে ওই জমিতে সদ্য প্রতিষ্ঠিত মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস জানান, আমরা এই জমিতে মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে ৭লাখ টাকা এবং মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর ও স্থানীয় নাকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমুয়ুনুর রশিদ মুহিত এর অনুদান মিলিয়ে মোট ৯ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছি। ওই টাকায় জমি কেনা কথাবার্তার মাঝেই জমির মালিক বাটুল বিশ্বাসের কাছে গোপনে জমি বিক্রি করে দিয়েছে। এদিকে আমরা প্রায় ৬মাস ধরে এখানে অস্থায়ী মন্দির করে পূজার কাজ শুরু করে দিয়েছি। এ অবস্থায় গ্রামবাসি ক্ষেপে গিয়ে আজ ওই বাড়িটি ভাংচুর শুরু করে।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় নাকোল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য চিন্ময় রায় বলেন, জমির সদ্য মালিক হওয়া বাটুল বিশ্বাসের ছেলেরা জমি দখল নিতে বাইরে থেকে মাস্তান ভাড়া করায় গ্রামবাসি ক্ষেপে গিয়ে ওই বাড়িটি ভাংচুর করেছে।
স্থানীয় নাকোল পুলিশ ফাড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (আইসি) উপ-পরিদর্শক (সাব ইন্সপেক্টর) লাল্টু রহমান বলেন, বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনাটির বিষয়ে ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছে। অভিযোগকারিদের লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।