শনিবার ● ২ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » শিক্ষা » মাগুরায় ১৬টি স্কুলে মেয়েবেলা কর্ণার স্থাপন
মাগুরায় ১৬টি স্কুলে মেয়েবেলা কর্ণার স্থাপন
মাগুরা প্রতিনিধি : ‘লাজ নয়, জানতে চাই’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে মাগুরার ১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কন্যা শিশুদের জন্য ‘‘মেয়ে বেলা কর্ণার’’ স্থাপন করা হয়েছে। এ সকল কর্ণারে অটোমেটিক ভেন্ডর মেশিনের মাধ্যমে স্বল্প মূল্যে সেনিটারি ন্যাপকিন সরবরাহের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে মাগুরা জেলা প্রশাসন। এ মেশিনের মাধ্যমে বয়ঃসন্ধিকালিন সময়ে পিরিয়ড এর দিনগুলিতে স্কুলের ছাত্রীরা একটি স্বতন্ত্র কক্ষে স্বস্তিদায়ক পরিবেশে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ পারবে। পর্যায়ক্রমে এ সেবা জেলার প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার জেলা সদরের শিরিজদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাগুরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ রোকনুজ্জামান, মাগুরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো ঃ আশরাফুল আলম, মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো ঃ মিজানুর রহমানসহ অন্যরা। একই দিনে জেলার বিনোদপুর, বাবুখালী, বাউলিয়া, সীমাখালী, তালখড়ি, শ্রীপুর হুদা, নাকোল, বরিশাট, শিবরামপুর, শেখপাড়া, জাগলা, বড় শলই ও জগদল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচী উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক। এর আগে জেলার আড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচী পরিক্ষামূলকভাবে শুরু হয়। শিরিজদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মহসিনা খাতুন ও রোকেয়া পারভীন জানান, অনেক মেয়েই ৪র্থ / ৫ম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই ঋতুমতি হয়ে উঠে। এ সময় তারা অনেকেই বিদ্যালয় থেকে ছুটি নিতে বাধ্য হয়। এতে তাদের লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিদ্যালয়ে সেনিটারি প্যাড প্রদানের এ অভিনব কার্যক্রম তাদের মেয়েদের লেখাপড়া আরও সুন্দর করে করতে উৎসাহিত করবে।
বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জানান, এই মেশিনের একদিক দিয়ে ১০টাকা ঢুকালে অন্য দিক দিয়ে একটি সুন্দর সেনিটারী প্যাড বের হয়। এত সুন্দর ব্যবস্থা পেয়ে তারা অনেক খুশি।
এ প্রসঙ্গে মাগুরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আশরাফুল আলম বলেন - ট্রাপিকাল বা ক্রান্তিয় অঞ্চল হওয়ায় শীতপ্রধান দেশের তুলনায় আমাদের দেশে আগেভাগেই মেয়েরা বয়ঃসন্ধিতে উপনিত হয়। কিন্তু সেই তুলনায় আমাদের স্কুলগুলিতে সেনিটেশন ব্যবস্থা তেমন নেই। এ কার্যক্রমের ফলে আমাদের শিশুরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আর একধাপ এগিয়ে গেল। প্রথম পর্যায়ে জেলার মোট ১৬টি বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচী চালু করা হলেও পর্যায়ক্রমে প্রতিটি বিদ্যালয়ে এ সেবা চালু করা হবে। এ কর্মসূচীকে প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের প্রথম এমন ব্যতিক্রমী কার্যক্রম বলে উল্লেখ করেন তিনি। মাগুরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, প্রত্যেক মেয়ে শিশুরই একটি চমৎকার মেয়েবেলা থাকে। কিন্তু মেয়েদের স্বাভাবিক জীবনচক্রে বিশেষ কিছু সময় আসে যখন তার বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা জরুরী হয়ে পড়ে। কিন্তু আমাদের স্কুলগুলিতে এ বিষয়ে পাঠ্যসূচীতে থাকলেও অনেক সময় শিক্ষকরা বিষয়টিকে এড়িয়ে যান। অভিভাবকরাও নানা ধর্মীয়, সামাজিক ও পারিবারিক কুসংস্কারে ভোগেন। এরফলে মেয়ে শিশুরা অনেক ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যহানি ও হিনমন্যতায় ভোগে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য মাগুরায় আমরা ১৬ট্ িপ্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে মেয়েবেলা কর্ণার স্থাপন ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অটোমেটিক ভেন্ডর মেশিন সরবরাহ করেছি। আমরা আশাকরি স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে এ উদ্যোগ ইতিবাচক হিসেবে বিবেচিত হবে।