বৃহস্পতিবার ● ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩
প্রথম পাতা » কৃষি » খুলনায় কৃষি বিষয়ক আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
খুলনায় কৃষি বিষয়ক আঞ্চলিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) কর্মসূচির আঞ্চলিক কর্মশালা ১৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা সিএসএস আভা সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সচিব বলেন, কৃষি বাংলাদেশের মূল চালিকা শক্তি। দেশের খাদ্যের জোগান বাড়াতে এক ফসলি জমিতে দুই ফসলি আর দুই ফসলি জমিতে তিন ফসলি জমিতে পরিণত করতে হবে। কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ করতে দরকার একালাভিত্তিক ফসল নির্বাচন করা। বর্তমান সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষককে সার ও বীজ ভতুর্কি দিচ্ছে। তিনি বলেন, প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য জ্ঞানভিত্তিক টেকসই বাণিজ্যক কৃষি উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। সরকার কৃষির ওপর ভতুর্কি দিচ্ছে তা কাজে লাগিয়ে ফলন বাড়ানোর জন্য তিনি অংশগ্রহণকারী জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান জানান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ^াসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএডিসির চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবির, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মাহবুবুল হক পাটোয়ারী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক (সরেজমিন উইং) মোঃ তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, কুষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. সাবিনা ইয়াসমিন প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ।
কর্মশালায় খুলনা বিভাগের সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের কর্মকর্তা ও কৃষকরা অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, জুলাই ২০২৩ থেকে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত পার্টনার প্রকল্পটি পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করা হবে। ৬৪টি জেলার ৪৯৫টি উপজেলায় পার্টনার বাস্তবায়িত হবে। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক হাজার একশত ৫১ কোটি টাকা ও প্রকল্প সাহায্য হিসেবে আসবে ৫ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। এতে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে পাঁচ হাজার তিন কোটি টাকা ও ইফাদ দিচ্ছে পাঁচশত কোটি টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মন্ত্রণালয়ের অধীন ৭টি সংস্থা তাদের নির্ধারিত কার্যক্ষেত্রে প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করছে, যেখানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর লিড এজেন্সির দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরও ৮টি সংস্থা এই প্রোগ্রামে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে কাজ করছে। এই মেগা প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে উত্তম কৃষিচর্চা সার্টিফিকেশনের মাধ্যমে ৩ লাখ হেক্টর ফল ও সবজি আবাদি জমি বৃদ্ধি; জলবায়ু অভিঘাত সহনশীল উচ্চ ফলনশীল নতুন ধানের ও ধান ছাড়া অন্য দানাদার ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ মোট ৪ লাখ আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি; উন্নত ও দক্ষ সেচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এক লাখ হেক্টর নতুন আবাদি জমি সেচের আওতায় আনয়ন; স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশব্যাপী দুই কোটি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩২১টি কৃষক পরিবারকে ‘কৃষক স্মার্টকার্ড’ দেওয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল কৃষি সেবার সম্প্রসারণ। এছাড়া ই-ভাউচারে দেওয়া হবে ভর্তুকি, কৃষকদের জন্য তৈরি হবে কৃষক ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সিস্টেম। মোবাইল প্ল্যান্ট ক্লিনিকের মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ সেবাকে কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে। ড্রিপ, স্প্রিংকলার, এডব্লিউডি ও ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালাসহ সৌরশক্তি ব্যবহার করে সেচের পানি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের মাধ্যমে পানির অপচয় হ্রাস করা হবে। প্রকল্পটি দেশের কৃষির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের কৃষি সেক্টরের বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরে জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮ এর কর্মপরিকল্পনা (২০২০) ও উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা ২০২০ বাস্তবায়নসহ এসডিজি, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ডেলটা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।