সোমবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
প্রথম পাতা » কৃষি » লবনাক্ত মৎস্য ঘেরে বিনা চাষে সরিষার বাম্পার ফলন ;সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন
লবনাক্ত মৎস্য ঘেরে বিনা চাষে সরিষার বাম্পার ফলন ;সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন
উপকূলের পাইকগাছার লবনাক্ত মৎস্য ঘেরে বিনা চাষে সরিষার ফলন ভালো হয়েছে।লবনাক্ত মৎস্য ঘেরে সরিষার আবাদ করে সাফাল্য পেয়ে সাড়া ফেলেছেন কৃষক হারুণ।ক্ষেতের সরিষার কর্তন ও ঝাড়াই করা হচ্ছে। বিঘা প্রতি প্রায় তিন মন করে সরিষার ফলন হবে বলে চাষি হারুণ ধারণা করছেন।এবছরই প্রথম তার মৎস্য ঘেরের ৭০ বিঘা লবনাক্ত মৎস্য ঘেরের জমিতে বিনা চাষে বিনা ৯ ও বিনা ১০ নামে সরিষার বুনে আবাদ করেছেন।
ষোল চাষে মুলা, তার অর্ধেক তুলা, তার অর্ধেক ধান, বিনা চাষে পান। প্রচলিত এই খনার বচনের সঙ্গে নতুন যুক্ত হলো সরিষার নাম। চলতি বছর মৎস্য ঘেরের জমিতে কোনো চাষ ছাড়াই আবাদ হয়েছে বিনা সরিষা-১০।স্বল্প জীবনকালীন ও উচ্চ ফলনশীল এই সরিষার আবাদে কৃষক হারুণ একটি বাড়তি ফসল ঘরে তুলে অধিক লাভবান হয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলার মালথ গ্রামের মৃত শাহজদ্দীন গাজীর ছেলে কৃষক হারুন গাজী।গদাইপুর ইউনিয়নের কপোতাক্ষ নদের তীরে হিতামপুর মৌজায় ৮০ বিঘা মৎস্য ঘের আছে। তিনি ঘেরে লবন পানিতে চিংড়িসহ বিভিন্ন মাছের চাষ করেন। এই প্রথম তার ঘেরের লবণাক্ত জমিতে বিনা চাষে বিনা-৯ জাতের সরিষার আবাদ করেছে। প্রথম বছরেই ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে তার ক্ষেতের সরিষা কর্তন ও ঝাড়াই করার কাজ চলছে।
কৃষক হারুন গাজী বলেন, আমি প্রায় ১০ বছর যাবৎ কপোতাক্ষ নদের তীরে হিতামপুর মৌজায় ৮০ বিঘা জমিতে মৎস্য লিজ ঘের করে আসছি। অক্টোবর নভেম্বরের দিকে মাছ আহরণের পর চিংড়ি ঘেরের জমি ২ থেকে ৩ মাস পতিত পড়ে থাকে। এ জন্য অনেকের পরামর্শ নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে বীজ সংগ্রহ করে ৭০ বিঘা জমিতে বিনা-৯ ও বিনা-১০ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। এখানে কোন চাষ করা লাগেনি।২৯ কেজি বীজ নরম মাটিতে বীজ বপন করেছি। সবকিছু মিলে তখন প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হলেও এখন সরিষা কাটতে ও ঝাড়াই করতে শ্রমিকের খরচ পড়ছে বেশী। বিনা চাষে সরিষার ভালো ফলন হয়েছ।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ বলেন, উপকূলের লবনাক্ত পাইকগাছার মৎস্য ঘেরে বিনা চাষে সরিষার ফলন ভালো হয়েছে।পাইকগাছার লবনাক্ত মৎস্য ঘেরে বিনা চাষে সরিষার ফলন ভালো সম্ভাবনার দ্বার উম্মোচন হয়েছে।এক্ষেত্রে লবণাক্ত জমিতে বিনা চাষের সরিষা আবাদ, তেল জাতীয় ফসল উৎপাদনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আশা করছি কৃষক হারুন গাজীকে অনুসরণ করে অন্যান্য মৎস্য চাষীরাও তাদের চিংড়ি ঘেরে বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষার আবাদ করতে এগিয়ে আসবে। বিনা চাষে সরিষা ফসল উৎপাদনের যে সম্ভবনা তৈরী হয়েছে এটি কাজে লাগাতে পারলে এলাকার কৃষকরা অনেক লাভবান হবেন। আগামীতে আমন ধান কাটার পর উপজেলার ফসলি ধানি জমি বিনা চাষে সরিষা আবাদের আওতায় আনার পরিকল্পনা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।