শনিবার ● ২ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাতক্ষীরা উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন
জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাতক্ষীরা উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পরিদর্শন
জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান সমাজের জন্য হুমকি স্বরূপ। এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা ও নবনির্বাচিত সরকারকে উপকূলীয় মানুষের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সদস্যরা। তারা তাদের বক্তব্যে বলেছেন যে জলবায়ু পরিবর্তন এর ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল একসময় জনমানবশূন্য হয়ে পড়বে। এমতাবস্থায় উপকূলের মানুষের জীবন জীবিকা রক্ষায় সরকারের বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এর ই পরিপ্রেক্ষিতে ১ লা মার্চ রোজ শুক্রবার সাতক্ষীরা জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের উদ্যোগে এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্সের সহযোগিতায় ঝুঁকিপূর্ণ উপকূল পরিদর্শনের আওতায় শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ, গাবুরা ও দুর্গাবাটি পর্যন্ত সরজমিনে মানুষের দুঃখ দুর্দশা দেখে পরবর্তীতে শ্যামনগর প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক এডঃ আজাদ হোসেন বেলাল, জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সদস্য সচিব মাধব চন্দ্র দত্ত, জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আলী নুর খান বাবুল, নাগরিক কমিটি সদস্য ওবায়দুস সুলতান বাবলু, জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সদস্য প্রভাষক ইদ্রিস আলী, শ্যামনগর প্রেসক্লাবের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক শেখ আফজালুর রহমান, সদস্য সচিব আবু সাইদ, লিডার্সের সভাপতি ও শ্যামনগর উপজেলা ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার নজরুল ইসলাম, জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের শ্যামনগর উপজেলা সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবী রঞ্জন মন্ডলসহ বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের সদস্য নিত্যানন্দ সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও ইয়াসের আঘাত সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। উপকূলের মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষত এখনো বহন করে বেড়াচ্ছে। আকাশে মেঘ দেখলেই ওই এলাকার জনমনে আতংক দেখা দেয়। এই আতংক থেকে রক্ষায় উপকূলে টেকসই বাঁধের পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উপকূলের অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে উল্লেখ করে প্রতিনিধিরা বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় না নিয়ে ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়। এতে সরকারী অর্থের অপচয় হয়। অথচ উপকূলের জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো পাসের অপেক্ষায় পড়ে থাকে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সকলকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে’ বাস্তবায়ন করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উপকূলের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, সরকার উপকূলে মেগা প্রোজেক্ট হিসেবে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছে। যার ফলে উপকূলের মানুষ সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। তবে টেকসই বেড়িবাঁধের পাশাপাশি সুপেয় পানির সংকট নিরসনে সরকার যদি কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে উপকূলের মানুষের দুঃখ দুর্দশা কিছুটা হলেও কমে যেত। জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থ বাস্তবায়নে সমম্বয় করে উপকূলীয় এলাকার জনপ্রতিনিধি ও জনগণকে সম্পৃক্ত করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে।লবণাক্ততার আগ্রাসনের শিকার উপকূলের সুপেয় পানির সংকট নিরসন এবং মৎস্য ও কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সুর্নিদ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। উপকূলের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে হাওড় উন্নয়ন বোর্ডের ন্যায় উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।