রবিবার ● ২৪ মার্চ ২০২৪
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » মাগুরায় ৪ উপজেলায় ১১০ ভাটায় পুড়ছে কাঠ !
মাগুরায় ৪ উপজেলায় ১১০ ভাটায় পুড়ছে কাঠ !
মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরা জেলার ৪ উপজেলায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইটভাটা গুলোতে প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ । এসব ইঁটভাটার বিরুদ্ধে তদারকি ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের নিজস্ব আইন রয়েছে অর্থদন্ডসহ সাজা দেওয়ার । আইন থাকলেও রহস্যজনক নীরবতার কারনেই বছরের পর বছর জেলায় গড়ে উঠেছে অবৈধ ১০৬ ইটভাটা । ইটভাটার মালিকরা মানছেন না ইট তৈরি ও ভাটা স্থাপন আইন । এ অবৈধ ইট ভাটাগুলোর নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র কিংবা কৃষি বিভাগের প্রত্যয়নপত্র ।
পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইটভাটা ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে,মাগুরা জেলায় ৪টি উপজেলায় মোট ১১০টি ইটভাটা রয়েছে । এর মধ্যে বৈধ ইট ভাটা রয়েছে মাত্র ৪টি । বাকী ১০৬টিই অবৈধ । শীতের শুরু থেকে বর্ষার আগ পর্যন্ত একটি ভাটায় একটানা ৫ মাসের আগুনে ৭০-৮৫ লাখ ইট পোড়ানো হয় । যেখানে কাঠের প্রয়োজন হয় ৯০-৯৫ লাখ হাজার মণ । সেই হিসেবে এক মৌসুমেই এক কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার মণ কাঠ পাড়ানো হয় ।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ ) আইন বলছে,ইটভাটা স্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেওয়ার বিধান রয়েছে । আবাসিক,সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা,সিটি কর্পোরেশন,পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষি জমিতে ইট ভাটা স্থাপন করা যাবে না । ইট ভাটা হবে এসব এলাকা থেকে ১ কিরেঅমিটার দূরে । ইট উৎপাদনের জন্য কৃষি জমি,পাহাড় ও টিলা থেকে মাটি কেটে কাচামার ও জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারও নিষিদ্ধ ।
অথচ ইট ভাটাগুলোর অধিকাংশই স্থাপিত হয়েছে জনবসতি,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লাগোয়া,ফসলি জমি ও নদীর পাড়ে । ইট ভাটার চিত্র দেখলে মনে হবে জেলায় কিছুদিনের মধ্যে উৎাড় হবে সব গাছ । ফলে বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ হচ্ছে নিধন । অন্যদিকে,অবৈধ ড্রেজার দিয়ে অপিরকল্পিত মাটি কাটায় স্থায়ী ভাবে ক্ষতি হচ্ছে নদীর নব্যতা । পরিবেশের জীববৈচিত্র্যও ভারসাম্য হচ্ছে প্রতিনিয়ত হুমকির সম্মুখিন ।
সদরের কাশিনাথপুরগ্রামে গড়া উঠা শাপলা ব্রিকসের প্রবেশমুখে অনেকটা এলাকাজুড়ে রয়েছে কয়েক হাজার মণ কাঠ । পরিবেশ অধিদপ্তরের য়িম মেনে কাঠের পরির্বতে কয়লা দিদয়ে ইট পোড়ানোর ভাটার অনুমতি থাকলেও সেদিকে হাটছেন কেউ ।
সরজমিন জেলা সদরের বিভিন্ন ইট ভাটা ঘুরে দেখা গেছে,সবকটি ইট ভাটায় লাগামহীন ভাবে পোড়ানো কাঠ । কয়লা পোড়ানোর কথা থাকলেও মানছেন কেউই । নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক এক ভাটার মালিক বলেন,বছরের প্রায় ৮ মাস ভাটা চলে । ৪ মাস বন্ধ থাকে । বর্তমানে সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের অধিক দাম দিয়ে কাঠ কিনে পোড়াতে হচ্ছে । কয়লা দিয়ে ভাটায় ইট পোড়ানো কথা আমরা জানি কিন্তু এখন কয়লা তেমন পাওয়া যাচ্ছে না । যাও পাওয়া যাচ্ছে তাও দাম আকাশচুম্বী । তাই আমরা বাধ্য হয়ে কাঠ পোড়াচ্ছি ।
ইটভাটা তদারকি কমিটির সদস্য ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান বলেন,জেলায় ইটভাটা কোন মালিকের সাথে আমার পরিচয় নেই । তবে কাঠ পোড়ানোর দায়ে ইতিপূর্বে মালিকদের অর্থদন্ডসহ ইটভাটা ভেঙে দেওয়া হয়েছে ।
যশোর জেলা পরিবেশ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক নুর আলমের সাথে বার বার মুঠোফুনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি ।