বুধবার ● ১৫ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » রাজনীতি » উপজেলা নির্বাচনে পাইকগাছা আ.লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ বাড়ছে
উপজেলা নির্বাচনে পাইকগাছা আ.লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ বাড়ছে
খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র কোন্দল ও বিরোধ দেখা দিয়েছে। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকালে তৈরি হওয়া এ বিরোধ আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বিরোধ গড়িয়েছে উপজেলার ভোটে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পাল্টাপাল্টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ নিয়ে দলের তৃণমূল পর্যায়ে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধ নিরসন না হতেই উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল আওয়ামী লীগে শুরু হয়েছে বিভক্তি। নেতারা বলছেন জাতীয় নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। তাই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নিজেরাই নিজেদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। উপজেলায় দলের একাধিক প্রার্থী হওয়ায় কর্মীরা নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। সাধারণ নেতা-কর্মীরা বলছেন, অন্য দলের প্রার্থী না থাকায় এই বিরোধের কারণে দলের অবস্থান এখন বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের চেয়েও দুর্বল হয়ে পড়েছে। তবে শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, বরাবরের মতোই ভোটের পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
আগামী ২৯ মে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে পাইকগাছা উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছেন।উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য শেখ কামরুল হাসান টিপু প্রতিক মটর সাইকেল, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও পূজা উদযাপন পরিষদের উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস প্রতিক চিংড়ি মাছ, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণপদ মন্ডল প্রতিক আনারস, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এড. শেখ আবুল কালাম আজাদ প্রতিক দোয়াত কলম, সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. স ম বাবর আলীর পুত্র স ম শিবলী নোমানী রানা প্রতিক কাপ পিরিস ও মোঃ আছাদুল বিশ্বাস প্রতিক হেলিকপ্টার নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও পৌরসভার আওয়ামী লীগ নেতারা উপজেলা আওয়ামী লীগের চার প্রার্থীর পক্ষে বিভক্ত হয়ে কাজ করছেন। অন্য দলের প্রার্থী না থাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরাও দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। সিনিয়র নেতাদের মধ্যে অনেকে সরাসরি কারো পক্ষ না নিলেও কেউ কেউ কৌশলী অবস্থানে রয়েছেন। আবার কেউ কেউ বিভক্ত হয়ে তিন নেতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এতে বাড়ছে বিরোধ। শুরুতে চার চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে আলোচনা থাকলেও ত্রিমূখী লড়াইযে রুপ নিচ্ছে আর নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসবে ভোট যুদ্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলে ভোটার ধারনা করছেন। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাসের চিংড়ি মাছ প্রতিকের সাথে শেষ লড়াই হবে বলে ভোটার ধারনা করছেন।
তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন নেতাকর্মীরা। এর কারণ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দল থেকে প্রতীক ও কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হচ্ছে না। এতে যে যার মতো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। এজন্যই নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে। পথ সভা ও উঠান বৈঠাকে নেতাকর্মীরা চার প্রার্থীর পক্ষে বিপক্ষে বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথাও শোনা যাচ্ছে। এর আগে গত পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকায় দলীয় নেতা কর্মীদের এমন দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়তে হয়নি বলে মন্তব্য করেন একাধিক নেতা কর্মীরা।
সাধারণ ভোটাররা বলছেন, ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হলেও সংসদ নির্বাচনের চেয়ে উপস্থিতি বেশী হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য দলের কেউ প্রার্থী হননি। তাই প্রার্থীরা জামায়াত বিএনপির ভোটের দিকে নজর দিয়ে সাধারণ ভোটারদের টানার চেষ্টা করছেন।