মঙ্গলবার ● ২৮ মে ২০২৪
প্রথম পাতা » উপকূল » ঘুর্নিঝড় রেমাল এর তান্ডবে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পাইকগাছা লন্ডভন্ড; ৭২ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি
ঘুর্নিঝড় রেমাল এর তান্ডবে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পাইকগাছা লন্ডভন্ড; ৭২ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি
ঘুর্নিঝড় রেমাল এর তান্ডবে উপকূলীয় পাইকগাছা এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। জলোচ্ছ্বাসে উপজেলার বিভিন্ন পোল্ডারে ক্ষতিগ্রস্থ পাউবো’র বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের পর গ্রাম লবন পানিতে প্লাবিত হয়ে তছনছ করে দিয়েছে। এতে হাজার-হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়ে মাছ ভেসে গিয়ে ৭২ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
রবিবার রাতের জোয়ারের জলোচ্ছ্বাসে ১০/১২ পেল্ডারের গড়ইখালীর কুমখালীর ক্ষুদখালীর ভাঙন, ২৩ নং পোল্ডারের লস্করের বাইনতলা খেয়া ঘাটের দু’পাশ,কড়ুলিয়াসহ ৪টি স্থানে, লতা, দেলুটির তেলিখালী,গেউয়াবুনিয়া, হরিঢালী, রাড়ুলী,গদাইপুর মালোপাড়াসহ হিতামপুর, কপিলমুনি, সোলাদানার আমুরকাটা,বয়ারঝাপা সহ বিভিন্ন স্থানে বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে লবন পানি ঢুকে ঘরবাড়ী, রাস্তাঘাট,পুকুর ও ফসলের ক্ষেত তলিয়ে একাকার হয়ে গেছে। এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সরেজমিনে এসে খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামান পোল্ডার রক্ষায় বাঁধ মেরামতে এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। তিনি দুর্যোগকাল সরকারের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের মানুষের পাশে দাড়ানোর কথা বলেছেন। অন্যদিকে এ আসনের সাবেক সংসদ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবুও দুর্যোগকালে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করে তার অনুসারী নেতা-কর্মীদের সহযোগিতার অনুরোধ করেছেন।
পাইকগাছা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক জানান, ঘুর্নিঝড় রেমাল এর তান্ডবে উপজেলায সৎস্য চাষের ৬ হাজার ৯শত ৮৬ হেক্টর জমি ও ৪ হাজার ৯০টি মৎস্য ঘের ভেসে গেছে।বিভিন্ন প্রকার মাছ ভেসে প্রাথমিক ক্ষতির পরিমান প্রায় ৭২ কোটি ৫লাখ টাকা।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান,ঘুর্নিঝড় রেমাল এর তান্ডবে মৌসুমি ফল আম ,কাঠাল, জাম, জামরুল, লিচুসহ বিভিন্ন ফল, আউশ ধান, পাট, তিল ও বিভিন্ন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।সব মিলে ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ প্রায় ১৮ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার ৯৫০ টাকা।
পাইকগাছার পাউয়ার বিভাগ-২ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান, দুর্যোগকালে পোল্ডারের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্থ বাধ মেরামত চলছে। তিনি আরোও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ১৭ কিঃ মিঃ বেঁড়িবাঁধের মধ্যে সাড়ে ৭ কিঃ মিঃ বাঁধ অতি ঝুঁকিপুর্ণ। বিভিন্ন স্থানের ভেঙ্গে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ মেরামতে জিও ব্যাগ ও বস্তা সরবরাহ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন, ওসি মোঃ ওবায়দুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েসসহ দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শনসহ সাইক্লোন সেল্টারে আশ্রয় নেওয়া মানুষের খাদ্য-পানি সরবরাহ করছেন।
পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার ২৭ মে সকাল পর্যন্ত ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। কমপক্ষে ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। তবে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।