শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
সোমবার ● ১৭ জুন ২০২৪
প্রথম পাতা » মুক্তমত » যোগব্যায়াম আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা
প্রথম পাতা » মুক্তমত » যোগব্যায়াম আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা
১৭৮ বার পঠিত
সোমবার ● ১৭ জুন ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

যোগব্যায়াম আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা

প্রকাশ ঘোষ বিধান :

২১ জুন তারিখটি হল আন্তর্জাতিক যোগ দিবস। যোগ হল প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা বা যোগব্যায়াম। এর উদ্দেশ্য মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাবিধান। সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি হিসেবে ইয়োগা বা যোগের গুরুত্ব অনেক। এই প্রথা ভারতে আজও প্রচলিত আছে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, প্রাচীনকাল থেকেই ভারতের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ যোগ। বিভিন্ন রোগ ঠেকাতে, শরীর ভালো রাখতে এবং নিয়মিত শরীরচর্চা করতে তারা ভরসা রাখতেন যোগব্যায়ামের ওপর। বর্তমান সময়ে এর উপকারিতা ও গুরুত্ব বেশি হওয়ায় ভারতের এই প্রাচীন জ্ঞান এখন বিশ্বের অন্য দেশগুলোতেও আপন করে নেওয়া হচ্ছে।

২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব দেন। এই  বছরই ১১ ডিসেম্বর রাষ্ট্রসংঘ রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদ ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস বলে ঘোষণা করেন।২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর ২১ জুন বিশ্বব্যাপী দিবসটি উদযাপন করা হয়।

‘যোগ’ শব্দটি দুটি সংস্কৃত শব্দ ‘য়ুজ’ এবং ‘য়ুজির’ সমন্বয়ে গঠিত।  যার অর্থ ‘এক সঙ্গে’ বা ‘একত্র হওয়া’। তাই যোগের অর্থ বোঝায়  আত্মা, মন এবং শরীরের সমন্বয়। চিন্তা ও কর্মের একতা প্রকাশ করে সৃষ্টিকর্তা বা আধ্যাত্মিক বিষয়ে চিন্তা করাও যোগের একটি প্রধান উদ্দেশ্য।

যোগ সারায় রোগ! এই প্রবাদ বহু প্রাচীন। বহু যুগ ধরে ভারতের বিশিষ্ট ঋষি-মুণিরা নিয়মিত যোগব্যায়াম করতেন। যোগ বিদ্যায়, শিবকে আদি যোগী বলে মনে করা হয়। অর্থাৎ ভগবান শিব ছিলেন যোগের জনক। বেদ অনুযায়ী, যোগ হল আত্মা ও পরমাত্মার মিলন। যোগ অহংকে ধ্বংস করে। যে মুহুর্তে মনের প্রবৃত্তি বন্ধ হয়ে যায়, তখনই যোগের কণা শুরু হয়।

সুষম খাদ্যাভাস ও যোগব্যায়ামের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে সুস্থভাবে জীবনযাপন করতেন। শুধু তাই নয়, মন ও শরীর উভয়ই সুস্থ ও শক্তিশালী থাকে। আর তাই দেশে এখনও যোগব্যায়ামকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে দেশ ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বের দরবারেই এই যোগ-ব্যায়াম এক অন্য মাত্রা পেয়েছে।

সাফল্যে তিনটি জিনিস থেকে আসে। সম্পদ, খ্যাতি ও মানসিক শান্তি। এই তিন জিনিস যদি একজনের মধ্যে থাকে তাহলে তিনি খুব সহজেই মানসিক শান্তি পাওয়ার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হল যোগব্যায়াম। ২১ জুন যোগ দিবস পালিত হয় প্রতি বছর। যোগব্যায়াম করার কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। যোগব্যায়াম শুধুমাত্র দীর্ঘায়ু হতে নয়, আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে, মনকে শান্ত ও মজবুত করতেও সাহায্য করে।

পঞ্চাঙ্গ অনুসারে, ২১ জুন হল উত্তর গোলার্ধের দীর্ঘতম দিন। এদিন ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসারে, গ্রীষ্মের অবিচ্ছিন্নতার পরে সূর্য দক্ষিণায়ণে পড়ে। গ্রীষ্মকালীন অয়নকাল। গ্রীষ্মকালের পর সূর্য দক্ষিণায়নে। এই দিনে সূর্য খুব তাড়াতাড়ি উদয় হয়, তারপর দেরি করে অস্তও যায়। দক্ষিণায়নের কারণে সূর্যের তেজ কমে যায়। কথিত আছে, সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় আধ্যাত্মিক কৃতিত্ব অর্জনে অত্যন্ত খুব উপকারী বলে প্রমাণিত। এছাড়া এর জেরে পরিবেশ দূষিত হয়, জীবাণু উৎপন্ন হয় সবচেয়ে বেশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এদিন। এই কারণেই এদিন যোগাব্যায়াম করে শরীর ও মন থাকে সুস্থ ও মজবুত।

সারা বিশ্বেই মহা সমারহে পালিত হয় এই বিশেষ দিন। উদ্দেশ্যে একটাই, যোগেই হোক রোগ-বিয়োগ। যোগের মাধ্যমেই সেরে উঠুক এ বিশ্ব। প্রাচীন ভারতে তখন ওষুধ মানক বস্তুটি ছিল বহু দূর কা বাত! শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সেরে ওঠার অন্যতম বিশ্বাসযোগ্য মাধ্যম ছিল যোগ ব্যায়াম। সেই ভারতের দেখাদেখিই যোগা ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বেই। ধীরে ধীরে সেরে উঠতে থাকে বিশ্ব।

---যোগ হলো প্রাচীন ভারতে উদ্ভূত এক বিশেষ ধরনের শারীরিক ও মানসিক ব্যায়াম এবং আধ্যাত্মিক অনুশীলন প্রথা বা যোগব্যায়াম।নিয়মিত যোগব্যায়াম হার্ট ভালো রাখতে, রক্তচাপ কমাতে, নমনীয়তা বাড়াতে এবং পেশি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া শ্বাসযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করতে, সামগ্রিক মানসিক সুস্থতা দেয় যোগাভ্যাস। নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করা জরুরি। এতে শরীর ও মন সুস্থ থাকে।

লেখক; সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)