বুধবার ● ৩ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » মুক্তমত » বাঁধের ফাঁদে উপকূল সুরক্ষা বেড়িবাঁধ
বাঁধের ফাঁদে উপকূল সুরক্ষা বেড়িবাঁধ
প্রকাশ ঘোষ বিধান
বাংলাদেশের দক্ষিণে সমুদ্র উপকূলবর্তী ১৯টি জেলা নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চল। দেশের তিন ভাগের এক ভাগজুড়ে বিস্তৃত এই অঞ্চলে প্রায় ৫ কোটি মানুষের বাস। এই বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবন-জীবিকা-অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ষাটের দশকে নির্মিত হয় ৫ হাজার ৮১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলীয় বেড়িবাঁধ। যা ১৯৬১ সালে শুরু হয়, শেষ হয় ১৯৭১ সালে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মতে, উপকূলীয় এলাকার ৫ হাজার ৭৫৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অর্ধেকের বেশিই আজ ঝুঁকিপূর্ণ।বাঁধগুলো অনেক পুরনো। উচ্চতা আছে তিন-সাড়ে তিন মিটার। এগুলোর কেবল সাধারণ জোয়ার ঠেকানোর ক্ষমতা আছে। আম্পান বা সিডর-আইলা,রোমানের মতো বড় ঘূর্ণিঝড় ঠোকানোর সামর্থ্য এই বেড়িবাঁধের নেই। উপকূলীয় ১৯টি জেলার প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত ঘূর্ণিঝড়ের আতংকে দিন কাটে।
ষাটের দশকে দেশের ১৩ জেলায় ৫ হাজার ৮১০ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকার ১৩৯টি পোল্ডার বা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিলো। স্বাধীনতার ৫০ বছরে উপকূল সুরক্ষায় নতুন কোন পোল্ডারও তৈরী করা হযনি। পাকিস্তান আমলে তৈরী বেড়িবাঁধ সংস্কার আর পুনঃনির্মাণেই কেটে গেছে ৫০টি বছর! অর্ধশত বছরেরও আগে নির্মিত এসব বাঁধ এখন আর সামাল দিতে পারছে না সামুদ্রিক ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কা।
প্রতি বছর জুন মাসে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে যেসব স্থানে বেড়িবাঁধ দুর্বল, স্থানগুলো উল্লেখ করে একটি আনুমানিক বরাদ্দ পাউবো এমপির ডিও লেটারের মাধ্যমে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। সেই ষাটের দশকে আদি বাঁধ নির্মাণের পর এ ধরনের আর কোনো মূল বাঁধ এ অঞ্চলে নির্মাণ হয়নি, হয়েছে শুধু সংস্কার-মেরামত।উপকূল সুরক্ষা বেড়িবাঁধ ভাঙ্গলে সংস্কারে কেটে যায় বছর। আর বাঁধ বলতে যেটি করা হয়েছে, তা হলো যেখানে ভেঙেছে সেখানে রিং বাঁধ দেওয়া। তবে নিম্নমানের কাজ, নকশায় ত্রুটি,বাস্তবতার সাথে পরিকল্পনার ভিন্নতার কারনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ টেকসই হয় না।
ষাটের দশকে উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে পাকিস্তান সরকার। ৫৫ বছরে ভাঙতে ভাঙতে যার অস্তিত্ব এখন আর নেই বললেই চলে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লবণপানি প্রবেশ করায় সবুজ শ্যামল জনপদ বিরাণ হচ্ছে। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত আর নদীর ভাঙ্গন বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে এতটাই ভঙ্গুর করে দিয়েছে যে, এখানে এখন আর বড় ঘূর্ণিঝড়ের প্রয়োজন হয় না। অমাবস্যার জোয়ারে পানির চাপ একটু বাড়লে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূল রেখার প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা এখনো অরক্ষিত। দেশে বর্তমানে পোল্ডারের সংখ্যা ১৩৯, যা ষাটের দশকে তৈরী করা হয়েছিলো। এর মধ্যে ৬০টি বেড়িবাঁধ এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।পাউবো বিভিন্ন সময় সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করেছে। তবে নতুন করে কোন বাঁধ তৈরী করা হয়নি। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লবণপানি প্রবেশ করায় একসময়ের সবুজ শ্যামল জনপদ বিরাণ হচ্ছে।একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত আর নদীর ভাঙ্গন বেড়িবাঁধ এতটাই ভঙ্গুর করে দিয়েছে যে, এখন আর বড় ঘূর্ণিঝড়ের প্রয়োজন হয় না। অমাবস্যা বা পূর্নীমার জোয়ারে পানির চাপ একটু বাড়লে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দফায় দফায় ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জমিতে লবণপানি ঢুকে জমি উর্বরতা হারায়। ৫৫ বছরে ভাঙতে ভাঙতে যার অস্তিত্ব এখন আর নেই বললেই চলে। দুঃখের বিষয়, বেড়িবাঁধ নির্মাণ হওয়ার পর থেকে স্বার্থান্বেষী মানুষদের ছোবলে বারবার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে বাঁধটি।৮০ দশ থেকে প্রতিষ্ঠিত কৃষকরাও বাঁধ কেটে জমিতে লবণপানি প্রবেশ করিয়ে মাছচাষ শুরু করে। ফলে একদিকে জমি নষ্ট হয়েছে, অন্যদিকে বিনাশ করা হয়েছে বাঁধ।
ভারতের ট্রপিক্যাল মেটেরোলজি ইনস্টিটিউটের জলবায়ু বিজ্ঞানী ড. রক্সি ম্যাথিও কল-এর তথ্যমতে, বিশ্বের ভয়াবহতম ১০ ঘূর্ণিঝড়ের ৮টিই সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিশ্বে যত মৃত্যু ঘটেছে, তার ৮০ শতাংশই হয়েছে এই অঞ্চলে। এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় ১৯ জেলার প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন।
১৯৭০ থেকে ২০২৪ সাল পযন্ত প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়সহ একের পর এক ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে দেশের বাঁধের বেশিরভাগ অংশ নাজুক হয়ে পড়েছে। শুধুমাত্র সুপার সাইক্লোন সিডরে উপকূলীয় ৩০ জেলার ২ হাজার ৩৪১ কিলোমিটার বাঁধ বিধ্বস্ত হয়। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিলীন হয় ৩৯১ কিলোমিটার। ১ হাজার ৯৫০ কিলোমিটার বাঁধ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার আঘাতে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার ৩৮টি পোল্ডারের ১৬৫১ কিলোমিটার বেঁড়িবাধের মধ্যে ৬৮৪ কিলোমিটার বিধ্বস্ত হয়। ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে উপকূলীয় ১০ জেলার ৪৭৮ কিলোমিটার বাঁধ সম্পূর্ণ ভেঙে বিলীন হয়ে যায়। আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬৭৮ কিলোমিটার।
১৯৬০ সালের দিকে নির্মাণ করা বাধের মেয়াদ ছিল ২০ বছর। তবে দুঃখের বিষয় হলো, বিগত ৫৫ বছরের মধ্যে এ বাঁধ কখনো সংস্কার করা হয়নি।ভাঙ্গলে মেরমত করা হয়। উপকূলীয় বাঁধগুলোর মেয়াদ শেষ হয়েছে অনেক আগেই।৫৫ বছর আগের বাঁধ যে এখনো সার্ভিস দিচ্ছে সেটাই অনেক বেশি। এছাড়া যে সময় বাঁধগুলো নির্মাণ করা হয়েছিলো, সে সময় শুধুমাত্র জোয়ার থেকে জনবসতিকে রক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু বর্তমানে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়ের চাপ বাঁধগুলো আর নিতে পারছেনা।
ভেড়িবাঁধ মাটি অথবা শিলা দ্বারা নির্মিত উচুঁ পৃষ্ঠবিশিষ্ট প্রাচীর সদৃশ মাটির স্থাপনা। প্রচলিত বাংলায় এটিকে বেড়িবাঁধও বলা হয়ে থাকে। অবস্থাভেদে ভেড়িবাঁধের প্রকৃতি এবং গঠন বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের ভেড়িবাঁধের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ একটি, যা বন্যা নিয়ন্ত্রণ অথবা প্রতিরোধের লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়। নিম্নভূমি অঞ্চলে বন্যা প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে নদীতীর এবং তীরভূমি থেকে কিছুটা দূরে বন্যার পানি ধরে রাখার জন্য নির্মিত ভেড়িবাঁধকে কান্দা বা জলস্রোত প্রতিরোধী বাঁধও বলা হয়, ইংরেজি ভাষায় যাকে বলা হয় লেভি বা ডাইক । এই ধরনের বাঁধের অভ্যন্তরে পানি প্রবেশ এবং নির্গমের ব্যবস্থা থাকতে পারে আবার নাও পারে। বন্যার পানি ধারণ ও প্রতিরোধ করা অথবা সড়ক, রেলপথ, খাল ইত্যাদি নির্মাণে এরূপ স্থাপনার প্রয়োজন হয়।
উপমহাদেশে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ভেড়িবাঁধ নির্মাণের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় সুলতানি শাসনামলে (১২১৩-১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দ)। সুলতান গিয়াসুদ্দিন ইওয়াজ খিলজী তাঁর রাজধানী লখনৌতিকে বন্যার কবল থেকে রক্ষার জন্য কয়েকটি ভেড়িবাঁধ নির্মাণ করেন। তাঁর সময়েই প্রায় ১৫০ মাইল দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট গ্রান্ড ট্রাঙ্ক সড়ক নির্মিত হয়, যা একই সঙ্গে বন্যা প্রতিরোধে ভেড়িবাঁধ হিসেবেও কাজ করত। মুগল সম্রাটগণও বিভিন্ন বড় বড় নদ-নদীর গতিপথে ভেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছিলেন।
বাংলাদেশে সমুদ্র উপকূলবর্তী ভেড়িবাঁধসমূহ নির্মাণ শুরু হয় সপ্তদশ শতকের শুরুতেই। জমিদারদের কর্তৃত্বাধীন এসব উদ্যোগ ছিল মূলত বেসরকারি। স্থানীয়ভাবে এ বাঁধকে অস্টমাসি বাধ বলা হতো।মূলত জোয়ারের পানি থেকে ফসল বাচানোর এ জন্য বাধ দেওয়া হতো।উপকূল সুরক্ষায় ব্যাপক পরিসরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ভেড়িবাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক উন্নয়ন কর্মকান্ডের সূত্রপাত ঘটে ১৯৬০- এর দশকে। সে সময় থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বহু কিলোমিটার ভেড়িবাঁধ নির্মিত হয়েছে। এই বাঁধগুলি কৃষি ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে উপযুক্ত পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখছে।
সমুদ্র উপকূলীয় ভেড়িবাঁধ প্রকল্প (সিইপি) বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় জেলাসমূহ এই প্রকল্পভুক্ত। কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালি, ঝালকাঠি, বরগুনা, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং বাগেরহাট জেলার বিস্তৃত এলাকা জুড়ে সমুদ্র উপকূলীয় ভেড়িবাঁধ প্রকল্প বা সিইপি।
বাঁধনির্মাণ এবং পানি নিষ্কাশনে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর জটিল কার্যক্রম ভিত্তিক এই প্রকল্পে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হয় স্লুইস গেইট বা জলকপাট দ্বারা। সেই সঙ্গে পানি অপসারণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থাও এখানে গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বন্যা এবং লবণাক্ত পানির অবাঞ্ছিত অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে এটি প্রথম একটি ব্যাপক ও কার্যকর পরিকল্পনা হিসেবে চিহ্নিত। প্রকল্পটি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৮ সালের মধ্যে দুই পর্বে এটি বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথম পর্বে প্রকল্পভুক্ত ছিল ৯২টি পোল্ডার নির্মাণ, যার মাধ্যমে ১০ লক্ষ হেক্টর ভূমি প্রকল্প সুবিধার আওতায় আসে। পোল্ডার একটি ডাচ শব্দ, যার অর্থ বন্যা নিরোধের জন্য নির্মিত মাটির দীর্ঘ বাঁধ (ডাইক) দ্বারা বেষ্টিত এলাকা। দ্বিতীয় পর্বে ১৬টি পোল্ডারে আরও চার লক্ষ হেক্টর ভূমি উদ্ধার সম্ভব হয়। সিইপির আওতায় এ পর্যন্ত ৪,০০০ কিমি-এর অধিক দীর্ঘ ভেড়িবাঁধ এবং ১,০৩৯টি নিষ্কাশন জলকপাট বা স্লুইস গেইট নির্মিত হয়েছে।
ভেড়িবাঁধ জোয়ার প্লাবন থেকে ভূমিকে রক্ষা করতে কার্যকর, কিন্তু বাঁধের উচ্চতা ছাড়িয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়,জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ার জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে না। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইতিবাচক ভূমিকার পাশাপাশি এ সকল বাঁধ সড়ক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, যা উপকূলীয় অঞ্চলের সার্বিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গতিশীলতার সঞ্চার করেছে।
তবে ভেড়িবাঁধসমূহ নদীর স্বাভাবিক গতিপথের পরিবর্তন ঘটায়। এই নদীশাসন, জোয়ার ভাটার স্রোতধারায় এবং বাঁধের জলকপাটসমূহের নির্গম পথে পলি জমার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। এ ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সর্বাপেক্ষা মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করেছে খুলনা অঞ্চলে। সেখানে উচ্চভূমি অঞ্চল থেকে নদীবাহিত পলি অধিক মাত্রায় সঞ্চিত হচ্ছে। ফলে এ এলাকার নিম্নভূমি বা বিভিন্ন পোল্ডারে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। পলি সঞ্চয়নের ফলে নদীর নাব্য কমে যাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ছে। এর কারণসমূহ চিহ্নিত করার জন্য এপর্যন্ত বেশ কিছু গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।সিইপি ১৯৮৮ সাল থেকে দুর্বল পানি নিষ্কাশণ ব্যবস্থা এবং জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে সংস্কার মূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করেছে। সেক্ষেত্রে চিহ্নিত নদীগুলির নাব্য বৃদ্ধির জন্য খননকার্য এবং জীর্ণ ও অকার্যকর জলকপাটগুলোর মেরামত, প্রয়োজনে নতুন করে স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
উপকূল অঞ্চলের মানুষের জীবনজীবিকা নির্বাহ করে বেড়ীবাঁধের উপরে। দূর্যোগে এই বাঁধ তাদের ভরসার একমাত্র স্থল। বাঁধ ভালো থাকলে তারা দূর্যোগ থেকে রক্ষা পাবে। বাঁধ ভেঙ্গে গেলে তাদের ঘরবাড়ী, ফসলের ক্ষেত, রাস্তাসহ সবকিছু পানিতে ভেসে যায়। মানুষগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়ে। উপকূলের জনজীবন ভাঙ্গা বাঁধের ফাঁদে বিপন্ন হচ্ছে। বেড়িবাঁধ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা রক্ষার দাবি, ন্যূনতম বেঁচে থাকার দাবি। অন্য যে কোন উন্নয়নের আগে টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরি করতে হবে্। ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে তীর রক্ষা বেড়িবাঁধের জরুরি প্রয়োজন উপকূলের জনপদে।
লেখক ; সাংবাদিক ও কলামিস্ট