শনিবার ● ১৩ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » মাগুরায় কাচাঁমরিচ ও পেঁয়াজের বাজার অস্থির; বিপাকে নিন্ম আয়ের মানুষ
মাগুরায় কাচাঁমরিচ ও পেঁয়াজের বাজার অস্থির; বিপাকে নিন্ম আয়ের মানুষ
শাহীন আলম তুহিন মাগুরা থেকে: মাগুরায় দু’দিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচ ও পেয়াজের অস্থির হয়ে গেছে । ফলে বিপাকে পড়েছে নিন্ম আয়ের মানুষ । পাইকেরি ও খুচরা বাজারে বেড়েছে এ দুটি নিত্যপণ্যের দাম। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪ শ’ টাকা। অপরদিকে,কাঁচামরিচ (জিয়া) বিক্রি হচ্ছে ৫ শ’ টাকা । দুদিনের ব্যবধান কাঁচামরিচ কেজিতে বেড়েছে ১৬০ টাকা । অপরদিকে,দেশি পেয়াজের দাম খুচরা বাজারে ১২০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে । দ’ুদিনের ব্যবধানে কেজিতে ২৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে । ব্যবসায়ীরা বলছেন,গত দু’দিন ধরে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ার কারণে কাঁচামচির ও পেয়াজের আামদানি কম থাকার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে । এ দু’পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিন্ম আয়ের সাধারণ মানুষ ।
সরজমিন শনিবার মাগুরা একতা পাইকেরি বাজারে ঘুরে দেখে গেছে,পাইকেরি প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ৩৮০ টাকা আবার কোথাও ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে । বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় পাইকেরি বাজারে ক্রেতা কম দেখা গেছে । পাইকেরি বাজারে বিক্রেতা হারেজ আলী জানান,দু’দিন ধরে বৃষ্টিবেড়ে যাওয়ার কারণে পাইকেরি বাজারে কাঁচামরিচের দাম দ্বিগুন হয়েছে । যেখানে গত দু’দিন আগে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছিল ২শ’ টাকা ২৫০ টাকা সেখানে আজ প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১৫০ টাকা । বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ার কারণে পাইকেরি বাজাওে কাঁচামরিচের আমদানি খুবই কম থাকার কারণে দাম বেড়েছে আর দাম বাড়ার কারণে বাজাওে ক্রেতাও কম । সদরের লক্ষীকান্দর গ্রামের কৃষক রাজকুমার জানান, আমি এবার ১০ শতক জমিতে কাচাঁমরিচের চাষ করেছি । কাঁচামরিচ চাষে খুবই পরিশ্রম করতে হয় । নিযমিত পরিচর্যার পাশাপাশি ক্ষেতে সার দিতে হয় । আমি ১ মাস পর পর মরিচ উত্তোলন করছি । পাইকেরি বাজারে বর্তমানে কাঁচামরিচ ভালো দাম পাচ্ছি । কাঁচামরিচের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে তিনি বলেন, আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে শুরু থেকে বৃষ্টির প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কারণে কাঁচামরিচের গাছ মওে যাছে । ক্ষেতে নিয়মিত পানি জমে থাকার কারণে আমি ৪ শতক জমির গাছ নষ্ট হয়ে গেছে । কাঁচামরিচ বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ । বেশি পানিতে এ গাছ বেশি দিন বাঁচে না । তাই আগামী ভাদ্র মাস পর্যন্ত বৃষ্টি থাকবে । এ মাস পর্যন্ত কাঁচামরিচের দাম বৃদ্ধি পাবে ।
মাগুরা একতা পাইকেরি কাঁচাবাজারে মরিচ কিনতে আসা এক ক্রেতা আব্দুল আজিজ বলেন,প্রতিদিনের খাবার তৈরিতে কাঁচামরিচের ব্যবহার খুবই বেশি । কারণ কাঁচামরিচ ছাড়া সব ধরণের তরকারি স্বাদ ভালো হয় না । তাই তরকারিতে কাচাঁমরিচের ব্যবহার বেশি । কিন্তু বর্তমানে এ পণ্যেও দাম দ্বিগুন হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ছি আমরা । দু’দিন আগেও আমি কাঁচামরিচ ২শ’ টাকা কেজি দরে কিনে ছিলাম । কিন্ত্র এখন কেজিতে ২শ’ টাকা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে ২৫০ গ্রাম ১শ’টাকায় কিনতে হচ্ছে । অপরদিকে,পেয়াঁজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় আমরা আরো সমস্যায় পড়ছি । কাসেদ আলী নামের এক রিক্সাচালক বলেন,কাঁচামরিচ ও পেয়াঁজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমি আমরা নি¤œ আয়ের মানুষ খুবই বিপাকে আছি । আগে কাঁচামরিচ ২৫০ গ্রাম কিনতাম এখন ১০০ গ্রাম মরিচ কেনার ক্ষমতা আমার নাই । আবার পাশাপাশি পেয়াঁজের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমরা তা কিনতে পারছি না ।
মাগুরা পুরাতন বাজার ব্যবসায়ী অজিত কুন্ডু বলেন,বর্তমানে পাইকেরি বাজারে কাঁচামরিচ আমরা ৩৮০ টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে । তাই আমাদের ৪শ’ টাকা কেজিতে মরিচ বিক্রি করতে হচ্ছে । অন্যদিকে ,পেঁয়াজ কেজিতে ১১০ টাকায় কিনতে হচ্ছে এজন্য খুচরায় আমরা ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি । কয়েকদিন ধওে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ার কারণে পাইকেরি বাজারে এ দু’টি পণ্যেও দামে চলছে অস্থিরতা । ফলে আমরা ব্যবসায়ী বিপাকে আছি ।
অন্যদিকে,বৃষ্টি অব্যাহত থাকার কারণে সবজি বাজারও বেশ চড়া । বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ টাকা,কচুরমুখি ৮০ টাকা ,পটল ৫০ টাকা,চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৫০ টাকা,ঝিঙ্গে প্রতি ৫০ টাকা ,কচুর লতি প্রতি কেজি ৪০ টাকা ,মিষ্টি কুমড়ো ৫০ টাকা,পুঁইশাক প্রতিকেজি ৪০ টাকা,আলু প্রতি কেজি ৬০ টাকা,করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা,ধেড়স প্রতি কেজি ৫০ টাকা,কাচাঁ কলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।
বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতারা বলছেন,বর্তমানে কাচাঁমরিচ ,পেঁয়াজ ও সবজির দাম অব্যাহত ভাবে বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ছেন তারা । সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন নিন্ম আয়ের মানষেরা । সাধারণ শ্রমিকরা বলছেন,সারাদিন কাজ করে পাচ্ছি ৫শ’ টাকা পাচ্ছি। এ দিয়ে সব টাকারই বাজার করতে হচ্ছে । এভাবে চললে আগামীদিন আমরা বাচঁব কিভাবে ।