শিরোনাম:
পাইকগাছা, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ২৫ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » মুক্তমত » বন্ধুত্ব অটুট থাকুক
প্রথম পাতা » মুক্তমত » বন্ধুত্ব অটুট থাকুক
১৮৭ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ২৫ জুলাই ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

বন্ধুত্ব অটুট থাকুক

---

প্র্রকাশ ঘোষ বিধান

বন্ধুত্ব শব্দটি খুব ছোট, কিন্তু এর গভীরতা ও ব্যাপ্তি অনেক বেশি।পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সম্পর্কের নাম বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের সম্পর্ক এক মানুষকে আরেকজনের সঙ্গে মনের বন্ধনে আবদ্ধ করে। বন্ধুত্ব হলো মন ও আত্মার বন্ধন।বন্ধুত্বের জন্য কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ লাগে না। বন্ধুত্বের কোনো বয়সসীমা নেই। সমবয়সীরাও যেমন বন্ধু হতে পারে, তেমনি বয়সে ছোট-বড়রাও বন্ধু হতে পারে। মনের মিল হলেই বন্ধু হওয়া যায়। সমমনা ব্যক্তিরাই সফলভাবে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারে।জীবনের যে কোন পর্যায়ে বন্ধুত্ব গড়ে উঠতে পারে। সাধারণত একই বয়স, চিন্তাধারা এবং একই মেজাজের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।

৩০ জুলাই আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস পালিত হয়।ব্যক্তি, রাষ্ট্র, সংস্কৃতির মধ্যে বন্ধুত্ব শান্তিকে সুনিশ্চিত করবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতির মধ্যে সেতুবন্ধন ঘটাবে। এই উদ্দেশে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবসের সূচনা করা হয়।এই দিনটিতে বন্ধুরা একে অপরকে ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড, কার্ড, উপহার দিয়ে থাকেন। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে, পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটান। ফ্রেন্ডশিপ ডে-তে নিজের বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করে  দ্বেষ, হিংসা, ভেদাভেদ ভুলে সকলকে আপন করে নেয়।

বন্ধু দিবসের পরিকল্পনা ও উৎপত্তি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ১৯১৯ সালে সর্বপ্রথম আগস্ট মাসের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়েছিল। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস ঘোষণা করেন। তবে বন্ধু দিবস বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন তারিখে পালন করা হয়। বাংলাদেশ, ভারত, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অগস্ট মাসের প্রথম রবিবার বন্ধুত্ব দিবস পালন করা হয়। আবার কোনো কোনো দেশে ৮ এপ্রিল ও ২অগস্ট বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

বন্ধুত্বের সম্পর্ককে খানিকটা আলাদা করে মূল্যায়ন করার জন্যই প্রতি বছর আগস্ট মাসের প্রথম রবিবারে  বাংলাদেশ বিশ্ব বন্ধুত্ব দিবস পালন করা হয়। বন্ধু দিবস উত্‍পত্তির কারণ সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে তত্‍কালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অর্থাৎ‍ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, বিশৃঙ্খলা ও হিংস্রতা মানুষের মধ্যে অনেকটাই বন্ধ‍ুর অভাব তৈরি করেছিলো বলে অনেকের অভিমত। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধু দিবস পালন করার ধারণা এসেছিল বলে অনেকে মনে করেন।

বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, বন্ধু দিবসের শুরু হয়েছিলো অনেক আগে। ১৯১৯ সালে আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে কার্ড, ফুল, উপহার বিনিময় করতো। ১৯৩০ সালে বিশ্বখ্যাত উপহারসামগ্রী ও কার্ড বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান হলমার্কের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হলকার্ড বন্ধু দিবস পালনের রীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়েছিলো। তিনি প্রতিবছর ২ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধুত্ব দিবস উদ্‌যাপনের বিষয়টি সামনে আনেন। এদিন কার্ড আদান-প্রদানের মাধ্যমে বন্ধু দিবস পালন করার চল শুরু হয়। অবশ্য তাঁর সে প্রচেষ্টা অতটা সফল হয়নি। ১৯৪০ সাল নাগাদ মানুষ বুঝতে পারে, এটা কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নয়, বরং হলমার্কের কার্ড ব্যবসা বাড়ানোর ফন্দি। এরপর থেকে বন্ধু দিবস উদ্‌যাপন একরকম বন্ধই হয়ে যায়।

আবার জানা যায়, ১৯৩৫ সালে আমেরিকার সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। তার প্রতিবাদে পরদিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। এরপর থেকে জীবনের নানা ক্ষেত্রে বন্ধুদের অবদানের প্রতি সম্মান জানাতে আমেরিকান কংগ্রেসে ১৯৩৫ সালে আগস্টের প্রথম রোববারকে বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই থেকেই বন্ধুত্ব দিবস শীঘ্রই এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস এর রুপ লাভ করে।

তবে এই দিবস উদ্‌যাপনের ব্যাপারটিতে মোড় ঘুরিয়ে দেন ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড  এর প্রতিষ্ঠাতা প্যারাগুয়ের চিকিৎসক র‌্যামন আর্থেমিও ব্রেচ। ১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই, ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড  এর প্রতিষ্ঠাতা র‌্যামন আর্থেমিও ব্রেচ  বন্ধুদের সঙ্গে প্যারাগুয়ের পুয়ের্তো পিনাসকোতে  এক নৈশভোজে বন্ধুত্ব ক্রুসেড এর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সে রাতেই এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা পায় এবং ৩০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধু দিবস পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠায়। এরপরই বিশ্বব্যাপী ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে বন্ধুত্ব, ঐক্য ও ভালোবাসা ছড়িয়ে দিতে গঠন করা হয় বন্ধুত্ব ক্রুসেড।  প্রায় ৫৩ বছর পর, ২০১১ সালের ২৭ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০ জুলাইকে বিশ্ব বন্ধু দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।

বন্ধুত্ব  সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন। বন্ধুত্ব সম্পর্ককে সহজ করে।মনের সঙ্গে মনের মিল হলেই শুধু সত্যিকারের বন্ধুত্ব হয়। সত্যিকারের বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। বন্ধুত্বের মধ্য্ অহংকার ও হিংসার স্থান নেই। তবে অবহেলা যে কোনো সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়। পৃথিবীর সবার বন্ধুরা ভালো থাকুক। সব মানুষের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক।

লেখক; সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)