বুধবার ● ৩১ জুলাই ২০২৪
প্রথম পাতা » লাইফস্টাইল » কোটা আন্দোলনে পাইকগাছার নিহত মাছ ব্যবসায়ী নবীনূরের স্ত্রী আকলিমা দিশেহারা !
কোটা আন্দোলনে পাইকগাছার নিহত মাছ ব্যবসায়ী নবীনূরের স্ত্রী আকলিমা দিশেহারা !
কোটা আন্দোলনে গুলিতে একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীকে হারিয়ে খুলনার পাইকগাছার আকলিমা বেগম দিশেহারা। নিহত ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী নবীনূর (৪৭) এর স্ত্রী’র কোথায় ঠাই মিলবে এ নিয়ে সে রীতিমত শঙ্কিত। নিহতের স্ত্রী’র অভিযোগ ঘটনার পর এ পর্যন্ত এলাকার কোন জনপ্রতিনিধি বা প্রশাসন আমার ও দু’কন্যা সন্তানের খোজ খবর রাখেনি ও কোন সাহায্য করেননি। জানাগেছে, বাবার ৩ শতক জমির ভিটে বাড়ীতে নিহত নবীনূরের অন্য ৩ ভাই বসবাস করে। ছিন্নমূল এ পরিবারের আর কোন সম্পদাদি নেই বললেই চলে।
গত মঙ্গলার বিকেলে আকলিমা তাদের পুর্বের ভাড়া বাসা ঢাকার সাভারের বল পুকুরে ফিরে গেছেন। সাভারে পৌছে আকলিমা মানবতার মা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পুনঃবাসন ও আর্থিক সহয়তা চেয়ে জানান, সাভারে স্বামীর মাছ ব্যবসার প্রায় লক্ষাধিক অনাদায়ী টাকা পড়ে আছে। সেই টাকা আদায়ের জন্য সাভারে বড় জামাই আসাদুলের ভড়া বাসায় উঠেছি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দেশব্যাপী ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনকালে গত ২০ জুলাই শনিবার বিকেলে ঢাকার সাভারে কোমরে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ী নবীনুর মোড়ল। সাভার এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন রবিবার সকাল পৌনে ৮ টার দিকে তার অকাল মৃত্যু ঘটে। পারিবারিক সুত্র জানায়, ঐ দিন রাতে গ্রামের বাড়ি শ্রীকন্ঠপুরে নবীনূরের নিথরদেহ পৌছালে এলাকার মানুষ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। সে শ্রীকন্ঠপুরের মৃতঃ করিম মোড়লের ছেলে। ৪ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে নবীনূর পিতা-মাতার দ্বিতীয় সন্তান। নবী-আকলিমা দম্পতির নাজমা-ফাইমা নামে দু’কন্যা সন্তান রয়েছে। দু’জনেরই বিবাহ সস্পন্ন হয়েছে।
জানাগেছে, শান্ত স্বভাবের নবীনুর মোড়ল ভালো ভাবে বেঁচে থাকতে ৭ বছর ধরে স্ত্রী ও দু’কন্যা সন্তান নিয়ে ঢাকার সাভার বড় পুকুর এলাকায় বসবাস করছেন। তিনি প্রতিদিন সভারের উলাইল থেকে মাছ ক্রয় করে বন পুকুর এলাকায় বিক্রয় করতেন। এ ভাবেই তার সংসার চলত।
নবীনূরের শ্যালক বাঁকা শ্রীকন্ঠপুরের বাবুল সরদার জানান, নিহত ভগ্নিপতি গ্রামের বাড়িতে থাকাকালে ইতোপুর্বে হোগলাবুনিয়া মৌজায় ১২ বিঘা অন্যের জমি হারিতে নিয়ে লবন পানির চিৎড়ি ঘের করেন। এক সময় সে লক্ষ-লক্ষ টাকা ঋন-দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত সে অনুপায় হয়ে বাড়ি ছেড়ে ঢাকার সাভারে চলে যেতে বাধ্য হন। গত কোরবানির ঈদে বাড়িতে আসার আগ পর্যন্ত নবীনূর অধিকাংশ ঋন-দেনা পরিশোধ করেছেন।