সোমবার ● ৫ আগস্ট ২০২৪
প্রথম পাতা » মুক্তমত » আদুরে প্রাণী বিড়াল
আদুরে প্রাণী বিড়াল
প্রকাশ ঘোষ বিধান
বিড়ালকে বাঘের মাসি বলা হয়। মানুষ এবং পোষা প্রাণীর মধ্যে বন্ধনের হাজার বছরের উদযাপন, যাকে ক্যাটস বলা হয়। আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবস প্রতি বছর ৮ আগস্ট পালিত হয়। এই দিনটি পালনের পিছনে এটিই একমাত্র লক্ষ্য নয়। বিড়ালের যথাযথ যত্নের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্যও দিবসটি পালন করা হয়। বিড়াল দিবসে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, পোষা প্রাণী হিসাবে বিড়াল থাকা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য নেতিবাচক। এমনকি জ্ঞানীয় কার্যকারিতায়ও বিড়াল সহায়তা করে।
২০০২ সালে সর্বপ্রথম ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সংস্থার উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবস পালিত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবস মানুষের পোষা বন্ধু বিড়াল এবং এদের সাহায্য ও সুরক্ষার উপায়গুলো সম্পর্কে জানতে ভূমিকা পালন করে। এই দিনকে অনেকে পোষাপ্রাণী দিবসও বলে থাকেন। কারণ পোষাপ্রাণী হিসেবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পালিত হয় বিড়াল।
আদুরে প্রাণী বিড়াল। বিড়াল সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাণী এ নিয়ে বিতর্ক হতে পারে।তবে দিন দিন যেন বিড়ালের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে সব বয়সের মানুষের মধ্যে। বিড়ালকে সঙ্গে নিয়ে, বিড়ালকে আদর করে কিংবা তাদের আঁচড়ে বিক্ষত হয়ে আমরা সবাই বড় হই। তবে কম-বেশি সবাই বিড়ালের চলনবলন বেশ পছন্দ করে। চলন বলতে ক্যাটওয়াক আর বলন মানে মিঁয়াও শব্দ।
পৃথিবীতে ৫০০ মিলিয়নেরও বেশি পোষা বিড়ালের সংখ্যা রয়েছে। একদল বিড়ালকে বলা হয় ক্লাউডার, ছেলে বিড়ালকে বলা হয় টম, মেয়ে বিড়ালকে বলা হয় মলি অথবা কুইন আর বিড়ালছানাদের বলা হয় কিটেন।জীবনের ৭০ শতাংশ ঘুমিয়েই কাটায় বিড়াল। এরা দিনের মধ্যে প্রায় ১৩ থেকে ১৪ ঘণ্টাই ঘুমিয়ে কাটায়। এই লম্বা ঘুম দিয়ে তারা নিজেদের শক্তি সংরক্ষণ করে। একটি বিড়াল গড়ে ১২ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।
বিড়ালের শরীর আর দাঁত ছোট ছোট প্রাণী শিকার করার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। সাধারণত পোষা বিড়ালের ওজন হয় চার থেকে পাঁচ কিলোগ্রাম। তবে ব্যতিক্রম তো আছেই। সবচেয়ে ওজনদার পোষা বিড়ালের ওজন প্রায় ২২ কিলোগ্রাম। এদের গড় দৈর্ঘ্য পুরুষদের ২৮ ইঞ্চি এবং মহিলাদের ২০ ইঞ্চি পর্যন্ত হয।বিড়ালের ভ্রু, কাঁটা, গালের লোম এবং কানের ওপর সূক্ষ্ম চুলের গোড়া সবই কম্পনশীল উদ্দীপনার জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল
বিড়াল খুবই ধূর্ত এবং নিখুঁত শিকারি। রাতে খুবই ভালো দেখতে পায়। বিড়াল মানুষের চেয়ে ছয়গুণ স্পষ্ট দেখতে পায়। এ ছাড়া তাদের ঘ্রাণ ও শ্রবণশক্তিও খুব ভালো। এদের ঘ্রাণ, স্মৃতি ও শ্রবণশক্তি খুবই ভালো। একজন সাধারণ মানুষ যেখানে পাঁচ মিলিয়ন গন্ধ চিনে নিতে পারে, সেখানে একটি বিড়াল পারে ১৯ মিলিয়ন পর্যন্ত। বিড়ালের কানে আছে এক ধরনের আয়রন, যা তাকে চৌম্বক নির্দেশনা পেতে সহায়তা করে। পথ চিনে নেওয়ার কাজে এরা ঘ্রাণ, স্মৃতি ও দিকনির্দেশনার জন্য পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র ব্যবহার করে।
বিড়াল খুবই আদুরে আর আহ্লাদি ধরনের প্রাণী। শান্তশিষ্ট স্বভাব হলেও এর চেহারা ছোটখাটো বাঘের মতো, একই গোত্রের তাই বিড়ালকে বলা হয় বাঘের মাসি।শতাব্দি ধরে মানুষের সঙ্গে বসবাস করে আসছে বিড়াল। শুরুতে শিকারী-সংগ্রাহকরা বিড়ালকে শিকারের সঙ্গি হিসেবে গৃহে পালন শুরু করে। সেইথেকে বিড়াল মানুষের সঙ্গে বাস করছে।
লেখক ; সাংবাদিক ও কলামিস্ট