সোমবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » কৃষি » একটানা ভারী বর্ষণে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রোপনকৃত আমন ক্ষেত নিমজ্জিত; ক্ষতির শঙ্কা
একটানা ভারী বর্ষণে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রোপনকৃত আমন ক্ষেত নিমজ্জিত; ক্ষতির শঙ্কা
নিন্ম চাপের প্রভাবে সৃস্ট একটানা ভারী বর্ষণে পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রোপনকৃত আমন ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওযায় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে একটানা চার- পাচ দিনের ভারী বর্ষণে খামারে রোপনকৃত ৬০ একর ধানের চারা তলিয়ে যায়, সোমবার সকালে খামারের রাস্তাসহ পুরা ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। তার উপর এলাকার পানি খামারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন রোপনকৃত ধানের চারা পানিতে ভেসে গেছে। এতে বীজ উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা পুরন না হওয়ার আশংখা করছে খামার কতৃপক্ষ। প্রতি বছর উপকূলে অবস্থিত এ খামারটিকে প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করে ফসল ফলাতে হয়।
খামার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ উৎপাদন বর্ষে আমন বীজ মৌসুমে বোয়ালিয়া বীজ খামারে বিআর ১০ জাতের ১৫ একর,বিআর ২৩ জাতের ১৩ একর ও ব্রিধান ৩০ জাতের ৩২ একরসহ সর্বমোট ৬০ একর জমির ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। খামারে রোপনকৃত ৬০ একর ধান পানির নিচে রয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পানি নিষ্কাষন হলে রোপনকৃত চারা খুববেশি ক্ষতি হবে না। তবে খামারের উপর দিয়ে পানির স্রোত বয়ে যাওয়ায় রোপনকৃত চারা উপড়ে পানিতে ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া ধানের চারা জায়গায় নতুন চারা রোপন করতে হবে। তবে পানি নিষ্কাষন না হওয়া পর্যন্ত কেমন ক্ষতি হয়েছে তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। পানি সরে গেলে খামারে পরিবেশ বুঝে নতুন করে ধানের চারা রোপন করা হবে। উল্লেখ্য, খামারের পাশের চার- পাচটি গ্রামের পানি নিষ্কাসনের একমাত্র পথ খামার ভিতরের ক্যানেল। এই ক্যানেল দিয়ে পানি কপোতাক্ষ নদে পতিত হয়। সে কারণে খামারের বাইরের গ্রামের পানি খামার ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ধানের বেশি ক্ষতি হয়েছে ও নদে ভাটা ঠিকমত না হওয়ায় পানি সরতেও দেরি হয়েছে।
আরো জানা গেছে, সবেমাত্র শেষ হওয়া আউশ মৌসুমেও ভারি বৃস্টিতে ধান ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আউশ মৌসুমে খামারে ব্রিধান ৪৮ জাতের ১২ একর জমিতে চাষ করা হয়েছে। ধান কর্তন করার পরে একটানা বৃস্টি শুরু হয়, রোদ না পাওযায় বীজ ধান শুকানো যায়নি। তাছাড়া তিন দিন বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্যানিং করে বীজ শুকানো যাচ্ছে না। এমন অবস্থা আরো দীর্ঘায়িত হলে বীজের গুনগত মান বজায় রাখায় শঙ্কা দেখা দিতে পারে। এমতবস্থায় আউশ বীজের গুনগত মান বজায় রাখার জন্য সর্বাত্নক চেস্টা করা হচ্ছে বলে খামার কর্তৃপক্ষ জানান।
এবিষয় বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের সিনিয়র সহকারি পরিচালক নাহিদুল ইসলাম বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে একটানা ৪ দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রোপা আমন ক্ষেতে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে। পানি নিষ্কাষন না হওয়া পর্যন্ত খামারে আমনের কেমন ক্ষতি হয়েছে তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। পানি নেমে গেলে খামারে পরিবেশ বুঝে নতুন করে ধানের চারা রোপন করা হবে। খামার ও পাশের চার- পাচটি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, খামারের পাশের চার- পাচটি গ্রামের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ খামারের ভিতরের ক্যানেল দিয়ে পানি কপোতাক্ষ নদে পড়ে। খামারের একটি স্লুইস গেট দিয়ে খামার ও পাশের চার- পাচটি গ্রামের পানি নিষ্কাশন হতে অনেক সময লাগে। ভাটায় পানি নিষ্কাশন করা হয় আর জোয়ারের সময় স্লুইস গেটের মুখ বন্ধ রাখতে হয়। তাছাড়া খামারের পানি নিষ্কাশনের ক্যানেলটি ড্রেজিং করে ক্যানেলের দুই পাশে মাটির উচু বাধ দিলে বাহিরের গ্রামের পানি খামারে ক্ষেতে প্রবেশ করতে পারবে না। এর ফলে অতি বৃস্টি হলেও খামারের ফসলের কোন ক্ষতি হবে না।