সোমবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » কৃষি » খুলনার কয়রায় ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে মৎস্য ঘের ও আমনের ফসলী জমি
খুলনার কয়রায় ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে মৎস্য ঘের ও আমনের ফসলী জমি
অরবিন্দ কুমার মণ্ডল, কয়রা, খুলনা ঃ খুলনার কয়রায় ৪ দিনের একটানা ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে মৎস্য ঘের ও আমনের ফসলী জমি।
গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা ৪ দিনের ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। স্থবির হয়ে পড়েছে সব কার্যক্রম। এলাকার মানুষ হয়ে পড়েছে ঘরবন্দি। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্য দিয়ে কয়রার মানুষ মৎস্য ঘেরগুলো টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে নেট-পাটা দিয়ে। অবিরাম বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে প্রায় শত শত মৎস্য ঘের। নষ্ট হয়েছে চলতি আমন মৌসুমের ক্ষেতের ফসল। এ যেন এই জনপদের মানুষের উপরে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের পুকুর, রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙিনা তলিয়ে গেছে।
জানা গেছে, গত ৪ দিনের টানা বৃষ্টির পানিতে ফের একাকার খাল, বিল, পুকুর, রাস্তাঘাট ও মৎস্য ঘের। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ বেঁড়িবাধ নিয়ে বন্যা আতঙ্কে পড়েছেন উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ। সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। ঘরের বাইরে না যেতে পারায় তাদের সংসারে চলছে চরম দুর্ভোগ। শুধু তাই নয়, যানবাহনের চালকরা পড়েছেন বিপাকে। দু-চারটি যানবাহন বের করা হলেও বেড়েছে ভাড়ার পরিমাণ, ফলে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ব্যবসায়ীদের মিলছে না তেমন ক্রেতা। অলস সময় পার করছেন ইজিবাইক, ভ্যান ও অটোচালকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, চলতি বছরে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার ২’শ হেক্টর । তবে ভারী বর্ষণের কারণে অধিকাংশ কৃষকের আমনের ক্ষেত পানির নিচে। চলতি মৌসুমে কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এতে আমনের বীজতলা ও আমনের ক্ষেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
৬নং কয়রা গ্রামের কৃষক কামরুল মোল্লা বলেন, ৬ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি কিন্তু টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে সব পানিতে তলিয়ে রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি নিষ্কাশন না হলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, অতি বর্ষণে কয়রার কৃষকদের আমনের ক্ষেত ডুবে গেছে। তবে তা টিকিয়ে রাখতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কয়রা সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, কয়রার অধিকাংশ স্লুইস গেটগুলো অকেজো হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনের কাজে বাধাগ্রস্ত স্লুইস গেটগুলো সংস্কার করা দরকার। এদিকে টানা বৃষ্টিতে এলাকার মৎস্য ঘের ও ফসলী জমি তলিয়ে যাওয়ায় খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে। তাছাড়া কয়েক যায়গায় বেড়ীবাঁধ দূর্বল হয় পড়েছে। এভাবে একটানা বৃষ্টি হতে থাকলে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলা মৎস্য অফিসার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈকত মল্লিক বলেন, কয়রায় কয়েক দিনের টানা বর্ষণে প্রায় ৭শ মৎস্য ঘের এবং কয়েকশত হেক্টর আমনের ফসলী জমি তলিয়ে গেছে। মৎস্যচাষীদের মাছ টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।