শুক্রবার ● ১১ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » বিশেষ সংবাদ » পাইকগাছায় দুর্গা পূজার সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি না করায় অনুষ্ঠান বন্ধের হুমকি !
পাইকগাছায় দুর্গা পূজার সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি না করায় অনুষ্ঠান বন্ধের হুমকি !
পাইকগাছার সোলাদানায় শ্রী শ্রী চারবান্দা সার্বজনীন দূর্গা পূজা মন্দিরের সাংষ্কৃতিক অনুষ্টানের উদ্বোধন নিয়ে মতদ্বন্দ্বে অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেনাবাহিনী, থানা পুলিশসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ সংকট নিরসনে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয় রায় বলেন, স্থানীয় বিল্লাল হোসেন নামে এক নেতা তাকে দিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধনে নির্দেশ দেন। অন্যথায় অনুষ্ঠান বন্ধে হুমকি প্রদান করেন। এমন হুমকি প্রদান করার পর থেকে তারা পূজার অনুষ্ঠানিক কার্যক্রম ছাড়া সকল সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখেন। তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় অনুষ্ঠান যাকে দিয়ে উদ্বোধন করালে ভাল হয় সে ব্যাপার তারা বিএনপির নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিকে দিয়ে উদ্বোধন করানোর কথাও চিন্তা করেন। তবে বিল্লাল হোসেনের আচারণে ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রাখেন।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে পাইকগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতিক ডা: আব্দুল মজিদ এর নের্তৃত্বে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সেলিম রেজা লাকি, সদস্য সচিব মোস্তফা মোড়ল, সাবেক জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট জিএম আব্দুস সাত্তার, গাজী মুজিবর রহমান, আবু হাসান, সায়েদ আলী বাবলা, আবু হুরায়রা বাদশা, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সরোজিৎ ঘোষ দেবেন, যুবদল নেতা শহিদুর রহমান, কাজী মুজিবর রহমান, মোস্তাকিম গাজী, সাংবাদিক শহিদুর রহমান, লুৎফর রহমান, নুরালী গোলদার, ওবায়দুল্লাহ সরদারসহ অন্যান্যরা ঘটনস্থলে পরিদর্শন করেন। এসময় তারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনে সব ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ তুষার কান্তি দাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন। তিনি রাত ১২ টা ১০ মিনিটে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন জানিয়ে বলেন, পূজার সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে পূজার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রয়েছে বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের খুলনা জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ও পাইকগাছা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সরোজিৎ ঘোষ দেবেন বলেন, তারাও অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি মুঠোফোনে সেখানকার পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয় রায়ের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হন। এমনকি সুষ্ঠুভাবে পূজা সম্পন্ন করতে সব ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছেন।
এব্যাপারে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে মন্ডপস্থলে আলোক-স্বজ্জা বন্ধ দেখতে পান। কারণ হিসেবে সেখানকার দায়িত্বশীলরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা বিল্লাল হোসেনকে দিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধনের জন্য নির্দেশ প্রদান করায় তারা সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। পরে সোলাদানার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপির সাবেক নেতা এনামুল হক পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয় রায়কে মোবাইলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করে ঘটনায় তারা রীতিমত ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন বলে জানান। এব্যাপারে অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে এনামুল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি উপজেলায় সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পূজা উদযাপনের জন্য মন্ডপ কমিটিগুলোর সাথে মতবিনিময় করছেন। মূলত রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে তার বিরুদ্ধে প্রোপাগন্ডা ছড়ানো হচ্ছে। তাছাড়া জয় রায় তাকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টার দিকে ফোন করে ঘটনার ব্যাপারে জানালে তিনি তাকে নির্ভয়ে পূজার সকল প্রকার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আশ্বস্ত করেন।