বুধবার ● ২৩ অক্টোবর ২০২৪
প্রথম পাতা » উপকূল » ঝড়ের কথা শুনলেই আঁতকে উঠে উপকূলের মানুষ; চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় দানা
ঝড়ের কথা শুনলেই আঁতকে উঠে উপকূলের মানুষ; চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় দানা
উপকূলে বসবাসকারি পরিবারের সদস্যরা ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলেই আঁতকে উঠেন। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কয়েক মাস পর ফের চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় দানা। খুলনার উপকূলে আঘাত হানা প্রায় সবকয়টি ঘূর্ণিঝড় লন্ডভন্ড করেছে উপকূলের মানুষের সহায়-সম্পদ। একটু ঝড়বৃষ্টি হলেই উপকূলের দূর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় গ্রামের পর গ্রাম। নদ-নদীর পানিতে প্লাবিত হয়ে সব কিছু হারিয়ে নিস্ব হয় নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধের কাছাকাছি এলাকায় বসবাসকারি দরিদ্র অসহায় মানুষগুলো। ফলে ঝড়ের কথা শুনলেই আঁতকে উঠে উপকূলের মানুষ।
রেমালসহ পূর্ববর্তী একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি এখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলীয় এলাকার মানুষ। রেমাল আঘাতের পাঁচ মাস না যেতেই ফের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় দানা। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মধ্যে।
তাদের আশঙ্কা ঘূঁর্ণিঝড় দানা আঘাত হানলে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে আবারও এলাকা প্লাবিত হবে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে নদ-নদীর জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভেঙে যেতে পারে দূর্বল বেড়িবাঁধ। এজন্য এলাকার জরজীর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে চিন্তিত উপকূলের মানুষ।
সিডর-আইলার মতো পাকৃতিক দূর্যোগে সর্বশান্ত হওয়া এ অঞ্চলের মানুষ বহু কষ্টে ঘুরে দাড়ানোর করছে। আবারও কোন এক প্রাকৃতিক দূর্যোগে ঝুকিপূর্ণ এসব বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বাড়িঘর সহ বিস্তীর্ণ ফসলের ক্ষেত লবন পানিতে তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পাড়েছে। এখনই ঝুঁকিপূর্ণ এসব বেড়িবাঁধ সংষ্কার করা না হলে মানুষ আবারো ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দুর্যোগে নদীতে জোয়ারের পানি বাড়লেই বারবার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় লোকালয়। লবণ পানি ঢুকে বিপর্যস্ত হয় জীবনযাত্রা। নষ্ট হয়ে যায় খাবার পানির উৎসসহ, সরকারের সব উন্নয়ন কর্মকান্ড। এছাড়া উপকূলে বসবাসরত মানুষের জন্য নেই পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার।
সম্প্রতি সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এক যুগেরও বেশি সময় পার হলেও আইলার অনেক বড় বড় ক্ষত এখনো দৃশ্যমান।
খুলনার উপকূলীয় এলাকায় ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিডর, এরপর ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলা, ২০১৩ সালের ১৬ মে মহাসেন, ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই কোমেন, ২০১৬ সালের ২১ মে রোয়ানু, ২০১৭ সালের ৩০ মে মোরা, ২০১৯ সালের ৩ মে ফণী, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বুলবুল, ২০২০ সালের ২০ মে আম্পান, ২০২১ সালে ২৬ মে ইয়াস, ২০২২ সালের ১২ মে অশনি এবং ২০২৩ সালের ১৪ মে মোখা আঘাত হানে।
সর্বশেষ খুলনার উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল ২০২৪ সালের ২৬ মে সন্ধ্যা থেকে ২৭ মে সকাল নাগাদ স্থলভাগ অতিক্রম করে। এ সময় খুলনার কয়রা উপজেলা ও পাইকগাছা উপজেলা, সাতক্ষীরার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়। এখনো যার ক্ষত শুকায়নি।