শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ৮ নভেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » সংস্কৃতি ও বিনোদন » মাগুরার শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা
প্রথম পাতা » সংস্কৃতি ও বিনোদন » মাগুরার শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা
১৫ বার পঠিত
শুক্রবার ● ৮ নভেম্বর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মাগুরার শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা

 ---শাহীন আলম তুহিন ,মাগুরা থেকে : বর্ণাঢ্য আয়োজনে শুরু হয়েছে মাগুরার ঐতিহ্যবাহী কাত্যায়নী পূজা। মাগুরায় বৃহস্পতিবার ষষ্ঠীপূজা শুরু হয়ে  ১১ নভেম্বর সোমবার  বিজয়া দশমী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে আড়ম্ভরপূর্ণ কাত্যায়নী উৎসব।  দূর্গা পূজার ঠিক একমাস পর দুর্গা প্রতিমার আদলেই প্রতিমা তৈরি করে প্রতিবছর  কাত্যায়নী পূজা পালন করে আসছে এলাকার মানুষ। মূলত দূর্গা পূজা বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও মাগুরায় এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। মাগুরায় কার্তায়নী পূজাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পালন করে আসছেন এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। উপলক্ষে লাখো মানুষের ঢল নামে মাগুরায়। জেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসবের ঐতিহ্য প্রায় শত বছরের পুরনো। দিনব্যাপী এই পূজার আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন মন্দিরে চলবে মাশব্যাপী গ্রামীণ মেলা। পূজা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি উপলক্ষে ব্যতিক্রমী সব ডেকোরেশন দর্শনার্থীদের  মুগ্ধ করে। বছরের কাপড় শোলার কাজের পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নানা রকম আলোকসজ্জা দর্শকদের আকৃষ্ট করছে। অধিকাংশ গেটেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেব দেবীর চলমান ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ডিসপ্লের মাধ্যমে মন্দির গুলিতে ঈশ্বরের মাহাত্ম্য প্রচার করা হচ্ছে। পূজা সুষ্ঠু সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন পুলিশ প্রশাসন এর পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক সভা করা হয়েছে। বুধবার জেলা প্রশাসন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন। সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ৮৮ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ মিজানুর রহমান এফ ডব্লিউ সি, পিএসসি ১৪ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর এম এম জিল্লুর রহমান। মাগুরার জেলা প্রশাসক মো: অহিদুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থেকে পূজা মন্দিরের ভাব গাম্ভীর্য নিরাপত্তা নিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। মাগুরা জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্র জানিয়েছে, বছর মাগুরা জেলায় মোট ৮১টি মণ্ডপে কাত্যায়নী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে বৃষ্টি কেটে গিয়ে রোদ্রউজ্জ্বল  আবহাওয়ায় বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমাগুলো আকর্ষণীয় রঙে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।শহরের প্রতিটি কাত্যায়নী মণ্ডপকে সাজানো হয়েছে আকর্ষণীয় সাজে। মণ্ডপ প্রাঙ্গণের সামনে থাকছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ আলোকসজ্জা। তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল প্রবেশ দ্বার।  সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে প্রতিটি প্যান্ডেলে আলোকসজ্জা চলবে রাতভর। পূজা প্যান্ডেলের এই আকর্ষণীয় আলোকসজ্জা দেখতে ইতিমধ্যেই মাগুরায় আসতে শুরু করেছেন দেশি-বিদেশি ভক্ত দর্শকরা। পূজাকে ঘিরে প্রতিটি মণ্ডপ এলাকায় বসে মেলা। যা চলবে পুরো মাসজুড়ে।  নিজনান্দুয়ালী গ্রামের নিতাই  গৌর গোপাল সেবাশ্রম, নতুন বাজার সাহাপাড়া ছানাবাবুর বটতলা, জামরুলতলা পূজা মন্ডপ, নতুন বাজার স্মৃতিসংঘসহ শহরের বিভিন্ন মন্দির গুলোতে চলছে শেষ  মুহূর্তের আয়োজন।  গ্রামের মন্দির গুলোও পিছিয়ে নেই।  পূজার উৎসবকে আরও সুন্দর বর্ণিল করতে মণ্ডপে ব্যাপক আলোকসজ্জা বাইরে থেকে  মিউজিক সিস্টেম এর ব্যবস্থা থাকছে।  প্রতিমা শিল্পী উজ্জ্বল কুমার গুরু জানালেন, এবার কাত্যায়নী মাকে নতুন রঙে রাঙানো হচ্ছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি মা কাত্যায়নীকে নতুন রূপে সাজাবার। অন্যবারের তুলনায় এবার আরও আধুনিকতার ছোঁয়া এসেছে কাত্যায়নী পূজায়।   দরি মাগুরা সর্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির পূজা মণ্ডপের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ সাহা বলেন, ‘কাত্যায়নী পূজা মাগুরা  জেলার শত বছরের ঐতিহ্য। প্রতিবছর উৎসব উপলক্ষে  দেশ-বিদেশ থেকে লাখো মানুষের ঢল নামে। আমরা এবার আশা রাখছি পরিবেশ ভালো থাকবে। অন্যবারের তুলনায় এবার আরও মানুষের ঢল নামবে। পাঁচদিনব্যাপী উৎসবকে ঘিরে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য  পুলিশের পাশাপাশি আনসার আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবে। ইতিমধ্যে মাগুরার জেলা প্রশাসক মোঃ অহিদুল ইসলামকে সাথে নিয়ে পূজা মন্ডপ গুলো পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  পূজাকে কেন্দ্র করে মাসব্যাপী চলবে গ্রামীণ  মেলা। জেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি বাসুদেব কুণ্ডু জানান, এবার আবহাওয়া পরিবেশ ভালো থাকায় আমরা নির্দিষ্ট সময়ে পূজা শুরু করতে পারবো বলে আশা রাখছি।  উৎসবে মাগুরার পার্শ্ববর্তী জেলা ফরিদপুর, যশোর, খুলনা, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা,  মেহেরপুরসহ সারা দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে মিলিত হয়। বাংলাদেশের বাইরে ভারতসহ অন্যান্য দেশের মানুষও উৎসবে আসেন। তাই আমাদের প্রশাসনের থেকে নিরাপত্তার কাজও বেড়ে যায়। পূজা চলাকালীন সময়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারস্বেচ্ছাসেবকসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করবে। শাস্ত্রমতে খ্রিষ্টীয় পঞ্চম-ষষ্ঠ শতাব্দী নাগাদ রচিত মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্যম্  একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীতে রচিত দেবীভাগবত পুরাণ গ্রন্থে কাত্যায়নীর দিব্যলীলা বর্ণিত হয়েছে। একাধিক ধর্মগ্রন্থ এবং তন্ত্রগ্রন্থেও দেবী কাত্যায়নীর উল্লেখ পাওয়া যায়।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)